Dhaka 12:44 am, Wednesday, 26 November 2025

পীরগঞ্জে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

Reporter Name
  • Update Time : 01:17:46 pm, Sunday, 3 November 2024
  • / 234 Time View

রংপুর ব্যুরো চীফঃ রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ধর্মদাসপুর আমিনিয়া দাখিল মাদ্রাসার এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগের বৈধতা ও স্বাক্ষর জাল জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় অবিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার খেজমতপুর এমাজিয়া দাখিল মাদ্রাসা কতৃর্পক্ষ বিগত ২৪/০৪/১৯৯৬ সনে প্রতিষ্ঠানটির তৎকালিন কতৃর্পক্ষ সহকারী শিক্ষক হিসেবে মোহাম্মদ আব্দুর রউফ মন্ডলকে নিয়োগ প্রদান করেন। পরবর্তিতে উক্ত শিক্ষক ১ মে ১৯৯৬ সনে এমপিও ভুক্ত হন। যার ইনডেক্স নং—জ—৩৮৯৯১২। কিন্তু ওই শিক্ষককে নিযোগ প্রদান কালিন সময়ে বিধি অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতা সকল বিভাগে ২য় বিভাগসহ স্নাতক পাশ হওয়ার কথা থাকলেও এ ক্ষেত্রে সে বিধি মানা হয়নি। অথচ উক্ত শিক্ষকের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাস্তবে ১৯৮৯ সনের দাখিল পরীক্ষার ফলাফল ২য় বিভাগ, ১৯৯১ সনের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষার ফলাফল ৩য় বিভাগ এবং ১৯৯৩ সনের স্নাতক পাশ পরীক্ষার ফলাফল ৩য় বিভাগ ছিল। এ ছাড়া বিধি অনুয়ায়ী নিয়োগ প্রদানকালিন সময়ে বিএড পাশের যোগ্যতা থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে তিনি নিয়োগ প্রাপ্তির পর ২০০০ সনে বিএড পাশ করেন।

এদিকে বিগত ২৯ জুন ২০১১ সনে মোহাম্মদ আব্দুর রউফ মন্ডল উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানে ইস্তেফা পত্র প্রদান করেন এবং পরবর্তিতে একই শিক্ষাগত যোগ্যতায় ৩০ জুন ২০১১ইং উপজেলার ধর্মদাসপুর আমিনিয়া দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগ প্রাপ্ত হন। ২০১২ সনের ফেব্রয়ারীতে পুর্বের ইনডেক্সেই সহকারী শিক্ষক হিসেবে এমপিও ভুক্ত হন। সার্বিক এ পরিস্থিতিতে উক্ত শিক্ষক ২০১২ সনে ধর্মদাসপুর আমিনিয়া দাখিল মাদ্রাসায় এমপিও ভুক্ত হওয়ার পুর্ব পর্যন্ত খেজমতপুর এমাজিয়া দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে বহাল না থেকেও নিয়মিত উপস্থিতি স্বাক্ষর দেখিয়ে নিয়ম বহির্ভুত ভাবে বেতন ভাতাদি উত্তোলন করেছেন। উল্লেখিত অনিয়ম ছাড়াও উক্ত শিক্ষক ধর্মদাসপুর মাদ্রাসায় চাকুরি করাকালিন সময়ে নিয়ম বহিভুর্ত নানা কর্মকান্ড অব্যহত রেখেছেন।

এ ব্যাপারে ওই মাদ্রাসার অভিভাবক সদস্য মোনাজ্জল হোসেন জানান, শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুর রউফ মন্ডল আমার নাম ভাঙ্গিয়ে ও স্বাক্ষর জাল জালিয়াতি মাধ্যমে গত ২৪ সেপ্টেম্বর’ ২০২৪ তারিখে ওই মাদ্রাসার নন এমপিও ভুক্ত এবতেদায়ী শাখার প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে শিক্ষা উপদেষ্টা, মহাসচিব— মাদ্রাসা অধিদপ্তর ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন— যা আমার অজানা। এছাড়াও শিক্ষক মোহাম্মাদ আব্দুর রউফ মন্ডল নামের ওই শিক্ষক গাইবান্ধা জেলার সাদ্যুল্লাপুর উপজেলার মধ্যপাড়া দাখিল মাদ্রাসার সুপারের স্বাক্ষর জাল জালিয়াতি করে ওই মাদ্রাসার রুহুল আমীন নামের ওই শিক্ষকের ইস্তফা পত্র ও ছাড়পত্র নিজ হাতে লিখে তাহার ইনডেক্স নম্বর ব্যবহার করে অন্য এক প্রতিষ্ঠানের রুহুল আমিন নামের একজনের এমপিও ভুক্ত করেন— তা পরবতীর্তে ধরা পড়ে। ওই শিক্ষকই উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ নানা শিক্ষা দপ্তরে ৩ বছর পুর্বের ওই মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর কম্পিউটারের মাধ্যামে স্ক্যান করে অভিযোগ দায়ের করেন ওই শিক্ষক। তার অভিযোগে জনৈক মমদেল নামের এক ব্যক্তির স্বাক্ষর দেখানো হয়েছে। অথচ সে ব্যক্তি গত ৩ বছর পুর্বেই মারা গেছেন । অভিভাবক ও এলাকাবাসী জানায়, উক্ত শিক্ষক প্রভাবশালী হওয়ার কারণে মাদ্রাসায় নানা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। এতে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে। কতৃর্পক্ষ তার বিরুদ্ধেও কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহন করতে পাছেন না। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুর রউফ মন্ডলের সঙ্গে কথা হলে বলেন, এক শ্রেণির মানুষ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রবাগান্ডা ছড়াচ্ছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

