রবিবার, ০৪ মে ২০২৫, ০১:৩৫ অপরাহ্ন

প্রাইমারিতে চাকরি পাইয়ে দেয়ার কথা বলে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ

আতোয়ার রহমান,গাইবান্ধাঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ১২ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষিকা মাহমুদার বিরুদ্ধে। পরে চাকরি পাইয়ে দিতে ব্যর্থ হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে নানা ধরণের হুমকি দেন তিনি।এছাড়া আরো অনেকের কাছে প্রাথমিকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে।

অভিযোগে জানা গেছে, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সুবর্ণদহ গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে শাহনাজ পারভীন গত ২০২৩ সালের ৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ (গ্রুপ-১)পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। তার রোল নং ৩৭২০৯৩৪। কিন্তু তিনি অকৃতকার্য হন। এদিকে একই উপজেলার পরান গ্রামের আলম মিয়ার স্ত্রী চাঁদপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাহমুদা বেগমের সাথে শাহনাজ পারভীনের স্বামীর পরিবারের আত্মীয়তা থাকায় তাদের বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত ছিলো। সেই সুবাদে মাহমুদা বেগম ও তার ভাই রানা মিয়া চাকরি প্রত্যাশী শাহনাজ পারভীনের বাড়িতে আসে এবং চাকরি পাইয়ে দিতে পারবে বলে চাটুকার গল্প করেন। এসময় তারা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে ভালো স¤পর্কেরও কথা বলে চাকরি বাবদ মোট ১২ লাখ টাকা চায়। তাদের কথা বিশ্বাস করে শাহনাজ পারভীনের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি ও নগদ ১০ লাখ টাকা তাদের হাতে প্রদান করা হয়। এর কিছুদিন পর রানা মিয়ার ০১৩০৩৯৮৯০৬৫ নম্বরে মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের মাধ্যমে ১ লাখ ৪০ হাজার ৫শ টাকা দেওয়া হয়। পরে সহকারী শিক্ষিকা মাহমুদা বেগম ও তার ভাই রানা মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা
জানায়, নিয়োগ সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র চুড়ান্ত হয়েছে, বাকি ৬০ হাজার টাকা দ্রুত পরিশোধ করলে নিয়োগপত্র প্রদান করা হবে। তাদের এমন কথায় শাহনাজ পারভীনের পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হয়। তারা টাকা ফেরত চাইলে নানা রকম ভয়ভীতি ও হুমকি দিতে থাকে মাহমুদা ও তার ভাই রানা মিয়া।শাহনাজ পারভীন বলেন, সহকারী শিক্ষিকা মাহমুদা ও তার ভাই রানা মিয়ার সাথে চাকরি সংক্রান্তে মোবাইল ফোনে কথোপকথনের সকল ভয়েস রেকর্ড ও টাকা লেনদেনের ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত আছে, যা ঘটনা প্রমাণ করবে।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি, পুলিশ সুপার ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। এই প্রতারনার শিকার শুধু আমি একাই হইনি, আমার মতো আরো অনেকেই হয়েছেন। এসময় ওই প্রতারক ভাই ও বোনের কাছে থাকা তার মূল সনদপত্র ও টাকা ফেরতসহ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক মাহমুদা বেগম প্রথমে টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করলেও পরে স্বীকার করে বলেন, আমার ভাই এই টাকা নিয়েছে। এবিষয়ে সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, এমন অভিযোগ পেয়েছি, দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নবেজ উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন,অভিযোগটি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে এলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খবরটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024 thedailyagnishikha.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com