Dhaka 9:54 am, Sunday, 28 December 2025

বাদুড়ের শরীরে মিলল নতুন ভাইরাস, ঝুঁকি এখনও অজানা

Reporter Name
  • Update Time : 08:49:15 am, Wednesday, 19 March 2025
  • / 127 Time View
৪৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ব্রাজিলে বাদুড়ের মধ্যে গবেষকরা একটি নতুন ভাইরাস শনাক্ত করেছেন। এর ফলে মানুষের মধ্যে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ।

গবেষণায় দেখা গেছে, মধ্যপ্রাচ্যের শ্বাসযন্ত্রজনিত সিনড্রোম ‘মার্স-কোভ’ এর সঙ্গে নতুন ভাইরাসটির অনেক মিল রয়েছে। তবে মানুষের মধ্যে এটির সংক্রমণের ক্ষমতা এখনও অজানা।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্নাল অব মেডিকেল ভাইরোলজিতে প্রকাশিত এই গবেষণাটি হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় সাও পাওলো এবং সিয়ারার বিজ্ঞানীরা পরিচালনা করেছেন। গবেষকরা দেখেছেন, ভাইরাসের জিনগত ক্রমের সাথে মার্স-কভের ৭২ শতাংশ মিল রয়েছে।

বিশেষ করে ভাইরাসটির স্পাইক প্রোটিন মার্স ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের সঙ্গে অনেকটাই মিলে যায়। ২০১২ সালে সৌদি আরবে প্রথম শনাক্ত হওয়া মার্স ভাইরাসের সংক্রমণে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৮৫০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন।

জার্নাল অব মেডিকেল ভাইরোলজি-তে প্রকাশিতেএই গবেষণার লেখক ব্রুনা স্টেফানি সিলভারিও বলেন, “এটি মানুষকে কতটা সংক্রামিত করতে পারে তা এখনই আমরা নিশ্চিত নই। তবে আমরা ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের কিছু অংশ শনাক্ত করেছি, যা মার্স-কোভের ব্যবহৃত রিসেপ্টরের সঙ্গে সম্ভাব্য মিথস্ক্রিয়ার ইঙ্গিত দেয়। আরও গবেষণা চালানো হচ্ছে। আমরা চলতি বছরে হংকংয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর পরিকল্পনা করছি।”

এই ভাইরাসটি মানুষের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য চলতি বছর হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের হাই বায়োসিকিউরিটি নিয়ে পরীক্ষাগারে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। এই পরীক্ষাগুলোই নির্ধারণ করবে যে— ভাইরাসটি মানবকোষের সঙ্গে কতটা আবদ্ধ হতে পারে এবং সম্ভাব্যভাবে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে কিনা। এর ফলে নতুন ভাইরাসটি মানুষের ওপর কতটা ঝুঁকি তৈরি করে তা নির্ধারণ করা সম্ভব হবে।

মূলত ভাইরাস নিয়ে গবেষণার জন্য বাদুড় বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাদুড় প্রাকৃতিকভাবেই ভাইরাস বাহক এবং সার্স, মার্স এবং ইবোলা-সহ বেশ কয়েকটি বড় রোগের প্রাদুর্ভাবের সঙ্গেও যুক্ত। তবে বেশিরভাগ বাদুড়ের ভাইরাস মানুষের মধ্যে সংক্রমণ কম হয়ে থাকে।

গবেষণার সিনিয়র গবেষক রিকার্ডো ডুরেইস-কারভালহো বলেন, “বাদুড় হলো গবেষণার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভাইরাল জলাধার। যে কারণে আমাদের ক্রমাগত নজরদারি প্রয়োজন। সব পর্যবেক্ষণ করে আমাদের বুঝতে হবে ভাইরাসগুলো সঞ্চালিত হয়ে অন্যান্য প্রাণী এমনকি মানুষের জন্যও কোনও ধরনের ঝুঁকি তৈরি করে কিনা।”

সংবাদমাধ্যম বলছে, গবেষণায় ১৬টি ভিন্ন প্রজাতির বাদুড়ের ৪২৩টির মুখে এবং মলদ্বার সোয়াব পরীক্ষা করা হয়েছে ৷ এরমধ্যে উত্তর-পূর্ব ব্রাজিলের ফোর্টালেজা শহরে সংগৃহীত বাদুড়ের সোয়াবের পাঁচটিতে সাতটি করোনাভাইরাস শনাক্ত করা গেছে।

গবেষকরা দেখেছেন, নতুন ভাইরাসের সঙ্গে মানুষ এবং উটের মধ্যে পাওয়া মার্স-সম্পর্কিত করোনাভাইরাস প্রজাতির সঙ্গে মিল রয়েছে। পাঁচটি বাদুড়ের মধ্যে দুটি ভিন্ন প্রজাতির ছিল: মোলোসাস, একটি কীটপতঙ্গভোজী এবং আর্টিবিয়াস লিটুরাটাস, একটি ফ্রুগিভোজী।

বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, ব্রাজিলে পাওয়া নতুন ভাইরাসটির জেনেটিক সিকোয়েন্স প্রায় ৭২ শতাংশ মিল রয়েছে মার্স-কোভের জিনোমের সঙ্গে।

