Dhaka 9:57 am, Thursday, 27 November 2025

বাবা ছিলেন দিনমজুর, ছেলে শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট

Reporter Name
  • Update Time : 08:30:07 am, Monday, 23 September 2024
  • / 245 Time View

আন্তজাতিক ডেস্কঃ দুই বছরের বেশি সময় পর নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট পেল শ্রীলঙ্কা। ঐতিহাসিক দ্বিতীয় দফার ভোট গণনা শেষে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বামপন্থী রাজনীতিবিদ অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে। রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে দেশটির নির্বাচন কমিশন এ তথ্য জানায়।

কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) জোটের নেতা হিসেবে অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। দিশানায়েকে ৪২ দশমিক ৩১ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম দুই প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধী দল সঙ্গী জন বালাওয়াগার (এসজেবি) নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা পেয়েছেন ৩২ দশমিক ৭৬ শতাংশ ভোট। মাত্র ১৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট রণিল বিক্রমাসিংহে।

নির্বাচনের বাইরে সম্প্রতি একটি প্রশ্নই সবার মাঝেই ঘুরপাক খাচ্ছে। কে এই অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে?

শ্রীলঙ্কার এ নতুন প্রেসিডেন্টের পুরো নাম দিশানায়েকে মুদিয়ানসেলাগে অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে। দেশটির রাজধানী কলম্বো থেকে প্রায় ১৭০ কিলোমিটার দূরে অনুরাধাপুরা জেলার থাম্বুতেগামা গ্রামে ১৯৬৮ সালের ২৪ নভেম্বর এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে দিশানায়েকের জন্ম। বাবা ছিলেন একজন দিনমজুর ও মা গৃহিণী।

শৈশব থেকে কঠোর অধ্যবসায়ের মাধ্যমে তিনি কেলানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান ডিগ্রি অর্জন করেন। ছাত্রজীবনেই তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হন এবং ১৯৮৭-৮৯ সালের জেভিপির সশস্ত্র আন্দোলনে যুক্ত হন।

১৯৯৫ সালে দিসানায়েক জেভিপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে যোগ দেন এবং ২০০০ সালে জাতীয়তাবাদী তালিকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি এলটিটিইর (তামিল বিদ্রোহী গোষ্ঠী) বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য লড়াই করেন।

এদিকে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সমর্থন নিশ্চিত করতে দিসানায়েক সংবিধানের ৯ নং অনুচ্ছেদের প্রতি নিজস্ব সমর্থনের কথা জানিয়ে বলেন, ‘এই অনুচ্ছেদে কোনো পরিবর্তন আনার প্রচেষ্টা তার দল প্রতিরোধ করবে।

দিসানায়েক ১৯৮৭ সালের ভারত-শ্রীলঙ্কা চুক্তির তীব্র সমালোচনা করে। এছাড়াও তিনি ভারতীয় সম্প্রসারণবাদ বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কাচাথিভু দ্বীপকে ভারতকে ফেরত দেয়ার যেকোনো প্রচেষ্টার বিরোধিতা করেন।

দীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার এ নব্য প্রেসিডেন্ট দিসানায়েক জানিয়েছেন, তার সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের বেইলআউট চুক্তির শর্ত পুনরায় আলোচনা করবে, যা বর্তমান সরকারের নীতির বিপরীত। এর পাশপাশি তিনি শ্রীলঙ্কার জন্য একটি নতুন সূচনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। দেশকে অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে কাজ করবেন বলেও জানান এ প্রেসিডেন্ট।

উল্লেখ্য, বছর দুয়েক আগে বিশ্বের কাছে উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছিল শ্রীলঙ্কা। চরমে ওঠে আর্থিক সংকট। তার উপর বিপুল অঙ্কের ঋণের বোঝা। সব কিছু সামলাতে হিমশিম খায় সরকার। এই পরিস্থিতে এবার যিনি প্রেসিডেন্ট হবেন, তার উপরে যে গুরুদায়িত্ব থাকবে তা বলাই বাহুল্য।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

