Dhaka 1:27 am, Saturday, 6 December 2025

বাংলাদেশের বিনিয়োগ ভবিষ্যৎ নিয়ে শেরাটনে উচ্চপর্যায়ের নীতিগত সংলাপ আয়োজন করল এনসিপি

Reporter Name
  • Update Time : 12:49:10 am, Saturday, 6 December 2025
  • / 19 Time View
২৭

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি) কর্তৃক “বাংলাদেশের বিনিয়োগ ভবিষ্যৎ: বৈদেশিক পুঁজি, জাতীয় সম্পদ ও কৌশলগত সার্বভৌমত্বের ভারসাম্য” শীর্ষক একটি উচ্চপর্যায়ের নীতিগত সংলাপ আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫, বিকাল ৪:০০টায়, এরিয়াল, লেভেল ১৪, শেরাটন ঢাকা, ৪৪ কেমাল আতাতুর্ক এভিনিউ, ঢাকা-এ।

উক্ত আলোচনায় নীতিনির্ধারক, বিনিয়োগকারী, শিল্পখাতের উদ্যোক্তা ও উন্নয়ন অংশীদাররা অংশগ্রহণ করেন। টেকসই বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের পাশাপাশি জাতীয় স্বার্থ ও দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জাবেদ রাসিন, এনসিপির শিল্প ও বাণিজ্য সেলের প্রধান। তিনি নৈতিকতা, স্বচ্ছতা ও জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষার ভিত্তিতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশকে একটি ‘গ্লোবাল বিজনেস হ্যাভেন’ হিসেবে গড়ে তোলার এনসিপির ভিশন উপস্থাপন করেন। তিনি বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনের জন্য স্থিতিশীলতা, জবাবদিহিতা ও আইনভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

মোঃ আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি গত ১৫ বছরের অর্থনৈতিক বয়ান বিশ্লেষণ করে তথ্য বিকৃতি, বিকৃত প্রবৃদ্ধি চিত্র এবং অকার্যকর নীতিগত হস্তক্ষেপ নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তোলেন। তিনি তথ্যভিত্তিক ও বৈজ্ঞানিক অর্থনৈতিক সংস্কারের আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি জানান, বর্তমানে জিডিপির মাত্র ০.৩৪ শতাংশ এফডিআই—যা বিশ্বের অন্যতম নিম্ন হার—সেটিকে এনসিপি ৫ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এ লক্ষ্যে ইজ অব ডুয়িং বিজনেস সহজীকরণ, ব্যবসার ব্যয় হ্রাস, নিয়ন্ত্রক কাঠামোর সরলীকরণ এবং যুববান্ধব উদ্যোক্তা পরিবেশ সৃষ্টি করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।

তাসনিম জারা বাংলাদেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশ্ববাজারে তুলে ধরার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তিনি স্কেল-আপ, উদ্ভাবন, প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা এবং গ্লোবাল ভ্যালু চেইনে সংযুক্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি স্টার্টআপ ও রপ্তানিমুখী শিল্পকে সহায়তা দিয়ে বাংলাদেশকে একটি বৈশ্বিক ব্যবসা প্রতিযোগীতে রূপান্তরের আহ্বান জানান।

নাহিদ ইসলাম গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, প্রশাসনিক কাঠামোর গভীর সংস্কারের অভাবই বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় বাধা। তিনি রাজনৈতিক পরিবর্তনের ঊর্ধ্বে গিয়ে সংস্কারের ধারাবাহিকতা ও স্থায়িত্ব রক্ষার অর্থনৈতিক প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন, যা দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগকারীদের আস্থা নিশ্চিত করবে।

এছাড়া নাসিরউদ্দিন পাটওয়ারী, এনসিপির যুব উইংয়ের নেতৃবৃন্দ ও অন্যান্য শীর্ষ পর্যায়ের দলীয় নেতারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি বিভিন্ন শিল্পখাতের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ আলোচনায় অংশগ্রহণ করে বিনিয়োগ প্রতিবন্ধকতা, নীতিগত চ্যালেঞ্জ এবং বেসরকারি খাতের প্রত্যাশা তুলে ধরেন।

আলোচনা শেষে অংশগ্রহণকারীরা কাঠামোগত সংস্কার, নৈতিক শাসনব্যবস্থা, যুবকেন্দ্রিক উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং বিনিয়োগবান্ধব নীতিমালা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি নিরাপদ, প্রতিযোগিতামূলক ও ভবিষ্যৎমুখী বৈশ্বিক বিনিয়োগ গন্তব্যে রূপান্তরের ওপর জোর দেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

