সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১৮ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ :
তারেক রহমানের খালাসে মির্জা ফখরুলের স্বস্তি প্রকাশ কঠিন সময় পেরিয়ে দেশ ও জাতিকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যেতে চাই: সেনাপ্রধান পলাশবাড়ীতে বিএনপি ও শ্রমিকনেতা আব্দুল মোতাল্লিব সরকার বকুলের নামে মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন নগরে পরিচ্ছন্ন ভাব আনতে তারের জঞ্জাল সরানো হবে : মেয়র তারেক রহমান-বাবরসহ সব আসামি খালাস ওসমানীনগরে এম. ইলিয়াস আলীর সন্ধান কামনায় দোয়া মাহফিল সাকিব এখনো জাতীয় দলে খেলার ক্ষমতা রাখে- বিসিবি সভাপতি ব্রাক্ষণবাড়িয়া বিজয়নগরে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের রোগীদের চিকিৎসা না দেওয়ার ঘোষণা ত্রিপুরার হাসপাতালের পলাশবাড়ীতে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি হুমকিতে পরিবেশ

বাউফলে এমপিভুক্ত মাদ্রাসায় ১৯বছর ধরে নেই কোনো শিক্ষার্থী পূর্ব ইন্দ্রকুল ফিরোজা কামাল বালিকা দাখিল মাদ্রাসা

 

ইমরান হোসেন বিশেষ প্রতিনিধি

 

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার সূর্যমণি ইউনিয়নের এমপিওভুক্ত পূর্ব ইন্দ্রকুল ফিরোজা কামাল বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় ১৯ বছর ধরে নেই কোনো শিক্ষার্থী। এমপিওভুক্ত ওই মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী না থাকলেও শিক্ষকেরা সরকারি বেতন-ভাতা ব্যাংক থেকে নিয়মিত উত্তোলন করছেন। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ খাতাকলমে ২৫০ জন শিক্ষার্থী আছে দাবি করলেও বাস্তবে কোনো শিক্ষার্থীর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

 

মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে পূর্ব ইন্দ্রকুল ফিরোজা কামাল বালিকা দাখিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন স্থানীয় আব্দুল মোতালেব মিয়া নামে এক ব্যক্তি। এরপর প্রতিষ্ঠানটি ২০০৪ সালে এমপিওভুক্ত হয়। মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিষ্ঠাতা মোতালেব মিয়াই প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি হিসেবে রয়েছেন। মাদ্রাসার সুপার হিসেব আছেন সভাপতির ছেলের স্ত্রী মাহফুজা আক্তার এবং মেয়ে নুরজাহান রাঢ়ী ইবতেদায়ির শিক্ষক। অপর দুই ছেলে খাইরুল ইসলাম অফিস সহকারী ও সিদ্দিকুর রহমান নৈশপ্রহরী হিসেবে কর্মরত আছেন।

 

ইবতেদায়ি ও দাখিল দশম পর্যন্ত মাদ্রাসার দায়িত্বে আছেন ১৩ জন। তাঁদের মধ্যে ইবতেদায়িতে চারজন, দাখিলে পাঁচজন শিক্ষক, অফিস সহকারী, আয়া, নৈশপ্রহরী ও দপ্তরিসহ একজন করে মোট ১৩ জন শিক্ষক ও কর্মচারী প্রতি মাসে ২ লাখ ৮ হাজার টাকা বেতনভাতা উত্তোলন করছেন।

 

গত বুধবার বিকেল ৩টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদ্রাসা বন্ধ রয়েছে। পরে স্থানীয়দের কাছে সাংবাদিক আসার খবর পেয়ে ছুটে আসেন মাদ্রাসার সুপার ও সভাপতি। বেলা ৩টার সময় মাদ্রাসা বন্ধ কেন—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তাঁরা বলেন, আজ শিক্ষার্থীদের তাড়াতাড়ি ছুটি দেওয়া হয়েছে। এ কারণে মাদ্রাসা বন্ধ রয়েছে। এরপর তাঁদের অনুমতি নিয়ে মাদ্রাসা সুপারের কক্ষে প্রবেশ করলে দেখা যায়, সুপারের আসবাবপত্র বলতে রয়েছে একটি টেবিলসহ চারটি চেয়ার। নেই কোনো আলমারি কিংবা খাতাপত্র। জাতীয় পতাকা বাঁশের সঙ্গে মুড়িয়ে রাখা হয়েছে। এরপর এক এক কররে প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে গিয়ে দেখা যায়, কোনো শিক্ষার্থী যে কক্ষে বসে ক্লাস করে, তার কোনো নমুনা পাওয়া যায়নি। এমনকি কোনো কক্ষেই ছিল না ব্ল্যাকবোর্ড। শিক্ষা উপকরণ যেমন—ডাস্টার, চক কিংবা ব্ল্যাকবোর্ড দেখতে চাইলে সুপার কিছুই দেখাতে পারেননি।

 

পরদিন বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে মাদ্রাসায় গেলে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানে মাত্র পাঁচজন শিক্ষক উপস্থিত রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দাখিলের দুজন ও ইবতেদায়ির তিনজন। আইরিন বেগম নামে একজন শিক্ষিকা ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর শেষ উপস্থিতি স্বাক্ষর করেছেন। এরপর গত ৭ মাস ওই শিক্ষিকার হাজিরা খাতায় আর কোনো স্বাক্ষর নেই। অথচ বেতন-ভাতা সঠিক সময়ে উত্তোলন করেছেন তিনি। অপর শিক্ষকেরা যে যাঁর মতো করে ছুটি কাটাচ্ছেন।

 

মাদ্রাসার সুপার মাহফুজা আক্তার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘আগে অনেক শিক্ষার্থী ছিল। ২০০৯ সালের পর শিক্ষকদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় আশপাশের এলাকার শিক্ষার্থীরা এ মাদ্রাসায় ভর্তি হয় না। দূরের কিছু শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। তাদের এখান থেকে দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়ে মাদ্রাসা টিকিয়ে রাখছি।’

 

এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাজমুল হোসাইন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের উপস্থিত না থাকলে কোনো প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত থাকতে পারে না। আমরা তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ পাঠাব।

খবরটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024 thedailyagnishikha.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com