Dhaka 1:25 am, Monday, 24 November 2025

মোবাইল কোর্ট ভাংচুরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান

  • Reporter Name
  • Update Time : 10:13:20 am, Wednesday, 12 March 2025
  • 111 Time View

সাহাব উদ্দীন,বিশেষ প্রতিনিধিঃ ইট ভাটায় মোবাইল কোর্ট ভাংচুরের প্রতিবাদে ইট প্রস্তুতকারক মালিক সমিতি ও শ্রমিকদের বিক্ষোভ সমাবেশ এবং জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান।

গতকাল (১১ মার্চ) সকাল দশটায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এই প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রধান করেন তারা।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, আমরা বাংলাদেশের ইটভাটা মালিকগন বিগত ৩৫/৪০ বছর যাবৎ অনেক প্রতিকুলতার মধ্যে দিয়ে ইটভাটার ব্যবসা পরিচালনা করিয়া আসছি। দেশের রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ী সহ সকল অবকাঠামাে নির্মানে ব্যবহৃত ইট সরবরাহ করে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছি। দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সমতা রেখে আমরা ইটভাটার মালিকগণ বায়ু দূষণ রোধে সরকার নির্দেশিত আধুনিক প্রযুক্তির জিগজাগ ভাটা স্থাপন করি যা জ্বালানী সাশ্রয়ী, পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি ও উপমহাদেশে টেকসই এবং সহজ প্রযুক্তি হিসাবে পরিচিত।

বর্তমানে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে এখন দেশের ইটভাটা সমূহ মাত্র ৫-১০% বায়ু দূষণ করছে, জৈব বস্তু পোড়ানোতে ৪০% এবং যানবাহনের কালাো ধোয়া ৫০% (দৈনিক প্রথম আলাে পত্রিকা ০৬-০৩-২০২১ ইং তারিখে প্রকাশিত রিপোর্টে- ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের রসায়ন বিভাগের জরিপ)। পূর্বে ইটভাটার দূষণমাত্রা ছিল ৫৮ % । বিদ্যমান জিগজাগ ভাটায় আরও অধিকতর উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিবেশ দূষণ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

এই শিল্পে প্রায় ৫০ লক্ষ শ্রমিক কর্মরত আছে এবং ৫০ লক্ষ পরিবার তথা ২ কোটি মানুষের রুটি রোজীর ব্যবস্থা আমরাই করেছি, ইটভাটা বন্ধ হয়ে গেলে এই লােকগুলো বেকার হয়ে পড়বে। এছাড়াও প্রায় প্রতিটি ইভাটার বিপরীতে ১ কোটি টাকার উপরে ব্যাংক লোন যা প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। এই ভাটা সমূহ বন্ধ হয়ে গেলে সমঃদয় ব্যাংক লোন অনাদায়ী থেকে যাবে। ইটভাটার মালিকগণ বছরে হাজার হাজার কোটি টাকার অধিক রাজস্ব দিয়ে থাকেন।মাননীয় উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান অত্যান্ত আন্তরিক হলেও বর্তমান আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারনে জিগজাগ ইটভাটার সমস্যা সমাধান হচ্ছে না।

আমরা আশা করছি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা এবং মাননীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার মাধ্যমেই ইটভাটা পরিচালনার একটি যৌক্তিক সমাধান হবে। সবার আগে ড্রাম চিমনী, ফিক্সড চিমনী ও লাকড়ী দিয়ে পোড়ানাে ইটভাটা সম্পূর্ন বন্ধ করা সিদ্ধান্তে মাননীয় উপদেষ্টার সাথে আমরা একমত পােষন করেছি কিন্ত সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ তা না করে তার বিপরীতমূখী অবস্থান নিয়ে বৈধ পদ্ধতির জিগজাগ ইটভাটায় জরিমানা ও ভাংচুর করছেন।আমরা কোন অবস্থাতেই এই সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ঠেলে দিতে চাই না কিন্তু বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের মদদপুষ্ট বসুন্ধরা, কনকর্ড সহ আধিপত্যবাদী প্রতিষ্ঠান সমূহ ইট শিল্পকে ধংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এবং বর্তমান সরকারের মুখােমুখি আমাদেরকে দাঁড় করানাের চেষ্টা করছে।