সূত্র: দ্য ইনডিপেনডেন্ট

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

বাদুড়ের শরীরে মিলল নতুন ভাইরাস, ঝুঁকি এখনও অজানা

Update Time : 08:49:15 am, Wednesday, 19 March 2025
৪৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ব্রাজিলে বাদুড়ের মধ্যে গবেষকরা একটি নতুন ভাইরাস শনাক্ত করেছেন। এর ফলে মানুষের মধ্যে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ।

গবেষণায় দেখা গেছে, মধ্যপ্রাচ্যের শ্বাসযন্ত্রজনিত সিনড্রোম ‘মার্স-কোভ’ এর সঙ্গে নতুন ভাইরাসটির অনেক মিল রয়েছে। তবে মানুষের মধ্যে এটির সংক্রমণের ক্ষমতা এখনও অজানা।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্নাল অব মেডিকেল ভাইরোলজিতে প্রকাশিত এই গবেষণাটি হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় সাও পাওলো এবং সিয়ারার বিজ্ঞানীরা পরিচালনা করেছেন। গবেষকরা দেখেছেন, ভাইরাসের জিনগত ক্রমের সাথে মার্স-কভের ৭২ শতাংশ মিল রয়েছে।

বিশেষ করে ভাইরাসটির স্পাইক প্রোটিন মার্স ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের সঙ্গে অনেকটাই মিলে যায়। ২০১২ সালে সৌদি আরবে প্রথম শনাক্ত হওয়া মার্স ভাইরাসের সংক্রমণে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৮৫০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন।

জার্নাল অব মেডিকেল ভাইরোলজি-তে প্রকাশিতেএই গবেষণার লেখক ব্রুনা স্টেফানি সিলভারিও বলেন, “এটি মানুষকে কতটা সংক্রামিত করতে পারে তা এখনই আমরা নিশ্চিত নই। তবে আমরা ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের কিছু অংশ শনাক্ত করেছি, যা মার্স-কোভের ব্যবহৃত রিসেপ্টরের সঙ্গে সম্ভাব্য মিথস্ক্রিয়ার ইঙ্গিত দেয়। আরও গবেষণা চালানো হচ্ছে। আমরা চলতি বছরে হংকংয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর পরিকল্পনা করছি।”

এই ভাইরাসটি মানুষের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য চলতি বছর হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের হাই বায়োসিকিউরিটি নিয়ে পরীক্ষাগারে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। এই পরীক্ষাগুলোই নির্ধারণ করবে যে— ভাইরাসটি মানবকোষের সঙ্গে কতটা আবদ্ধ হতে পারে এবং সম্ভাব্যভাবে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে কিনা। এর ফলে নতুন ভাইরাসটি মানুষের ওপর কতটা ঝুঁকি তৈরি করে তা নির্ধারণ করা সম্ভব হবে।

মূলত ভাইরাস নিয়ে গবেষণার জন্য বাদুড় বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাদুড় প্রাকৃতিকভাবেই ভাইরাস বাহক এবং সার্স, মার্স এবং ইবোলা-সহ বেশ কয়েকটি বড় রোগের প্রাদুর্ভাবের সঙ্গেও যুক্ত। তবে বেশিরভাগ বাদুড়ের ভাইরাস মানুষের মধ্যে সংক্রমণ কম হয়ে থাকে।

গবেষণার সিনিয়র গবেষক রিকার্ডো ডুরেইস-কারভালহো বলেন, “বাদুড় হলো গবেষণার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভাইরাল জলাধার। যে কারণে আমাদের ক্রমাগত নজরদারি প্রয়োজন। সব পর্যবেক্ষণ করে আমাদের বুঝতে হবে ভাইরাসগুলো সঞ্চালিত হয়ে অন্যান্য প্রাণী এমনকি মানুষের জন্যও কোনও ধরনের ঝুঁকি তৈরি করে কিনা।”

সংবাদমাধ্যম বলছে, গবেষণায় ১৬টি ভিন্ন প্রজাতির বাদুড়ের ৪২৩টির মুখে এবং মলদ্বার সোয়াব পরীক্ষা করা হয়েছে ৷ এরমধ্যে উত্তর-পূর্ব ব্রাজিলের ফোর্টালেজা শহরে সংগৃহীত বাদুড়ের সোয়াবের পাঁচটিতে সাতটি করোনাভাইরাস শনাক্ত করা গেছে।

গবেষকরা দেখেছেন, নতুন ভাইরাসের সঙ্গে মানুষ এবং উটের মধ্যে পাওয়া মার্স-সম্পর্কিত করোনাভাইরাস প্রজাতির সঙ্গে মিল রয়েছে। পাঁচটি বাদুড়ের মধ্যে দুটি ভিন্ন প্রজাতির ছিল: মোলোসাস, একটি কীটপতঙ্গভোজী এবং আর্টিবিয়াস লিটুরাটাস, একটি ফ্রুগিভোজী।

বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, ব্রাজিলে পাওয়া নতুন ভাইরাসটির জেনেটিক সিকোয়েন্স প্রায় ৭২ শতাংশ মিল রয়েছে মার্স-কোভের জিনোমের সঙ্গে।

সূত্র: দ্য ইনডিপেনডেন্ট