Dhaka 3:03 am, Friday, 28 November 2025

অংশীজনরা মত দিলে স্বল্প পরিসরে ‘প্রক্সি ভোট’: ইসি

Reporter Name
  • Update Time : 05:26:27 am, Wednesday, 12 March 2025
  • / 99 Time View

অগ্নিশিখা প্রতিবেদক: রাজনৈতিক দলসহ অন্যান্য অংশীজন রাজি থাকলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে ‘স্বল্প’ পরিসরে ‘প্রক্সি ভোটিং’ চালু করতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

গতকাল মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, তিনটি পদ্ধতির মধ্যে ‘প্রক্সি ভোট’ নিয়ে এপ্রিলের শুরুতে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হবে। এরপর বসা হবে রাজনৈতিক দলসহ অন্য অংশীজনদের সঙ্গে।তিনি বলেছেন, আগামী নির্বাচনে প্রবাসী ভোটারদের প্রত্যাশা পূরণ করতে চাইলে প্রক্সি ভোটের দিকে যেতে হবে।

আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, তাদের কাছে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী প্রায় ১ কোটি ৩২ লাখ বাংলাদেশি প্রবাসে থাকেন। তাদের মধ্যে ৭০-৮০ ভাগ ভোটার। বিগত বছরগুলোতে প্রবাসীরা ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি। বিদ্যমান পোস্টাল ব্যালট পদ্ধতি কার্যকর নয়। এ অবস্থায় বিকল্প চিন্তা করছেন তারা।

তিনি বলেন, গত ১৬ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, এবার সরকার প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট নিশ্চিত করতে চায়। তার এই কথার বাস্তবায়ন করতে চাই। এই আলোকে নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট কমিটিকে প্রস্তাব দেওয়ার জন্য বলেছে। কমিটি তিনটি পদ্ধতি সুপারিশ করেছে। একটি পোস্টাল ব্যালট। আরেকটি অনলাইন ভোটিং। তবে অনলাইন ভোটিং তেমন জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। আরেকটি প্রস্তাব হলো প্রক্সি ভোট। অর্থাৎ প্রবাসী বাংলাদেশির হয়ে কেউ একজন তার এলাকায় ভোটটা দিয়ে দেবেন।

এই কমিশনার বলেন, কয়েকটি দেশে বিভিন্ন পরিসরে প্রক্সি ভোটিং প্রচলিত আছে। তার মধ্যে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া অন্যতম। আর ভারতে শুধু স্বশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য প্রচলিত আছে। তিনি বলেন, পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে তো জমিজমাও বিক্রি করে থাকি, তাহলে ভোটও তো অধিকার। যদি সেটাকে আমরা এভাবে বাস্তবায়ন করতে পারি তবে একটা ফলাফল আসবে। বাংলাদেশেও প্রতিবন্ধীদের ভোট আরেক জন দিতে পারে, যদিও এটার সঙ্গে প্রক্সি ভোটের বিষয়টা মেলানো যাবে না। তবে আমরা বলছি, একটা সুযোগ আছে।

প্রক্সি ভোট খুব কম সময়ে রিয়েল টাইমে করা সম্ভব জানিয়ে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, আগামী ৮ বা ৯ এপ্রিলের মধ্যে একটা কর্মশালা হবে। সেখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউটকে আমরা আমন্ত্রণ জানাব। প্রাথমিকভাবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এবং এমআইএসটিকে সম্পৃক্ত করার। এর বাইরেও সংস্কার কমিশনের বিশেষজ্ঞ, ইসির সাবেক অভিজ্ঞ কর্মকর্তা ও এনজিওকেও আমন্ত্রণ জানাব। তিনি বলেন, আমরা একটা সিস্টেম আর্কিটেকচার ডেভেলপ করতে চাই। এরপর আমরা দল ও অন্য অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করতে চাই। যদি দেখি এটা গ্রহণযোগ্য হচ্ছে, তখন আমরা সিস্টেম ডেভেলপমেন্টের দিকে যাব। সবাই যদি সিদ্ধান্ত দেয় তাহলে আইনেও পরিবর্তন আনতে হবে।

যারা ভোটার তারা না কি ‘ভোটা দেওয়ার যোগ্য বয়সী’ সব প্রবাসী ভোট দিতে পারবেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, যাদের ভোটার তালিকায় নাম আছে তারাই কেবল প্রক্সি ভোট দিতে পারবেন। এজন্য ৪০টি দেশে আমরা ভোটার কার্যক্রম চালাব। তবে আগামী নির্বাচনের আগে কতটুকু পারব জানি না।

প্রক্সি ভোটে চ্যালেঞ্জের বিষয়ে তিনি বলেন, একটা চ্যালেঞ্জ হচ্ছে গ্লোবালি একসেপ্টেড কোনো সিস্টেম আমাদের হাতে নেই। এ রকম যদি থাকত তাহলে সেটাই করতাম। এখন নতুন একটি সিস্টেম ডিজাইন করতে হচ্ছে। নির্বাচন সংস্কার কমিশনও একটা পদ্ধতি সুপারিশ করেছে। আশা করি, কার্যকর পদ্ধতি বের করতে পারব। তবে এটা একটা চ্যালেঞ্জ হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

