অগ্নিশিখা অনলাইন
- ১৯ মে, ২০২৪ / ১০৬ জন দেখেছে
কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধিঃ
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপংকর দাসের অফিসের একেবারেই নাকের ডগায় বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা দোকান পাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে ব্যবসা ও দোকান ঘর ভাড়া দিয়ে টাকা আদায় করলেও রহস্য জনক ভাবে সেখানে কোন হস্তক্ষেপ না করে উপজেলা তিন রাস্তা মোড়ে রাস্তার পাশে এই প্রচন্ড তাপদাহ গরমে একজন নির্মাণ লেবার শ্রমিক শুধু মাত্র একটি টেবিলে দিয়ে ছাতা ব্যবহার করে লেবুর শরবতের দোকানটি অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে ভেঙে দেওয়াকে কেন্দ্র করে উপজেলা জুড়ে তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে।
ঘটনার সময় ওই শরবত বিক্রেতা দোকানে ছিল না। দোকানে থাকলে হয়তো উনার নির্দেশ অমান্য করার দুঃসাহস সে দেখাতো না। তার অনুপস্থিতিতে এই গরিব অসহায় বেচারার প্রায় ২৫ হাজার টাকার মালামাল ভেঙে ফেলাইয়া দেওয়ার ঘটনায় হতবাক হয়েছে উপজেলা বাসীর। পরবর্তীতে একইদিন বেলা ৪ টার সময় দোকান ভাঙার কারণটা জানতে চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপংকর দাসের অফিসে গিয়ে এক ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রেখে অফিসে ডেকে তার বাড়ি ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিয়ে অফিস থেকে বিতাড়িত করে তাড়িয়ে ঘটনার একটি অডিও ক্লিপ সাংবাদিকদের হাতে এসেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বেলা ১ টার সময় সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মসজিদ সংলগ্ন তিন রাস্তার মোড় নামক স্থানে। কালিগঞ্জ উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের চর যমুনা গ্রামের সোহরাব সরদারের পুত্র নির্মাণ শ্রমিক শাহ আলম (বাপ্পি) প্রচণ্ড তাপদাহ গরমে কাজ না থাকায় হতদরিদ্র ৭ জনের সংসার নিয়ে অর্ধহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছিল। কোন কাজ না থাকায় উপজেলা মোড়ে অবস্থিত রাস্তার পাশে পেট্রোল বিক্রেতা, চা, ভাজার দোকান, জুতো সেলাই এর দোকানের সাথে রাস্তার পাশে একটি টেবিলে ছাতা মাথায় দিয়ে ২৫/৩০ হাজার টাকার মালামাল তুলে লেবুর শরবত বিক্রি করে সামান্য কয়েক দিনের জন্য জীবিকা নির্বাহী করছিল। বিষয়টি নিয়ে তাকে সতর্ক না করে গত বৃহস্পতিবার সে বাজারে লেবু আনতে যাওয়ার সুযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপংকর দাস নিজে এসে বেলা ১টার দিকে তার অস্থায়ী দোকান ভেঙে গুঁড়িয়ে ফেলে দিলেও পাশের অবস্থিত অন্যান্য দোকানে কোন হস্তক্ষেপ করেনি। পরে বিষয়টি জানতে শাহ আলম ওরফে বাপ্পি বেলা ৩ টার সময় বিষয়টির কারন জানার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপংকর দাসের অফিসে যায়। কিন্তু সেখানে তাকে ১ ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রেখে বিকাল ৪টার সময় অফিসে ঢোকে। সে জানতে চায় স্যার কি অপরাধে আমার দোকান টি ভাঙ্গা হয়েছে। উত্তরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার অনুমতি না নিয়ে কেন দোকান দিয়েছি? প্রয়োজন হলে তার বাড়ি ভেঙে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়ে অফিস থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে বলে ভুক্তভোগী শাহ আলম (বাপ্পি) সাংবাদিদের জানায়। সে আরো জানান এই টাকাগুলো হলে আমার ৭ জনের অভাব অনটনের সংসারটা হয়তো কয়েকদিন চলত তবে আমাকে বললে আমি স্বেচ্ছায় টেবিলটি সরিয়ে বাড়িতে নিতাম। কিন্তু আমি দোকানে না থাকার সুযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমার দোকানটি ভেঙে গুড়িয়ে দিলেও আশে পাশের রাস্তার উপর কোন অবৈধ দোকানদারদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। বিষয়টি আমি তদন্ত পূর্বক জেলা প্রশাসক মহোদয়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি এবং নিরুপায় হয়ে আল্লাহর কাছে বিচার দিলাম।
গত মাঝখানেক আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নাকের ডগায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে আসলে তিনি সেগুলো উচ্ছেদ না করতে দিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের ফিরিয়ে দেন। বিষয়টি নিয়ে তখনো নানান আলোচনা সমালোচনার ঝড় ওঠে। এমনিতেই উপজেলা সদরের পূর্ব পার্শ্ব জুড়ে উপজেলা পরিষদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসের কর্মচারী, কর্মকর্তারা এই সমস্ত সরকারি জায়গায় অবৈধ স্থাপনা গড়ে বাসা বাড়ি, দোকানপাট ভাড়া দিয়ে বছরে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করলেও দেখার কেউ নাই। অথচ যত দোষ নন্দ ঘোষ গরিব শরবত বিক্রেতা শ্রমিকের । বিষয়টি সম্পর্কে সত্যতা জানার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপংকর দাসের মুঠোফোন একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।