কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় শাশুড়িকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় জড়িত মূল আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১১। বৃহস্পতিবার (তারিখ উল্লেখযোগ্য) ঢাকার আশুলিয়ার ডেন্ডাবর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব-১১ জানায়, গ্রেফতারকৃত আসামি মোঃ জামাল সিকদার (৫০)। তিনি কুমিল্লা জেলার তিতাস থানাধীন মজিদপুর ইউনিয়নের শিবপুর সিকদার বাড়ির বাসিন্দা। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন ও নগদ ১১ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, গত ১০ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে তিতাস উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের শিবপুর এলাকায় এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড ঘটে। আসামি জামাল সিকদার তার ব্যবহৃত ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন নিয়ে বিরোধের জেরে স্ত্রী ও কন্যাকে গালমন্দ করেন। একপর্যায়ে তিনি তার কন্যা মারিয়া আক্তার (১৭)-কে মারধর ও লাথি মারলে সে গুরুতর আহত হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ঘটনার বিষয়টি জানতে পেরে আসামির শাশুড়ি সুফিয়া বেগম (৭০) তার বাড়িতে আসেন এবং মেয়েকে মারধরের কারণ জানতে চাইলে তাদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে জামাল সিকদার শাশুড়িকে মারধর করেন এবং কোলে তুলে বাড়ির পাশের একটি খালে নিয়ে গিয়ে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করেন। প্রতিবেশীরা ঘটনাটি দেখে এগিয়ে এলে আসামি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় নিহত সুফিয়া বেগমের নাতি বাদী হয়ে তিতাস থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচারিত হলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ঘটনার পরপরই আসামিকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-১১ গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। গোপন তথ্য, প্রযুক্তির সহায়তা ও ধারাবাহিক অভিযানের মাধ্যমে আশুলিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়।
র্যাব আরও জানায়, গত ৫ আগস্ট ২০২৪ থেকে অদ্যাবধি র্যাব-১১ তাদের দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ৩১৬ জন চাঞ্চল্যকর অপরাধীসহ মোট শত শত অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে। একই সময়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে কুমিল্লা জেলার তিতাস থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।