10

বাবা ছিলেন দিনমজুর, ছেলে শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট

Update Time : 08:30:07 am, Monday, 23 September 2024

আন্তজাতিক ডেস্কঃ দুই বছরের বেশি সময় পর নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট পেল শ্রীলঙ্কা। ঐতিহাসিক দ্বিতীয় দফার ভোট গণনা শেষে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বামপন্থী রাজনীতিবিদ অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে। রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে দেশটির নির্বাচন কমিশন এ তথ্য জানায়।

কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) জোটের নেতা হিসেবে অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। দিশানায়েকে ৪২ দশমিক ৩১ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম দুই প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধী দল সঙ্গী জন বালাওয়াগার (এসজেবি) নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা পেয়েছেন ৩২ দশমিক ৭৬ শতাংশ ভোট। মাত্র ১৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট রণিল বিক্রমাসিংহে।

নির্বাচনের বাইরে সম্প্রতি একটি প্রশ্নই সবার মাঝেই ঘুরপাক খাচ্ছে। কে এই অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে?

শ্রীলঙ্কার এ নতুন প্রেসিডেন্টের পুরো নাম দিশানায়েকে মুদিয়ানসেলাগে অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে। দেশটির রাজধানী কলম্বো থেকে প্রায় ১৭০ কিলোমিটার দূরে অনুরাধাপুরা জেলার থাম্বুতেগামা গ্রামে ১৯৬৮ সালের ২৪ নভেম্বর এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে দিশানায়েকের জন্ম। বাবা ছিলেন একজন দিনমজুর ও মা গৃহিণী।

শৈশব থেকে কঠোর অধ্যবসায়ের মাধ্যমে তিনি কেলানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান ডিগ্রি অর্জন করেন। ছাত্রজীবনেই তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হন এবং ১৯৮৭-৮৯ সালের জেভিপির সশস্ত্র আন্দোলনে যুক্ত হন।

১৯৯৫ সালে দিসানায়েক জেভিপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে যোগ দেন এবং ২০০০ সালে জাতীয়তাবাদী তালিকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি এলটিটিইর (তামিল বিদ্রোহী গোষ্ঠী) বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য লড়াই করেন।

এদিকে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সমর্থন নিশ্চিত করতে দিসানায়েক সংবিধানের ৯ নং অনুচ্ছেদের প্রতি নিজস্ব সমর্থনের কথা জানিয়ে বলেন, ‘এই অনুচ্ছেদে কোনো পরিবর্তন আনার প্রচেষ্টা তার দল প্রতিরোধ করবে।

দিসানায়েক ১৯৮৭ সালের ভারত-শ্রীলঙ্কা চুক্তির তীব্র সমালোচনা করে। এছাড়াও তিনি ভারতীয় সম্প্রসারণবাদ বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কাচাথিভু দ্বীপকে ভারতকে ফেরত দেয়ার যেকোনো প্রচেষ্টার বিরোধিতা করেন।

দীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার এ নব্য প্রেসিডেন্ট দিসানায়েক জানিয়েছেন, তার সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের বেইলআউট চুক্তির শর্ত পুনরায় আলোচনা করবে, যা বর্তমান সরকারের নীতির বিপরীত। এর পাশপাশি তিনি শ্রীলঙ্কার জন্য একটি নতুন সূচনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। দেশকে অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে কাজ করবেন বলেও জানান এ প্রেসিডেন্ট।

উল্লেখ্য, বছর দুয়েক আগে বিশ্বের কাছে উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছিল শ্রীলঙ্কা। চরমে ওঠে আর্থিক সংকট। তার উপর বিপুল অঙ্কের ঋণের বোঝা। সব কিছু সামলাতে হিমশিম খায় সরকার। এই পরিস্থিতে এবার যিনি প্রেসিডেন্ট হবেন, তার উপরে যে গুরুদায়িত্ব থাকবে তা বলাই বাহুল্য।