মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১৬ অপরাহ্ন

ঢাকা থেকে প্রকাশিত জাতীয় দৈনিক অগ্নিশিখা পত্রিকা
ঢাকা থেকে প্রকাশিত জাতীয় দৈনিক অগ্নিশিখা পত্রিকা এবং  অনলাইন ও ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়া  এর জন্য সম্পূর্ণ  নতুনভাবে সারাদেশ থেকে জেলা, উপজেলা,বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও সরকারি কলেজ,পলিটেকনিকে একযোগে সংবাদকর্মী আবশ্যক বিস্তারিত জানতে ০১৮১৬৩৯৩২২৩

ওসিসহ আরও ৩০ মরদেহ যাত্রাবাড়ীর।

প্রতিবেদক মোঃ বিল্লাল হোসাইন

শেখ হাসিনার পদত্যাগ পরবর্তী সহিংসতায় আরও ৩০টি মরদেহ গতকাল বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে যাত্রাবাড়ী থানার ওসি আবুল হাসানের মরদেহও রয়েছে বলে ঢামেক মর্গ সূত্র নিশ্চিত করেছে। এ ছাড়া গুলিবিদ্ধসহ বিভিন্নভাবে আহত ১২৮ জন ঢামেকে চিকিৎসাধীন আছেন।

বুধবার ঢামেকে যেসব ব্যক্তির মরদেহ পাঠানো হয়েছে তারা ৫ আগস্ট বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন থানায় হামলা ভাঙচুরের সময় গুলিতে মারা গেছেন। আবার কিছু মরদেহ জনরোষে পড়ে নিহত পুলিশ সদস্যদেরও বলে মর্গ সূত্র জানিয়েছে।
সোমবার রাত ১২টার পর থেকে শুরু করে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, সহিংসতা ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ২১ জনের লাশ আসে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে। এর মধ্যে চারজন পুলিশ সদস্য, একজন র‌্যাব সদস্য এবং একজন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য।

রাজধানীর মিরপুরে সংঘর্ষে আহত ঢাকা মহানগর ছাত্র ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার আহমেদ শাকিল মারা গেছেন। গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকার আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হাসপাতালে মারা যান তিনি। গত ৪ আগস্ট মিরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচি পালনকালে গুলিবিদ্ধ হন শাকিল। শাকিল ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের (ইউডা) চারুকলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

রাজধানীর যেসব থানায় বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা চালিয়ে আগুন দিয়েছে সেসব থানায় ছাত্র জনতারা পরিষ্কার করার কাজ শুরু করেছে। একই সঙ্গে থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। খিলগাঁও যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, ভাটারা, খিলক্ষেতসহ বেশ কয়েকটি থানায় ছাত্র-জনতাকে ব্যবহার উপযোগী করতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে দেখা গেছে। হামলা বা ভাঙচুর হয়নি এমন অনেক থানায় স্থানীয় বিএনপি নেতাদের পাহারা দিতে দেখা গেছে।
ছাত্র-জনতার একাধিক প্রতিনিধি জানান, রাজধানীর যেসব থানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলো ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করে থানার কার্যক্রম ব্যবহার উপযোগী করার জন্য শিক্ষার্থীদের গ্রুপে বার্তা দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত থানাগুলোর ভেতরে ও বাইরে পুড়িয়ে ফেলা গাড়ি ও আসবাবপত্র পরিষ্কার করার কাজ শুরু করেছে।
বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, সোমবার হামলা করে আগুন দেওয়া খিলগাঁও থানায় ছাত্র-জনতা পুড়ে যাওয়া আসবাবপত্র ও গাড়ি সরিয়ে অন্যত্র নিচ্ছে। থানার সামনে থেকেও জমে থাকা ময়লার স্তূপ পরিষ্কার করা হয়েছে। এ সময় সড়ক থেকেও ছাইয়ের স্তূপ পরিষ্কারের কাজ করে শিক্ষার্থীরা। খিলগাঁও মডেল হাইস্কুলের ইংরেজি শিক্ষক আবু মুর্তজা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা থানায় হামলা করে আগুন লাগিয়ে দেয়। সাধারণ মানুষও হামলায় অংশ নেয় যারা বিভিন্ন সময়ে ওই থানার পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের দ্বারা বিভিন্নভাবে হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। হামলার সময় কিছু লোক থানা থেকে অস্ত্র, গুলিসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র লুটপাট করে। ওই সময় লুটপাট থামোনোর মতো পরিস্থিতি ছিল না। তবে লুট হওয়া ২ হাজার অস্ত্র, ৪০ কেজি বুলেট, ৩ ট্রাক রাবার বুলেট, বিপুল পরিমাণ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল উদ্ধার করে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
রামপুরা থানার আনসার ব্যাটালিয়নের প্লাটুন ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন জানান, মঙ্গলবার রাত থেকে তারা রামপুরা থানা পাহারা দিচ্ছেন। থানার ভেতরে কোনো ভাঙচুর বা লুটপাট হয়নি বলে স্থানীয়দের মাধ্যমে তারা জেনেছেন। থানায় থাকা অস্ত্র, গুলি সেনাবাহিনী তাদের হেফাজতে নিয়েছে। থানায় হামলা হতে পারে এ ভয়ে পুলিশ সদস্যরা তালা মেরে পালিয়ে যান। ফলে বড় কোনো ক্ষতি হয়নি।
গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অক্ষত অবস্থায় পুলিশের গাড়ি পড়ে আছে। তবে একটি গাড়ি ভাঙচুর করা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এলাকাবাসী থানায় যাতে হামলা না হয় সে বিষয়ে ব্যাপক তৎপর ছিল। একইভাবে সবুজবাগ থানায় কোনো হামলা হয়নি। গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, ভেতরে পুলিশ সদস্যরা রয়েছে। গেটে আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা পাহারায় থাকলে বাইরে বিএনপির ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরা পাহারা দিচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর, বংশাল, মতিঝিল, পল্টন, খিলগাঁও, রামপুরা, বাড্ডা, খিলক্ষেত, উত্তরা পূর্ব ও উত্তর পশ্চিম থানা, দক্ষিণখান ও উত্তরখানসহ অনেক থানায় সোমবার হামলা করে বিক্ষুব্ধ জনতা। আবার অনেক থানা-পুলিশ থানায় তালা লাগিয়ে অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিরাপদে রেখে পালিয়ে গেছে। যেসব থানা-পুলিশ পালাতে পারেনি বা পালানোর আগেই হামলা হয়েছে ওইসব অনেক থানায় হামলার পর আগুন লাগিয়ে অস্ত্র গোলাবারুদসহ অন্যান্য আসবাবপত্র লুটপাট হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত ডিএমপির কোনো থানার কার্যক্রম শুরু হয়নি

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved ©2022 thedailyagnishikha.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com