Dhaka 12:59 am, Thursday, 11 December 2025

অষ্ট্রেলিয়ায় কিশোরদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • Update Time : 11:13:45 pm, Wednesday, 10 December 2025
  • / 20 Time View
৩০

অস্ট্রেলিয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বুধবার বিশ্বব্যাপী প্রথম বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা চালু করেছে। ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম ও এক্সসহ জনপ্রিয় বহু অ্যাপ ও ওয়েবসাইটকে ১৬ বছরের কম বয়সী অস্ট্রেলিয়ান ব্যবহারকারীদের সরিয়ে না ফেললে ৩ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার পর্যন্ত জরিমানার মুখে পড়তে হবে।

দেশটি জানায়, প্রযুক্তি জায়ান্টদের কাছ থেকে ‘নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার’ এখনই সময়। সিডনি থেকে বার্তাসংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

টেক জায়ান্টদের বিরুদ্ধেও এভাবে কঠোর অবস্থান নেওয়া বিশ্বের প্রথম দিকের দেশগুলোর একটি হল অস্ট্রেলিয়া—যা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে আরো অনেক দেশ।

‘যথেষ্ট হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ।

তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনগুলোর একটি। আমরা নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নেব।’

সরকার জানায়, শিশুদের ফোন স্ক্রিনে বুলিং, যৌনতা আর সহিংসতার ভিডিও-এর দিকে ঠেলে দেওয়া ‘শিকারী অ্যালগরিদম” থেকে রক্ষায় নজিরবিহীন পদক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়েছে।

আইনটি অস্ট্রেলিয়া জুড়ে রাত ১২টার পর থেকেই কার্যকর হয়েছে।

এর ফলে লাখো কিশোর-তরুণ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেছে তারা আর আগের মতো অ্যাপগুলো ব্যবহার করতে পারছে না।

মাত্র ১০ বছর বয়সী বিআঙ্কা নাভারো এখন থেকে কত বছর পর ইউটিউবে ফিরতে পারবে, সেকথাই ভাবছে।

সে এএফপিকে বলেছে, ‘অনেক খারাপ লাগবে, কারণ আমাকে ছয় বছর অপেক্ষা করতে হবে,’ ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব, টিকটক, স্ন্যাপচ্যাট ও রেডিটকে অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট তৈরি করা বা ধরে রাখার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম কিক ও টুইচও সরকারের কালো তালিকায়। একই তালিকায় রয়েছে থ্রেডস ও এক্স।

ফোনে বুঁদ হয়ে থাকা সন্তানদের দেখে ক্লান্ত অভিভাবকদের কাছে এ নিষেধাজ্ঞা যেন আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।

মিয়া ব্যানিস্টার জানান, অনলাইন বুলিংয়ের কারণে তার কিশোর ছেলে অলির মৃত্যু হয় গত বছর। তিনি বলেন, ওজন কমানোর ভিডিওর অন্তহীন স্রোতও তার সন্তানের খাদ্যাভ্যাসে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছিল।

অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত অনলাইন সময় কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, ফোন ব্যবহারের প্রভাবকে অন্যান্য জীবনযাত্রার কারণ থেকে আলাদা করা কঠিন।

পাঁচ সন্তানের বাবা দানি এলাচি বলেন, এ সীমাবদ্ধতা দীর্ঘ প্রতীক্ষিত লাগাম টানার সময় এখনই।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

অষ্ট্রেলিয়ায় কিশোরদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

Update Time : 11:13:45 pm, Wednesday, 10 December 2025
৩০

অস্ট্রেলিয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বুধবার বিশ্বব্যাপী প্রথম বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা চালু করেছে। ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম ও এক্সসহ জনপ্রিয় বহু অ্যাপ ও ওয়েবসাইটকে ১৬ বছরের কম বয়সী অস্ট্রেলিয়ান ব্যবহারকারীদের সরিয়ে না ফেললে ৩ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার পর্যন্ত জরিমানার মুখে পড়তে হবে।

দেশটি জানায়, প্রযুক্তি জায়ান্টদের কাছ থেকে ‘নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার’ এখনই সময়। সিডনি থেকে বার্তাসংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

টেক জায়ান্টদের বিরুদ্ধেও এভাবে কঠোর অবস্থান নেওয়া বিশ্বের প্রথম দিকের দেশগুলোর একটি হল অস্ট্রেলিয়া—যা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে আরো অনেক দেশ।

‘যথেষ্ট হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ।

তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনগুলোর একটি। আমরা নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নেব।’

সরকার জানায়, শিশুদের ফোন স্ক্রিনে বুলিং, যৌনতা আর সহিংসতার ভিডিও-এর দিকে ঠেলে দেওয়া ‘শিকারী অ্যালগরিদম” থেকে রক্ষায় নজিরবিহীন পদক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়েছে।

আইনটি অস্ট্রেলিয়া জুড়ে রাত ১২টার পর থেকেই কার্যকর হয়েছে।

এর ফলে লাখো কিশোর-তরুণ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেছে তারা আর আগের মতো অ্যাপগুলো ব্যবহার করতে পারছে না।

মাত্র ১০ বছর বয়সী বিআঙ্কা নাভারো এখন থেকে কত বছর পর ইউটিউবে ফিরতে পারবে, সেকথাই ভাবছে।

সে এএফপিকে বলেছে, ‘অনেক খারাপ লাগবে, কারণ আমাকে ছয় বছর অপেক্ষা করতে হবে,’ ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব, টিকটক, স্ন্যাপচ্যাট ও রেডিটকে অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট তৈরি করা বা ধরে রাখার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম কিক ও টুইচও সরকারের কালো তালিকায়। একই তালিকায় রয়েছে থ্রেডস ও এক্স।

ফোনে বুঁদ হয়ে থাকা সন্তানদের দেখে ক্লান্ত অভিভাবকদের কাছে এ নিষেধাজ্ঞা যেন আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।

মিয়া ব্যানিস্টার জানান, অনলাইন বুলিংয়ের কারণে তার কিশোর ছেলে অলির মৃত্যু হয় গত বছর। তিনি বলেন, ওজন কমানোর ভিডিওর অন্তহীন স্রোতও তার সন্তানের খাদ্যাভ্যাসে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছিল।

অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত অনলাইন সময় কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, ফোন ব্যবহারের প্রভাবকে অন্যান্য জীবনযাত্রার কারণ থেকে আলাদা করা কঠিন।

পাঁচ সন্তানের বাবা দানি এলাচি বলেন, এ সীমাবদ্ধতা দীর্ঘ প্রতীক্ষিত লাগাম টানার সময় এখনই।