Dhaka 9:14 pm, Saturday, 22 November 2025

ওসমানীনগরে ৭ বছরেও শেষ হয়নি বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের কাজ!

  • Reporter Name
  • Update Time : 10:18:16 am, Sunday, 19 January 2025
  • 192 Time View

শরীফ আহমদ চৌধুরী,ওসমানীনগর( সিলেট) সংবাদদাতাঃ শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ঠিকাদরি প্রতিষ্টানের চরম দায়িত্ব অবহেলায় সাত বছর থেকে আটকে আছে সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার উমরপুর ইউনিয়নের প্রাচীণতম বিদ্যাপীট খুজকীপুর মান উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয় বিদ্যালয়ের ভবণ নির্মানরে কাজ। বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনের জরাজীর্ণ কক্ষে পাঠদান কার্যক্রম চালাতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে কয়েক দফা লিখিত অভিযোগসহ নানাভাবে যোগাযোগ করেও কোন কাজ হয়নি।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওসমানীনগর উপজেলার উমর পুর উনিয়নের খুজকীপুর মান উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্টা হয় ১৯৪১ সালে। উপজেলার সীমান্তপারের একমাত্র প্রাচীনতম এ বিদ্যালয়টি পশ্চিম অঞ্চলের শিক্ষাঙ্হণে ব্যাপক অবদান রেখে চলছে। বর্তমানে এ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৫শ,র মতো।বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি একেবারই জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে একটি উর্ধ্বমুখী দ্বিতল ও তিনতলা ভবন নির্মাণ করতে বলা হয়। এ জন্য প্রায় দুই টেন্ডারে সরকার থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকার মতো বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর পর টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে ২০১৮ সালের অক্টোবরে কার্যাদেশ দেওয়া হয়।

পরে বালাগঞ্জের কুশিয়ারা ট্রেডিং কনস্ট্রাকশন আতাউর রহমান নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেই ভবন নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায়। তখন প্রতিষ্ঠানটি নিচতলা ভবণের প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ করে অজ্হাত কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্টান ভবণ নির্মান কাজটি বন্ধ করে দেয়। এরপর ৭ বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও সে ভবণের আর কোন কাজ হয়নি।ভবন নির্মাণে এত দীর্ঘ সময় লাগায় ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারী) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জরাজীর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ একটি ভবনে ও একটি টিনশেড কক্ষে গাদাগাদি করে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। স্কুলের মাঠে ও ভবনের কক্ষের সামনে পড়ে আছে নির্মাণ সামগ্রী।পড়ে থাকা সেই নির্মাণ সামগ্রী একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। আবার নিচতলার যে ৮০ শতাংশ কাজ সম্পাদন করা হয়েছে সেই কাজে অত্যন্ত নিম্নমানের প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে ভবণ নির্মানের আগেই চারদিকের দেওয়ালে ফাটল ধরেছে।

ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাহাত মিয়া ও মাহদিয়াল হাসান বলেন, আমরা যখন ষষ্ট শ্রেণীতে পড়ি,তার আগেই এই ভবণের কাজ শুরু হয়েছিল ভর্তী হয়ে জানতে পারি। আমরা এখন আমি দশম শ্রেণীতে পড়ি কী কষ্টে গত ৫ বছর জরাজীর্ণ পুরাতন ভবনে গাদাগাদি করে ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে,সেটি বলার অপেক্ষা রাখেনা।একটি ক্লাস হচ্ছে টিনশেডের রুমে আর আরেকটি হচ্ছে পুরাতন ভবনে। ওই ভবনে রুমের জানালা নেই, ফ্যান নেই, প্রচণ্ড গরমের সময় অসহনীয় গরম, শীতকালে কন-কনে বাতাস ও ঝড় বৃষ্টি হলে পানি পড়ে কিন্তু তারপরেও সেখানেই ক্লাস করতে হচ্ছে। এতে আমাদের পাশাপাশি স্যার দেরও অনেক সমস্যা হচ্ছে। তাই দ্রুতই নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন চন্দ্র দে বলেন, আমি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ভবন নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য বার বার অনুরোধ করছি। জরাজীর্ণ পুরাতন ভবন আর টিনসেট কক্ষে ক্লাস নিতে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। এছাড়া সেখানে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে। আর মাঠে নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখায় শিক্ষার্থীরা সেখানে খেলাধুলাও করতে পারছে না।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বালাগঞ্জের কুশিয়ারা ট্রেডিং কনস্ট্রাকশন কর্তৃপক্ষের যোগাযোগ করা হলে দুই-এক দিনের বিতরেই কাজ শুরু করবেন বলে জানান।
জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: শামসুল আরেফিন খানকে সরকারী মুঠোফোন নম্বারে কল দিলে তিনি রিসিব করেননি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Murad Ahmed

Popular Post

ফতুল্লা থানা পুলিশ ০৯ (নয়) বোতল ফেন্সিডিল সহ ০২ (দুই) জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে

ওসমানীনগরে ৭ বছরেও শেষ হয়নি বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের কাজ!