বিক্ষোভ সমাবেশে ইট প্রস্তুতকারক মালিক সমিতির পক্ষে মালিকরা বলেন, আইন অনুযায়ী প্রাইমারি স্কুলের ১০০০ মিটার দূরত্বে ইটভাটা থাকতে হবে। কিন্তু আমার ইটভাটা তো আগে হয়েছে প্রাইমারি স্কুল পড়ে তাহলে এখানে আমার দোষ কোথায় ? আমাদের কথা আমরা সরকারের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলতে চাই সরকারের নির্ধারিত ভ্যাট ট্যাক্স আমরা যথাসময়ে পরিশোধ করি। কিন্তু আমাদের ব্যবসা করার পরিবেশ সৃষ্টি করতে করে দিতে হবে। বার বার আমলাতান্ত্রিকের জটিলতা, বর্তমান যে উপদেষ্টা উনি আমাদের প্রতি সদয় উনি চায় না এই ব্যবসাটি হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাক। এই ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে দেশে একটি অরাজকতা সৃষ্টি হবে।

এ সময় অন্যান্য ইট ভাটার মালিকরা পরিবেশ অধিদপ্তরকে চ্যালেঞ্জ করে বলেন, বর্তমানে মেশিন দিয়ে বায়ু দূষণ মাপ হোক তাহলে দেখবে বায়ু দূষণের মাত্র অনেক কমে গেছে। আপনারা যদি বায়ু দূষণের মাত্রা ৫ থেকে ১০% এর উপরে পান তাহলে আমরা নিজেরাই ইটভাটা বন্ধ করে দিব। কারণ এখন আমরা সরকারের নিয়ম অনুযায়ী জিগজ্যাক করে ইটখোলা পরিচালনা করছি। এরপরও যদি এখন কোন ইটভাটা বন্ধ করে দেন তাহলে ওই ইটভাটার ক্ষতিপূরণ দিয়ে বন্ধ করতে হবে। আর তা না হলে আমরা ইট ভাটার মালিক সমিতি ও শ্রমিকরা মিলে কঠোর আন্দোলন ঘোষণা করতে বাধ্য হব।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Murad Ahmed

জনপ্রিয় পোস্ট

হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া

মোবাইল কোর্ট ভাংচুরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান

Update Time : 10:13:20 am, Wednesday, 12 March 2025

সাহাব উদ্দীন,বিশেষ প্রতিনিধিঃ ইট ভাটায় মোবাইল কোর্ট ভাংচুরের প্রতিবাদে ইট প্রস্তুতকারক মালিক সমিতি ও শ্রমিকদের বিক্ষোভ সমাবেশ এবং জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান।

গতকাল (১১ মার্চ) সকাল দশটায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এই প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রধান করেন তারা।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, আমরা বাংলাদেশের ইটভাটা মালিকগন বিগত ৩৫/৪০ বছর যাবৎ অনেক প্রতিকুলতার মধ্যে দিয়ে ইটভাটার ব্যবসা পরিচালনা করিয়া আসছি। দেশের রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ী সহ সকল অবকাঠামাে নির্মানে ব্যবহৃত ইট সরবরাহ করে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছি। দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সমতা রেখে আমরা ইটভাটার মালিকগণ বায়ু দূষণ রোধে সরকার নির্দেশিত আধুনিক প্রযুক্তির জিগজাগ ভাটা স্থাপন করি যা জ্বালানী সাশ্রয়ী, পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি ও উপমহাদেশে টেকসই এবং সহজ প্রযুক্তি হিসাবে পরিচিত।

বর্তমানে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে এখন দেশের ইটভাটা সমূহ মাত্র ৫-১০% বায়ু দূষণ করছে, জৈব বস্তু পোড়ানোতে ৪০% এবং যানবাহনের কালাো ধোয়া ৫০% (দৈনিক প্রথম আলাে পত্রিকা ০৬-০৩-২০২১ ইং তারিখে প্রকাশিত রিপোর্টে- ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের রসায়ন বিভাগের জরিপ)। পূর্বে ইটভাটার দূষণমাত্রা ছিল ৫৮ % । বিদ্যমান জিগজাগ ভাটায় আরও অধিকতর উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিবেশ দূষণ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

