Dhaka 9:44 am, Thursday, 4 December 2025

সরকার পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিলেও নগরে তা মানার গরজ নেই

Reporter Name
  • Update Time : 01:15:13 pm, Saturday, 2 November 2024
  • / 236 Time View
১২

মাসুদ পারভেজ, বিভাগীয় ব্যুরো চট্টগ্রামঃ দেশে শুক্রবার (১ নভেম্বর) থেকে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারে সরকার নিষেধাজ্ঞা দিলেও নগরে তা মানার গরজ নেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের। তারা বলছেন, পলিথিনের বিকল্প সামগ্রী সহজলভ্য না হওয়ায় হঠাৎ করেই নিয়ম মানা যাচ্ছে না।

২০২১ সালের ১৬ জুন নগরে পলিথিনবিরোধী ক্যাম্পেইন চালু করার নির্দেশ দেয় সরকার। সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র অবৈধ পলিথিন কারখানার তালিকা করার উদ্যোগ নিলেও তা কার্যকর হয়নি।

সর্বশেষ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পূর্ব ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুক্রবার থেকে বাজারে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। দেখা গেছে, নগরের বিভিন্ন বাজার ও শপিং মলগুলোতে এখনও ব্যবহার করা হচ্ছে পলিথিন ব্যাগ।

ব্যবহারকারীরা জানান, এর পরিবর্তে পাট, কাপড়ের ব্যাগ বা পরিবেশবান্ধব ব্যাগ ব্যবহার করা যায়। কিন্তু এগুলো সবসময় সঙ্গে রাখা যায় না কিংবা কেনার অভ্যাস এখনও ব্যাপকভাবে গড়ে উঠেনি।পাটের না হলেও বিকল্প এক ধরনের ব্যাগ দেশে উৎপাদন হচ্ছে। তবে তার দাম সাধারণ পলিথিনের তুলনায় কিছুটা বেশি আর সেগুলোর প্রায় সবই রপ্তানি হচ্ছে পশ্চিমা দেশে।

জানা গেছে, নগরের জেল রোড, রিয়াজউদ্দিন বাজার, আছাদগঞ্জ, চাকতাই ও বাকলিয়া এলাকায় রয়েছে ১০টি কারখানা ও ২০টির বেশি মজুতকারী প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে কয়েকবার জেলা প্রশাসনের অভিযান চললেও বন্ধ করা যায়নি পলিথিন উৎপাদন ও বিক্রি।

শহুরে এলাকার বর্জ্যপদার্থের একটা বিরাট অংশ হচ্ছে পলিথিন বা প্লাস্টিক। উপাদানগত দিক থেকে এই পলিব্যাগগুলো মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী, পরিবেশ ও আবহাওয়ার জন্য ক্ষতিকর। পরিত্যক্ত প্লাস্টিক মাইক্রোপ্লাস্টিকে পরিণত হয়ে বাতাস, পানি ও খাবারের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে। এই অনুপ্রবেশের ফলে দীর্ঘমেয়াদে ফুসফুস ও কিডনিজনিত রোগ সৃষ্টি হয় বলে জানান জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

‘প্লাস্টিকের ব্যাগ তৈরির উপকরণগুলোর মধ্যে বিসফেনল এ (বিপিএ) ও ফ্যালেটসের মতো রাসায়নিক পদার্থ থাকে। এগুলো হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, শ্বাসকষ্ট, প্রজনন সমস্যা ও ক্যানসারের মতো ঝুঁকিপূর্ণ স্বাস্থ্য জটিলতার সৃষ্টি করে। এই ব্যাগগুলো যখন পোড়ানো হয় তখন ডাইঅক্সিন ও ফুরানের মতো অত্যন্ত বিষাক্ত ধোঁয়া নির্গত হয়। এগুলো বায়ুদূষণের মধ্য দিয়ে শ্বাসযন্ত্রকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে’।

চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মনির হোসেন জানান, বাজারে পলিথিন বন্ধে সচেতনতা তৈরি করতে প্রচারণা, লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। রোববার (৩ নভেম্বর) থেকে পলিথিন বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত নগরে অভিযান চালাবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

