Dhaka 3:43 am, Friday, 28 November 2025

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ১৫ হাজার যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ

Reporter Name
  • Update Time : 01:31:31 pm, Wednesday, 1 June 2022
  • / 370 Time View

 

ইউক্রেনের প্রধান কৌঁসুলি অভিযোগ করেছেন যে, দেশটিতে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার যুদ্ধাপরাধের মতো ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। নেদারল্যান্ডসের দ্যা হেগ শহরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইরিনা ভেনেডিকটভা বলেন, এসব ঘটনায় ৬শ সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং ৮০টি ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। খবর বিবিসির।

এই সন্দেহভাজনদের তালিকায় রুশ সেনাবাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ছাড়াও দেশটির রাজনীতিক ও রাশিয়ার পক্ষে কাজ করা এজেন্টদের নাম রয়েছে। রাশিয়া অবশ্য বরাবরই বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

ভেনেডিকটভা জানিয়েছেন, ১৫ হাজার যুদ্ধাপরাধের ঘটনার মধ্যে কয়েক হাজার হয়েছে পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস অঞ্চলে, যেখানে ইউক্রেনের সেনাদের সঙ্গে রুশ সেনাদের তীব্র লড়াই চলছে। ওই অঞ্চলে যুদ্ধাপরাধের যেসব ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে রয়েছে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা, বিশেষ করে প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের রাশিয়ার দুটি আলাদা এলাকায় পাঠিয়ে দেওয়া।

তিনি বলেন, নির্যাতন, বেসামরিক নাগরিক হত্যা, বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করাও সন্দেহভাজন যুদ্ধাপরাধের মধ্যে রয়েছে। লড়াই চলার সময় তদন্ত করা খুব কঠিন কাজ বলেও উল্লেখ করেন ইরিনা ভেনেডিকটভা।

এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও স্লোভাকিয়াও এসব ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। পোল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়া আগে থেকেই সহায়তা করছে।

দ্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম কোর্ট ইতোমধ্যেই ইউক্রেনকে ‘অপরাধ ক্ষেত্র’ হিসেবে বর্ণনা করেছে এবং সংস্থাটির তদন্ত কর্মকর্তাদের একটি বড় দলকে ইউক্রেনের তদন্ত কার্যক্রমে সহায়তার জন্য ছেড়ে দিয়েছে। এমনকি তারা কিয়েভে একটি কার্যালয় নেওয়ারও আশা করছে।

এদিকে মঙ্গলবার দুজন রুশ সেনার কারাদণ্ডের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বেসামরিক এলাকায় গোলাবর্ষণের দায়ে তাদের অভিযুক্ত করা হয়। এছাড়া ইউক্রেনে আরও এক রুশ সেনার বিচার শুরু হয়েছে গত সপ্তাহে। তার বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিক হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

অপরদিকে ইউক্রেনের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান লুদমিলা ডেনিসোভারকে দেশটির পার্লামেন্ট বরখাস্ত করেছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো- তিনি মানবিক করিডোর তৈরি করে বন্দি বিনিময় কার্যক্রম সঠিকভাবে করতে পারেননি।

একইসঙ্গে রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের যে অভিযোগ উঠেছে সেটাও ঠিকমতো সামাল দিতে পারেননি বলে স্থানীয় গণমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে। পূর্বাঞ্চলীয় শহর সেভেরোদনিয়েস্কের নিয়ন্ত্রণ নিতে ইউক্রেন ও রুশ সৈন্যদের মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে বলে খবর পাওয়া গেছে। যদিও সেখানকার আঞ্চলিক গভর্নর জানিয়েছেন, শহরটি ৭০-৮০ ভাগ এখন রুশদের নিয়ন্ত্রণে। রাশিয়া এখন লুহানস্কের প্রায় পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করছে এবং পার্শ্ববর্তী দনেৎস্কের দিকে দৃষ্টি দিয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ১৫ হাজার যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ

Update Time : 01:31:31 pm, Wednesday, 1 June 2022

 

ইউক্রেনের প্রধান কৌঁসুলি অভিযোগ করেছেন যে, দেশটিতে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার যুদ্ধাপরাধের মতো ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। নেদারল্যান্ডসের দ্যা হেগ শহরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইরিনা ভেনেডিকটভা বলেন, এসব ঘটনায় ৬শ সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং ৮০টি ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। খবর বিবিসির।

এই সন্দেহভাজনদের তালিকায় রুশ সেনাবাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ছাড়াও দেশটির রাজনীতিক ও রাশিয়ার পক্ষে কাজ করা এজেন্টদের নাম রয়েছে। রাশিয়া অবশ্য বরাবরই বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

ভেনেডিকটভা জানিয়েছেন, ১৫ হাজার যুদ্ধাপরাধের ঘটনার মধ্যে কয়েক হাজার হয়েছে পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস অঞ্চলে, যেখানে ইউক্রেনের সেনাদের সঙ্গে রুশ সেনাদের তীব্র লড়াই চলছে। ওই অঞ্চলে যুদ্ধাপরাধের যেসব ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে রয়েছে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা, বিশেষ করে প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের রাশিয়ার দুটি আলাদা এলাকায় পাঠিয়ে দেওয়া।

তিনি বলেন, নির্যাতন, বেসামরিক নাগরিক হত্যা, বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করাও সন্দেহভাজন যুদ্ধাপরাধের মধ্যে রয়েছে। লড়াই চলার সময় তদন্ত করা খুব কঠিন কাজ বলেও উল্লেখ করেন ইরিনা ভেনেডিকটভা।

এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও স্লোভাকিয়াও এসব ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। পোল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়া আগে থেকেই সহায়তা করছে।

দ্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম কোর্ট ইতোমধ্যেই ইউক্রেনকে ‘অপরাধ ক্ষেত্র’ হিসেবে বর্ণনা করেছে এবং সংস্থাটির তদন্ত কর্মকর্তাদের একটি বড় দলকে ইউক্রেনের তদন্ত কার্যক্রমে সহায়তার জন্য ছেড়ে দিয়েছে। এমনকি তারা কিয়েভে একটি কার্যালয় নেওয়ারও আশা করছে।

এদিকে মঙ্গলবার দুজন রুশ সেনার কারাদণ্ডের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বেসামরিক এলাকায় গোলাবর্ষণের দায়ে তাদের অভিযুক্ত করা হয়। এছাড়া ইউক্রেনে আরও এক রুশ সেনার বিচার শুরু হয়েছে গত সপ্তাহে। তার বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিক হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

অপরদিকে ইউক্রেনের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান লুদমিলা ডেনিসোভারকে দেশটির পার্লামেন্ট বরখাস্ত করেছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো- তিনি মানবিক করিডোর তৈরি করে বন্দি বিনিময় কার্যক্রম সঠিকভাবে করতে পারেননি।

একইসঙ্গে রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের যে অভিযোগ উঠেছে সেটাও ঠিকমতো সামাল দিতে পারেননি বলে স্থানীয় গণমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে। পূর্বাঞ্চলীয় শহর সেভেরোদনিয়েস্কের নিয়ন্ত্রণ নিতে ইউক্রেন ও রুশ সৈন্যদের মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে বলে খবর পাওয়া গেছে। যদিও সেখানকার আঞ্চলিক গভর্নর জানিয়েছেন, শহরটি ৭০-৮০ ভাগ এখন রুশদের নিয়ন্ত্রণে। রাশিয়া এখন লুহানস্কের প্রায় পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করছে এবং পার্শ্ববর্তী দনেৎস্কের দিকে দৃষ্টি দিয়েছে।