বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৪৫ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জে নিতাইগঞ্জে অবস্থিত জেনারেল হাসপাতালে (ভিক্টোরিয়া) ২৫ বছর পার করলেন ডা. হুমায়ূন কবির সরকার। ইউনানী ডাক্তার হিসেবে তিনি ৯ম গ্রেডের কর্মচারী হিসেবে ভিক্টোরিয়াতে যোগদান করেন ১৯৯৯ সালের ২৮ জুন । উপরস্থ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ২৫ বছর একই জায়গায় কাটিয়েছেন তিনি। অভিযোগ রয়েছে, তিনি হাসপাতালে গড়ে তুলেছেন দালাল চক্রের সিন্ডিকেট। যার মাধ্যমে পরীক্ষা বাণিজ্য করে সাধারণ রোগীর কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। ঔষধ বাণিজ্যের কারসাজির মধ্যেমেও হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল অর্থ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২৮ জুন ১৯৯৯ ইউনানী ৯ম গ্রেডের কর্মচারী হিসেবে যোগদানের পর থেকে সরকারি ইউনিয়নী ঔষধসহ বিভিন্ন বরাদ্দ টাকা আত্মসাৎ করার গুঞ্জন রয়েছে । চিকিৎসা নিতে আসা সকল রোগীকে বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য পাঠিয়ে দেন নিজের পালিত দালালদের মাধ্যমে হাসপাতালের আশপাশের ডায়াগানস্টিক সেন্টারে । তিনি তার কিছু অনিবন্ধিত ইউনানী ঔষধও বিক্রি করেন, যার কোন DAR নম্বর নেই, যা সম্পূর্ণ অবৈধ।
তার সহযোগী মালির বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে, গার্ডেনার (মালি) আব্দুর রশিদকে টিকিট কাউন্টারে বসিয়ে রোগীদের টিকিট কেটে তার কাছে পাঠান। আর এসব সহজসরল নিম্ন আয়ের দরিদ্র মানুষদের তার ইউনানী কোম্পানির ঔষুধ লিখে মাসে মোটা অংকের কমিশন হাতিয়ে নিয়ে অর্থ বাণিজ্য করেন তিনি।
সরজমিনে দেখা গেছে, তিনি বিভিন্ন রোগীকে তার পছন্দ করা কোম্পানির একই ওষুধ লিখে দিচ্ছেন। এভাবেই তিনি তার উপরস্থ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বাণিজ্য আর দুর্নীতিসহ নানা অনিয়ম করে কাটিয়েছেন ২৫ টি বছর। আওয়ামী লীগ সরকার আমলে শামীম ওসমানের ভাগিনা পরিচয়ে দাপটের সঙ্গে এসব অনিয়ম দুর্নীতির সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন। আর এসব সবই করেছেন গডফাদার শামীম ওসমানের নাম ভাঙিয়ে। আর বাস করেন অভিজাত এলাকা রূপায়ন আবাসিক স্যাটেলাইট টাউনে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত হুমায়ুন কবিরের সাথে সাথে যোগাযোগ করে এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন। একই পদে ২৫ বছর কিভাবে কাটিয়েছেন, এর উত্তরে তিনি বলেন, সরকার রাখলে আমি কী করবো?
তবে হাসপাতালের স্টাফদের মাধ্যমে জানা গেছে, তিনি উপরের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এখানে কাটিয়েছেন ২৫টি বছর।
এ বিষয়ে জেনারেল হাসপাতালের নবনিযুক্ত আরএমও ডাক্তার জহিরুল ইসলাম গ্লোবাল টেলিভিশনকে বলেন, আমি নতুন এসেছি, এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না, তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার আবুল ফজল মোহাম্মদ মশিউর রহমান গ্লোবাল টেলিভিশনকে বলেন,বিষয়টি আমার জানা ছিল না, আপনার মাধ্যমে জেনেছি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখছি, কিভাবে একই পদে ২৫ বছর পার করলেন।