সরকার পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিলেও নগরে তা মানার গরজ নেই

Update Time : 01:15:13 pm, Saturday, 2 November 2024
১২

মাসুদ পারভেজ, বিভাগীয় ব্যুরো চট্টগ্রামঃ দেশে শুক্রবার (১ নভেম্বর) থেকে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারে সরকার নিষেধাজ্ঞা দিলেও নগরে তা মানার গরজ নেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের। তারা বলছেন, পলিথিনের বিকল্প সামগ্রী সহজলভ্য না হওয়ায় হঠাৎ করেই নিয়ম মানা যাচ্ছে না।

২০২১ সালের ১৬ জুন নগরে পলিথিনবিরোধী ক্যাম্পেইন চালু করার নির্দেশ দেয় সরকার। সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র অবৈধ পলিথিন কারখানার তালিকা করার উদ্যোগ নিলেও তা কার্যকর হয়নি।

সর্বশেষ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পূর্ব ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুক্রবার থেকে বাজারে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। দেখা গেছে, নগরের বিভিন্ন বাজার ও শপিং মলগুলোতে এখনও ব্যবহার করা হচ্ছে পলিথিন ব্যাগ।

ব্যবহারকারীরা জানান, এর পরিবর্তে পাট, কাপড়ের ব্যাগ বা পরিবেশবান্ধব ব্যাগ ব্যবহার করা যায়। কিন্তু এগুলো সবসময় সঙ্গে রাখা যায় না কিংবা কেনার অভ্যাস এখনও ব্যাপকভাবে গড়ে উঠেনি।পাটের না হলেও বিকল্প এক ধরনের ব্যাগ দেশে উৎপাদন হচ্ছে। তবে তার দাম সাধারণ পলিথিনের তুলনায় কিছুটা বেশি আর সেগুলোর প্রায় সবই রপ্তানি হচ্ছে পশ্চিমা দেশে।

জানা গেছে, নগরের জেল রোড, রিয়াজউদ্দিন বাজার, আছাদগঞ্জ, চাকতাই ও বাকলিয়া এলাকায় রয়েছে ১০টি কারখানা ও ২০টির বেশি মজুতকারী প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে কয়েকবার জেলা প্রশাসনের অভিযান চললেও বন্ধ করা যায়নি পলিথিন উৎপাদন ও বিক্রি।

শহুরে এলাকার বর্জ্যপদার্থের একটা বিরাট অংশ হচ্ছে পলিথিন বা প্লাস্টিক। উপাদানগত দিক থেকে এই পলিব্যাগগুলো মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী, পরিবেশ ও আবহাওয়ার জন্য ক্ষতিকর। পরিত্যক্ত প্লাস্টিক মাইক্রোপ্লাস্টিকে পরিণত হয়ে বাতাস, পানি ও খাবারের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে। এই অনুপ্রবেশের ফলে দীর্ঘমেয়াদে ফুসফুস ও কিডনিজনিত রোগ সৃষ্টি হয় বলে জানান জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

‘প্লাস্টিকের ব্যাগ তৈরির উপকরণগুলোর মধ্যে বিসফেনল এ (বিপিএ) ও ফ্যালেটসের মতো রাসায়নিক পদার্থ থাকে। এগুলো হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, শ্বাসকষ্ট, প্রজনন সমস্যা ও ক্যানসারের মতো ঝুঁকিপূর্ণ স্বাস্থ্য জটিলতার সৃষ্টি করে। এই ব্যাগগুলো যখন পোড়ানো হয় তখন ডাইঅক্সিন ও ফুরানের মতো অত্যন্ত বিষাক্ত ধোঁয়া নির্গত হয়। এগুলো বায়ুদূষণের মধ্য দিয়ে শ্বাসযন্ত্রকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে’।

চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মনির হোসেন জানান, বাজারে পলিথিন বন্ধে সচেতনতা তৈরি করতে প্রচারণা, লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। রোববার (৩ নভেম্বর) থেকে পলিথিন বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত নগরে অভিযান চালাবে।