বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন

চট্টগ্রামে মোটরসাইকেল চুরিতে প্রিপেইড সিন্ডিকেটচক্রের ছয় সদস্যকে,আটক

মাসুদ পারভেজ বিভাগীয় ব্যুরো
চট্টগ্রামে মোটরসাইকেল চুরিতে প্রিপেইড সিন্ডিকেটের সন্ধান পেয়েছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চারটি দামি মোটরসাইকেল।
শুক্রবার (৭ জুন) তাদের আদালতে হাজির করা হয় বলে  জানিয়েছেন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম ওবায়েদুল হক।
গ্রেফতাররা হলেন, নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন কসমোপলিটন রাবার কোম্পানির গলির মো. আমির হোসেন খুকুর ছেলে মো. আবিদ হোসেন শ্রাবণ (২০), চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানাধীন পোমরা ইউনিয়নের সাইনিপাড়া গ্রামের মৃত আলী আহমদের ছেলে মো. আজিজুর রহমান (২৪), শান্তিরহাট এলাকার মৃত হাসকান্দরের ছেলে মো. রাফি (৩১), মেহেদী রাশেদের ছেলে আব্দুল্লাহ আল আবেদ ওরফে তুহিন (২৪), রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. শাহাদাত হোসেন ওরফে খোকা (২৭) এবং রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার মধ্যম মুরাদনগর গ্রামের মো. ইদ্রিস খানের ছেলেন জমির হোসেন (২০)।
তাদের মধ্যে শ্রাবণকে বৃহস্পতিবার সকালে একটি চোরাই মোটরসাইকেলসহ কোতোয়ালী থানাধীন সিরাজদ্দৌল্লা রোডের মাছুয়াঝর্ণা এলাকার থেকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে তিনটি মাস্টার কী উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক কাজীর দেউরী এলাকা থেকে আজিজ ও রাফিকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের তথ্য মোতাবেক রাঙ্গুনিয়ার শান্তিরহাট এলাকা থেকে তুহিন ও খোকাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তুহিলের তথ্যে রাঙ্গুনিয়ার রোয়াজার হাট এলাকা থেকে জমিরকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক আরও তিনটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাতেই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া কোতোয়ালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মুহাম্মদ মোশাররফ হোসাইন।
পরে এসআই মোশাররফ  জানান, শ্রাবণের বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় বাইক চুরির ৮টি, আজিজের বিরুদ্ধে ৫টি এবং রাফির বিরুদ্ধে একটি মামলা রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত আট মাস আগে একটি অপহরণ মামলায় জেলহাজতে যান আজিজ। তখন গ্রেফতার শ্রাবণও কারাগারে ছিলেন। কারাগারেই আজিজের সঙ্গে শ্রাবণের সখ্যতা গড়ে উঠে। শ্রাবণের কাছ থেকে মোটরসাইকেল চুরির বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা শুনে তাকে কারাগার থেকে জামিন করানোসহ যাবতীয় ব্যবস্থার দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব দেন আজিজ। বিনিময়ে শ্রাবণ জামিনে বের হওয়ার পর যত মোটরসাইকেল চুরি করবে সবগুলো আজিজকে সাপ্লাই দেবে। আজিজের প্রস্তাবে রাজি হন শ্রাবণ।
গত দুই মাস আগে আজিজ জামিনে বের হন। এরপর তিনি শ্রাবণের জামিনের ব্যবস্থা করেন। ১০-১২ দিন আগে শ্রাবণের জামিন হয়। কারগার থেকে বের হওয়ার পরই কাজের অগ্রিম হিসেবে শ্রাবণকে ১০ হাজার টাকা দেন আজিজ। এরপর শ্রাবণ নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মোটরসাইকেল চুরি শুরু করেন। গত ১০-১২ দিনে শ্রাবণ চারটি মোটরসাইকেল চুরি করে আজিজ ও তার বন্ধু রাফির কাছে সাপ্লাই দেন। রাফি চোরাই বাইক কেনা-বেচার লাভের অংশ থেকে বাইক প্রতি পাঁচ হাজার টাকা নেন। পাশাপাশি আজিজের নির্দেশনা মতো শ্রাবণের যাবতীয় খরচ বহন করেন।
আরও জানা যায়, প্রতিটি মোটরসাইকেল চুরির আগে শ্রাবণকে অগ্রিম টাকা দিতেন আজিজ। চুরির মোটরসাইকল গ্রেফতার তুহিনের মাধ্যমে রাঙ্গুনিয়া থানা এলাকার খোকার কাছে পাঠানো হতো। খোকা প্রতি বাইকে ১০ হাজার টাকা লাভ নিয়ে জমিরের কাছে বিক্রি করে দিতেন। জমির মোটরসাইকেলগুলো বৈধ জানিয়ে স্থানীয়দের কাছে বাজারমূল্যে বিক্রি করতেন।

খবরটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024 thedailyagnishikha.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com