অংশীজনরা মত দিলে স্বল্প পরিসরে ‘প্রক্সি ভোট’: ইসি

Update Time : 05:26:27 am, Wednesday, 12 March 2025

অগ্নিশিখা প্রতিবেদক: রাজনৈতিক দলসহ অন্যান্য অংশীজন রাজি থাকলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে ‘স্বল্প’ পরিসরে ‘প্রক্সি ভোটিং’ চালু করতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

গতকাল মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, তিনটি পদ্ধতির মধ্যে ‘প্রক্সি ভোট’ নিয়ে এপ্রিলের শুরুতে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হবে। এরপর বসা হবে রাজনৈতিক দলসহ অন্য অংশীজনদের সঙ্গে।তিনি বলেছেন, আগামী নির্বাচনে প্রবাসী ভোটারদের প্রত্যাশা পূরণ করতে চাইলে প্রক্সি ভোটের দিকে যেতে হবে।

আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, তাদের কাছে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী প্রায় ১ কোটি ৩২ লাখ বাংলাদেশি প্রবাসে থাকেন। তাদের মধ্যে ৭০-৮০ ভাগ ভোটার। বিগত বছরগুলোতে প্রবাসীরা ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি। বিদ্যমান পোস্টাল ব্যালট পদ্ধতি কার্যকর নয়। এ অবস্থায় বিকল্প চিন্তা করছেন তারা।

তিনি বলেন, গত ১৬ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, এবার সরকার প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট নিশ্চিত করতে চায়। তার এই কথার বাস্তবায়ন করতে চাই। এই আলোকে নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট কমিটিকে প্রস্তাব দেওয়ার জন্য বলেছে। কমিটি তিনটি পদ্ধতি সুপারিশ করেছে। একটি পোস্টাল ব্যালট। আরেকটি অনলাইন ভোটিং। তবে অনলাইন ভোটিং তেমন জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। আরেকটি প্রস্তাব হলো প্রক্সি ভোট। অর্থাৎ প্রবাসী বাংলাদেশির হয়ে কেউ একজন তার এলাকায় ভোটটা দিয়ে দেবেন।

এই কমিশনার বলেন, কয়েকটি দেশে বিভিন্ন পরিসরে প্রক্সি ভোটিং প্রচলিত আছে। তার মধ্যে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া অন্যতম। আর ভারতে শুধু স্বশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য প্রচলিত আছে। তিনি বলেন, পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে তো জমিজমাও বিক্রি করে থাকি, তাহলে ভোটও তো অধিকার। যদি সেটাকে আমরা এভাবে বাস্তবায়ন করতে পারি তবে একটা ফলাফল আসবে। বাংলাদেশেও প্রতিবন্ধীদের ভোট আরেক জন দিতে পারে, যদিও এটার সঙ্গে প্রক্সি ভোটের বিষয়টা মেলানো যাবে না। তবে আমরা বলছি, একটা সুযোগ আছে।

প্রক্সি ভোট খুব কম সময়ে রিয়েল টাইমে করা সম্ভব জানিয়ে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, আগামী ৮ বা ৯ এপ্রিলের মধ্যে একটা কর্মশালা হবে। সেখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউটকে আমরা আমন্ত্রণ জানাব। প্রাথমিকভাবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এবং এমআইএসটিকে সম্পৃক্ত করার। এর বাইরেও সংস্কার কমিশনের বিশেষজ্ঞ, ইসির সাবেক অভিজ্ঞ কর্মকর্তা ও এনজিওকেও আমন্ত্রণ জানাব। তিনি বলেন, আমরা একটা সিস্টেম আর্কিটেকচার ডেভেলপ করতে চাই। এরপর আমরা দল ও অন্য অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করতে চাই। যদি দেখি এটা গ্রহণযোগ্য হচ্ছে, তখন আমরা সিস্টেম ডেভেলপমেন্টের দিকে যাব। সবাই যদি সিদ্ধান্ত দেয় তাহলে আইনেও পরিবর্তন আনতে হবে।

যারা ভোটার তারা না কি ‘ভোটা দেওয়ার যোগ্য বয়সী’ সব প্রবাসী ভোট দিতে পারবেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, যাদের ভোটার তালিকায় নাম আছে তারাই কেবল প্রক্সি ভোট দিতে পারবেন। এজন্য ৪০টি দেশে আমরা ভোটার কার্যক্রম চালাব। তবে আগামী নির্বাচনের আগে কতটুকু পারব জানি না।

প্রক্সি ভোটে চ্যালেঞ্জের বিষয়ে তিনি বলেন, একটা চ্যালেঞ্জ হচ্ছে গ্লোবালি একসেপ্টেড কোনো সিস্টেম আমাদের হাতে নেই। এ রকম যদি থাকত তাহলে সেটাই করতাম। এখন নতুন একটি সিস্টেম ডিজাইন করতে হচ্ছে। নির্বাচন সংস্কার কমিশনও একটা পদ্ধতি সুপারিশ করেছে। আশা করি, কার্যকর পদ্ধতি বের করতে পারব। তবে এটা একটা চ্যালেঞ্জ হবে।