Dhaka 2:41 am, Saturday, 22 November 2025

কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলন: ওসমানীনগরে ড্রেজার ও নৌকা আটক

  • Reporter Name
  • Update Time : 11:43:04 am, Sunday, 20 April 2025
  • 146 Time View

ওসমানীনগর (সিলেট) সংবাদদাতা: সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারা বাজার এবং ওসমানীনগরের আলীপুর, লামাতাজপুর সীমান্তবর্তী কুশিয়ারা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি অনুমতি না থাকলেও, ওসমানীনগর অংশ থেকে বালু উত্তোলন করায় স্থানীয় শিক্ষার্থীরা শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি ড্রেজার মেশিন ও দুটি নৌকা আটক করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দাবি করেছে, তারা নবীগঞ্জ উপজেলার ইজারা পাওয়া নির্ধারিত সীমানা থেকে নিয়ম মেনেই বালু উত্তোলন করছে। তাদের দাবি অনুযায়ী, নবীগঞ্জের তাজাবাদ (জেল নং ২১৯, দাগ নং ১০০৩) ও দীঘলভাগ (জেল নং ২৭, দাগ ০৮/২৫) এলাকায় বৈধভাবে বালু উত্তোলনের অনুমোদন রয়েছে।

অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের দাবি, ওই ড্রেজার ও নৌকা ওসমানীনগরের লামাতাজপুর অংশ থেকেই বালু উত্তোলন করছিল। প্রশাসন জানিয়েছে, ওসমানীনগরে কুশিয়ারা নদীর অংশে সরকারি কোনো ইজারা নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন জানান, সীমানা নির্ধারণে প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ ছিল না, তবে ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, অবাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে উত্তোলিত বালু ওসমানীনগরে এনে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করা হচ্ছে। এই কার্যক্রম পরিচালনা করছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট, যার নেতৃত্বে রয়েছেন শেরপুর এলাকার এক প্রভাবশালী ব্যক্তি এমরান আহমদ। স্থানীয়রা ভয়ে তাদের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।

ওয়াহিদ এন্টারপ্রাইজের মালিক ওয়াহিদ মিয়া বলেন, অনুমতি অনুযায়ী শুধুমাত্র সড়ক নির্মাণ কাজে বালু ব্যবহারের কথা, বাণিজ্যিক ব্যবহারের অনুমোদন নেই। তিনি অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

সরজমিনে দেখা যায়, একটি ড্রেজার ও একটি বালু ভর্তি নৌকা শেরপুর সেতুর নিচে রাখা হয়েছে, যা বর্তমানে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রয়েছে।

শিক্ষার্থী শাহ মাহমুদ ও শেখ জুমান কুরেশীর অভিযোগ, ড্রেজারে উত্তোলিত বালুর কারণে নদীভাঙন তীব্র হচ্ছে, ঝুঁকিতে পড়ছে কুশিয়ারা ডাইক। অন্যদিকে, সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযুক্ত এমরান আহমদ স্থান ত্যাগ করেন। তার সাথে একাধিক বার মোবাইল ফোনে আলাপ কালে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Mottakim Ahmed

Popular Post

কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলন: ওসমানীনগরে ড্রেজার ও নৌকা আটক

Update Time : 11:43:04 am, Sunday, 20 April 2025

ওসমানীনগর (সিলেট) সংবাদদাতা: সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারা বাজার এবং ওসমানীনগরের আলীপুর, লামাতাজপুর সীমান্তবর্তী কুশিয়ারা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি অনুমতি না থাকলেও, ওসমানীনগর অংশ থেকে বালু উত্তোলন করায় স্থানীয় শিক্ষার্থীরা শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি ড্রেজার মেশিন ও দুটি নৌকা আটক করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দাবি করেছে, তারা নবীগঞ্জ উপজেলার ইজারা পাওয়া নির্ধারিত সীমানা থেকে নিয়ম মেনেই বালু উত্তোলন করছে। তাদের দাবি অনুযায়ী, নবীগঞ্জের তাজাবাদ (জেল নং ২১৯, দাগ নং ১০০৩) ও দীঘলভাগ (জেল নং ২৭, দাগ ০৮/২৫) এলাকায় বৈধভাবে বালু উত্তোলনের অনুমোদন রয়েছে।

অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের দাবি, ওই ড্রেজার ও নৌকা ওসমানীনগরের লামাতাজপুর অংশ থেকেই বালু উত্তোলন করছিল। প্রশাসন জানিয়েছে, ওসমানীনগরে কুশিয়ারা নদীর অংশে সরকারি কোনো ইজারা নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন জানান, সীমানা নির্ধারণে প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ ছিল না, তবে ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, অবাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে উত্তোলিত বালু ওসমানীনগরে এনে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করা হচ্ছে। এই কার্যক্রম পরিচালনা করছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট, যার নেতৃত্বে রয়েছেন শেরপুর এলাকার এক প্রভাবশালী ব্যক্তি এমরান আহমদ। স্থানীয়রা ভয়ে তাদের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।

ওয়াহিদ এন্টারপ্রাইজের মালিক ওয়াহিদ মিয়া বলেন, অনুমতি অনুযায়ী শুধুমাত্র সড়ক নির্মাণ কাজে বালু ব্যবহারের কথা, বাণিজ্যিক ব্যবহারের অনুমোদন নেই। তিনি অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

সরজমিনে দেখা যায়, একটি ড্রেজার ও একটি বালু ভর্তি নৌকা শেরপুর সেতুর নিচে রাখা হয়েছে, যা বর্তমানে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রয়েছে।

শিক্ষার্থী শাহ মাহমুদ ও শেখ জুমান কুরেশীর অভিযোগ, ড্রেজারে উত্তোলিত বালুর কারণে নদীভাঙন তীব্র হচ্ছে, ঝুঁকিতে পড়ছে কুশিয়ারা ডাইক। অন্যদিকে, সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযুক্ত এমরান আহমদ স্থান ত্যাগ করেন। তার সাথে একাধিক বার মোবাইল ফোনে আলাপ কালে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।