10

পীরগঞ্জে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

Update Time : 01:17:46 pm, Sunday, 3 November 2024

রংপুর ব্যুরো চীফঃ রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ধর্মদাসপুর আমিনিয়া দাখিল মাদ্রাসার এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগের বৈধতা ও স্বাক্ষর জাল জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় অবিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার খেজমতপুর এমাজিয়া দাখিল মাদ্রাসা কতৃর্পক্ষ বিগত ২৪/০৪/১৯৯৬ সনে প্রতিষ্ঠানটির তৎকালিন কতৃর্পক্ষ সহকারী শিক্ষক হিসেবে মোহাম্মদ আব্দুর রউফ মন্ডলকে নিয়োগ প্রদান করেন। পরবর্তিতে উক্ত শিক্ষক ১ মে ১৯৯৬ সনে এমপিও ভুক্ত হন। যার ইনডেক্স নং—জ—৩৮৯৯১২। কিন্তু ওই শিক্ষককে নিযোগ প্রদান কালিন সময়ে বিধি অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতা সকল বিভাগে ২য় বিভাগসহ স্নাতক পাশ হওয়ার কথা থাকলেও এ ক্ষেত্রে সে বিধি মানা হয়নি। অথচ উক্ত শিক্ষকের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাস্তবে ১৯৮৯ সনের দাখিল পরীক্ষার ফলাফল ২য় বিভাগ, ১৯৯১ সনের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষার ফলাফল ৩য় বিভাগ এবং ১৯৯৩ সনের স্নাতক পাশ পরীক্ষার ফলাফল ৩য় বিভাগ ছিল। এ ছাড়া বিধি অনুয়ায়ী নিয়োগ প্রদানকালিন সময়ে বিএড পাশের যোগ্যতা থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে তিনি নিয়োগ প্রাপ্তির পর ২০০০ সনে বিএড পাশ করেন।

এদিকে বিগত ২৯ জুন ২০১১ সনে মোহাম্মদ আব্দুর রউফ মন্ডল উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানে ইস্তেফা পত্র প্রদান করেন এবং পরবর্তিতে একই শিক্ষাগত যোগ্যতায় ৩০ জুন ২০১১ইং উপজেলার ধর্মদাসপুর আমিনিয়া দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগ প্রাপ্ত হন। ২০১২ সনের ফেব্রয়ারীতে পুর্বের ইনডেক্সেই সহকারী শিক্ষক হিসেবে এমপিও ভুক্ত হন। সার্বিক এ পরিস্থিতিতে উক্ত শিক্ষক ২০১২ সনে ধর্মদাসপুর আমিনিয়া দাখিল মাদ্রাসায় এমপিও ভুক্ত হওয়ার পুর্ব পর্যন্ত খেজমতপুর এমাজিয়া দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে বহাল না থেকেও নিয়মিত উপস্থিতি স্বাক্ষর দেখিয়ে নিয়ম বহির্ভুত ভাবে বেতন ভাতাদি উত্তোলন করেছেন। উল্লেখিত অনিয়ম ছাড়াও উক্ত শিক্ষক ধর্মদাসপুর মাদ্রাসায় চাকুরি করাকালিন সময়ে নিয়ম বহিভুর্ত নানা কর্মকান্ড অব্যহত রেখেছেন।

এ ব্যাপারে ওই মাদ্রাসার অভিভাবক সদস্য মোনাজ্জল হোসেন জানান, শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুর রউফ মন্ডল আমার নাম ভাঙ্গিয়ে ও স্বাক্ষর জাল জালিয়াতি মাধ্যমে গত ২৪ সেপ্টেম্বর’ ২০২৪ তারিখে ওই মাদ্রাসার নন এমপিও ভুক্ত এবতেদায়ী শাখার প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে শিক্ষা উপদেষ্টা, মহাসচিব— মাদ্রাসা অধিদপ্তর ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন— যা আমার অজানা। এছাড়াও শিক্ষক মোহাম্মাদ আব্দুর রউফ মন্ডল নামের ওই শিক্ষক গাইবান্ধা জেলার সাদ্যুল্লাপুর উপজেলার মধ্যপাড়া দাখিল মাদ্রাসার সুপারের স্বাক্ষর জাল জালিয়াতি করে ওই মাদ্রাসার রুহুল আমীন নামের ওই শিক্ষকের ইস্তফা পত্র ও ছাড়পত্র নিজ হাতে লিখে তাহার ইনডেক্স নম্বর ব্যবহার করে অন্য এক প্রতিষ্ঠানের রুহুল আমিন নামের একজনের এমপিও ভুক্ত করেন— তা পরবতীর্তে ধরা পড়ে। ওই শিক্ষকই উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ নানা শিক্ষা দপ্তরে ৩ বছর পুর্বের ওই মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর কম্পিউটারের মাধ্যামে স্ক্যান করে অভিযোগ দায়ের করেন ওই শিক্ষক। তার অভিযোগে জনৈক মমদেল নামের এক ব্যক্তির স্বাক্ষর দেখানো হয়েছে। অথচ সে ব্যক্তি গত ৩ বছর পুর্বেই মারা গেছেন । অভিভাবক ও এলাকাবাসী জানায়, উক্ত শিক্ষক প্রভাবশালী হওয়ার কারণে মাদ্রাসায় নানা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। এতে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে। কতৃর্পক্ষ তার বিরুদ্ধেও কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহন করতে পাছেন না। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুর রউফ মন্ডলের সঙ্গে কথা হলে বলেন, এক শ্রেণির মানুষ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রবাগান্ডা ছড়াচ্ছে।