এই শিল্পে প্রায় ৫০ লক্ষ শ্রমিক কর্মরত আছে এবং ৫০ লক্ষ পরিবার তথা ২ কোটি মানুষের রুটি রোজীর ব্যবস্থা আমরাই করেছি, ইটভাটা বন্ধ হয়ে গেলে এই লােকগুলো বেকার হয়ে পড়বে। এছাড়াও প্রায় প্রতিটি ইভাটার বিপরীতে ১ কোটি টাকার উপরে ব্যাংক লোন যা প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। এই ভাটা সমূহ বন্ধ হয়ে গেলে সমঃদয় ব্যাংক লোন অনাদায়ী থেকে যাবে। ইটভাটার মালিকগণ বছরে হাজার হাজার কোটি টাকার অধিক রাজস্ব দিয়ে থাকেন।মাননীয় উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান অত্যান্ত আন্তরিক হলেও বর্তমান আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারনে জিগজাগ ইটভাটার সমস্যা সমাধান হচ্ছে না।

আমরা আশা করছি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা এবং মাননীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার মাধ্যমেই ইটভাটা পরিচালনার একটি যৌক্তিক সমাধান হবে। সবার আগে ড্রাম চিমনী, ফিক্সড চিমনী ও লাকড়ী দিয়ে পোড়ানাে ইটভাটা সম্পূর্ন বন্ধ করা সিদ্ধান্তে মাননীয় উপদেষ্টার সাথে আমরা একমত পােষন করেছি কিন্ত সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ তা না করে তার বিপরীতমূখী অবস্থান নিয়ে বৈধ পদ্ধতির জিগজাগ ইটভাটায় জরিমানা ও ভাংচুর করছেন।আমরা কোন অবস্থাতেই এই সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ঠেলে দিতে চাই না কিন্তু বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের মদদপুষ্ট বসুন্ধরা, কনকর্ড সহ আধিপত্যবাদী প্রতিষ্ঠান সমূহ ইট শিল্পকে ধংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এবং বর্তমান সরকারের মুখােমুখি আমাদেরকে দাঁড় করানাের চেষ্টা করছে।

বিক্ষোভ সমাবেশে ইট প্রস্তুতকারক মালিক সমিতির পক্ষে মালিকরা বলেন, আইন অনুযায়ী প্রাইমারি স্কুলের ১০০০ মিটার দূরত্বে ইটভাটা থাকতে হবে। কিন্তু আমার ইটভাটা তো আগে হয়েছে প্রাইমারি স্কুল পড়ে তাহলে এখানে আমার দোষ কোথায় ? আমাদের কথা আমরা সরকারের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলতে চাই সরকারের নির্ধারিত ভ্যাট ট্যাক্স আমরা যথাসময়ে পরিশোধ করি। কিন্তু আমাদের ব্যবসা করার পরিবেশ সৃষ্টি করতে করে দিতে হবে। বার বার আমলাতান্ত্রিকের জটিলতা, বর্তমান যে উপদেষ্টা উনি আমাদের প্রতি সদয় উনি চায় না এই ব্যবসাটি হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাক। এই ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে দেশে একটি অরাজকতা সৃষ্টি হবে।

এ সময় অন্যান্য ইট ভাটার মালিকরা পরিবেশ অধিদপ্তরকে চ্যালেঞ্জ করে বলেন, বর্তমানে মেশিন দিয়ে বায়ু দূষণ মাপ হোক তাহলে দেখবে বায়ু দূষণের মাত্র অনেক কমে গেছে। আপনারা যদি বায়ু দূষণের মাত্রা ৫ থেকে ১০% এর উপরে পান তাহলে আমরা নিজেরাই ইটভাটা বন্ধ করে দিব। কারণ এখন আমরা সরকারের নিয়ম অনুযায়ী জিগজ্যাক করে ইটখোলা পরিচালনা করছি। এরপরও যদি এখন কোন ইটভাটা বন্ধ করে দেন তাহলে ওই ইটভাটার ক্ষতিপূরণ দিয়ে বন্ধ করতে হবে। আর তা না হলে আমরা ইট ভাটার মালিক সমিতি ও শ্রমিকরা মিলে কঠোর আন্দোলন ঘোষণা করতে বাধ্য হব।