বাংলাদেশের বিনিয়োগ ভবিষ্যৎ নিয়ে শেরাটনে উচ্চপর্যায়ের নীতিগত সংলাপ আয়োজন করল এনসিপি

Update Time : 12:49:10 am, Saturday, 6 December 2025
২৭

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি) কর্তৃক “বাংলাদেশের বিনিয়োগ ভবিষ্যৎ: বৈদেশিক পুঁজি, জাতীয় সম্পদ ও কৌশলগত সার্বভৌমত্বের ভারসাম্য” শীর্ষক একটি উচ্চপর্যায়ের নীতিগত সংলাপ আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫, বিকাল ৪:০০টায়, এরিয়াল, লেভেল ১৪, শেরাটন ঢাকা, ৪৪ কেমাল আতাতুর্ক এভিনিউ, ঢাকা-এ।

উক্ত আলোচনায় নীতিনির্ধারক, বিনিয়োগকারী, শিল্পখাতের উদ্যোক্তা ও উন্নয়ন অংশীদাররা অংশগ্রহণ করেন। টেকসই বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের পাশাপাশি জাতীয় স্বার্থ ও দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জাবেদ রাসিন, এনসিপির শিল্প ও বাণিজ্য সেলের প্রধান। তিনি নৈতিকতা, স্বচ্ছতা ও জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষার ভিত্তিতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশকে একটি ‘গ্লোবাল বিজনেস হ্যাভেন’ হিসেবে গড়ে তোলার এনসিপির ভিশন উপস্থাপন করেন। তিনি বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনের জন্য স্থিতিশীলতা, জবাবদিহিতা ও আইনভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

মোঃ আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি গত ১৫ বছরের অর্থনৈতিক বয়ান বিশ্লেষণ করে তথ্য বিকৃতি, বিকৃত প্রবৃদ্ধি চিত্র এবং অকার্যকর নীতিগত হস্তক্ষেপ নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তোলেন। তিনি তথ্যভিত্তিক ও বৈজ্ঞানিক অর্থনৈতিক সংস্কারের আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি জানান, বর্তমানে জিডিপির মাত্র ০.৩৪ শতাংশ এফডিআই—যা বিশ্বের অন্যতম নিম্ন হার—সেটিকে এনসিপি ৫ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এ লক্ষ্যে ইজ অব ডুয়িং বিজনেস সহজীকরণ, ব্যবসার ব্যয় হ্রাস, নিয়ন্ত্রক কাঠামোর সরলীকরণ এবং যুববান্ধব উদ্যোক্তা পরিবেশ সৃষ্টি করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।

তাসনিম জারা বাংলাদেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশ্ববাজারে তুলে ধরার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তিনি স্কেল-আপ, উদ্ভাবন, প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা এবং গ্লোবাল ভ্যালু চেইনে সংযুক্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি স্টার্টআপ ও রপ্তানিমুখী শিল্পকে সহায়তা দিয়ে বাংলাদেশকে একটি বৈশ্বিক ব্যবসা প্রতিযোগীতে রূপান্তরের আহ্বান জানান।

নাহিদ ইসলাম গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, প্রশাসনিক কাঠামোর গভীর সংস্কারের অভাবই বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় বাধা। তিনি রাজনৈতিক পরিবর্তনের ঊর্ধ্বে গিয়ে সংস্কারের ধারাবাহিকতা ও স্থায়িত্ব রক্ষার অর্থনৈতিক প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন, যা দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগকারীদের আস্থা নিশ্চিত করবে।

এছাড়া নাসিরউদ্দিন পাটওয়ারী, এনসিপির যুব উইংয়ের নেতৃবৃন্দ ও অন্যান্য শীর্ষ পর্যায়ের দলীয় নেতারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি বিভিন্ন শিল্পখাতের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ আলোচনায় অংশগ্রহণ করে বিনিয়োগ প্রতিবন্ধকতা, নীতিগত চ্যালেঞ্জ এবং বেসরকারি খাতের প্রত্যাশা তুলে ধরেন।

আলোচনা শেষে অংশগ্রহণকারীরা কাঠামোগত সংস্কার, নৈতিক শাসনব্যবস্থা, যুবকেন্দ্রিক উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং বিনিয়োগবান্ধব নীতিমালা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি নিরাপদ, প্রতিযোগিতামূলক ও ভবিষ্যৎমুখী বৈশ্বিক বিনিয়োগ গন্তব্যে রূপান্তরের ওপর জোর দেন।