Update Time : 10:18:16 am, Sunday, 19 January 2025

শরীফ আহমদ চৌধুরী,ওসমানীনগর( সিলেট) সংবাদদাতাঃ শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ঠিকাদরি প্রতিষ্টানের চরম দায়িত্ব অবহেলায় সাত বছর থেকে আটকে আছে সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার উমরপুর ইউনিয়নের প্রাচীণতম বিদ্যাপীট খুজকীপুর মান উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয় বিদ্যালয়ের ভবণ নির্মানরে কাজ। বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনের জরাজীর্ণ কক্ষে পাঠদান কার্যক্রম চালাতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে কয়েক দফা লিখিত অভিযোগসহ নানাভাবে যোগাযোগ করেও কোন কাজ হয়নি।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওসমানীনগর উপজেলার উমর পুর উনিয়নের খুজকীপুর মান উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্টা হয় ১৯৪১ সালে। উপজেলার সীমান্তপারের একমাত্র প্রাচীনতম এ বিদ্যালয়টি পশ্চিম অঞ্চলের শিক্ষাঙ্হণে ব্যাপক অবদান রেখে চলছে। বর্তমানে এ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৫শ,র মতো।বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি একেবারই জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে একটি উর্ধ্বমুখী দ্বিতল ও তিনতলা ভবন নির্মাণ করতে বলা হয়। এ জন্য প্রায় দুই টেন্ডারে সরকার থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকার মতো বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর পর টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে ২০১৮ সালের অক্টোবরে কার্যাদেশ দেওয়া হয়।

পরে বালাগঞ্জের কুশিয়ারা ট্রেডিং কনস্ট্রাকশন আতাউর রহমান নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেই ভবন নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায়। তখন প্রতিষ্ঠানটি নিচতলা ভবণের প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ করে অজ্হাত কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্টান ভবণ নির্মান কাজটি বন্ধ করে দেয়। এরপর ৭ বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও সে ভবণের আর কোন কাজ হয়নি।ভবন নির্মাণে এত দীর্ঘ সময় লাগায় ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারী) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জরাজীর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ একটি ভবনে ও একটি টিনশেড কক্ষে গাদাগাদি করে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। স্কুলের মাঠে ও ভবনের কক্ষের সামনে পড়ে আছে নির্মাণ সামগ্রী।পড়ে থাকা সেই নির্মাণ সামগ্রী একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। আবার নিচতলার যে ৮০ শতাংশ কাজ সম্পাদন করা হয়েছে সেই কাজে অত্যন্ত নিম্নমানের প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে ভবণ নির্মানের আগেই চারদিকের দেওয়ালে ফাটল ধরেছে।

ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাহাত মিয়া ও মাহদিয়াল হাসান বলেন, আমরা যখন ষষ্ট শ্রেণীতে পড়ি,তার আগেই এই ভবণের কাজ শুরু হয়েছিল ভর্তী হয়ে জানতে পারি। আমরা এখন আমি দশম শ্রেণীতে পড়ি কী কষ্টে গত ৫ বছর জরাজীর্ণ পুরাতন ভবনে গাদাগাদি করে ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে,সেটি বলার অপেক্ষা রাখেনা।একটি ক্লাস হচ্ছে টিনশেডের রুমে আর আরেকটি হচ্ছে পুরাতন ভবনে। ওই ভবনে রুমের জানালা নেই, ফ্যান নেই, প্রচণ্ড গরমের সময় অসহনীয় গরম, শীতকালে কন-কনে বাতাস ও ঝড় বৃষ্টি হলে পানি পড়ে কিন্তু তারপরেও সেখানেই ক্লাস করতে হচ্ছে। এতে আমাদের পাশাপাশি স্যার দেরও অনেক সমস্যা হচ্ছে। তাই দ্রুতই নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন চন্দ্র দে বলেন, আমি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ভবন নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য বার বার অনুরোধ করছি। জরাজীর্ণ পুরাতন ভবন আর টিনসেট কক্ষে ক্লাস নিতে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। এছাড়া সেখানে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে। আর মাঠে নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখায় শিক্ষার্থীরা সেখানে খেলাধুলাও করতে পারছে না।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বালাগঞ্জের কুশিয়ারা ট্রেডিং কনস্ট্রাকশন কর্তৃপক্ষের যোগাযোগ করা হলে দুই-এক দিনের বিতরেই কাজ শুরু করবেন বলে জানান।
জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: শামসুল আরেফিন খানকে সরকারী মুঠোফোন নম্বারে কল দিলে তিনি রিসিব করেননি।