Dhaka 8:12 pm, Wednesday, 31 December 2025

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম কাজ শেখ হাসিনার বিচার করা: ফরিদা আখতার

Reporter Name
  • Update Time : 05:59:38 am, Sunday, 13 April 2025
  • / 115 Time View
৩২

অগ্নিশিখা প্রতিবেদক: শেখ হাসিনার বিচার এই মাটিতে এই সরকারের আমলেই হতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একমাত্র কাজ যদি কিছু থাকে, সেটা হবে শেখ হাসিনা এবং যারা এই হত্যাকারী তাদের বিচার করা।

শনিবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুরে শাহ আলী মাজারে ‘জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স’ মিরপুর আয়োজিত ‘গণমানুষের জাগ্রত জুলাই’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

ফরিদা আখতার বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কী কেউ এখন পর্যন্ত একটা অভিযোগ করেনি। কেউ বলেনি যে আমার ছেলে ভুল করেছে। কেউ বলেনি যে আমার ছেলে কেন গেল দুঃখে মরে যাচ্ছি। কেউ কিন্তু একথা বলেনি। এটা কিন্তু খুব খেয়াল করার বিষয়। একবারও বলেনি। যারা আহত হয়েছে তারাও একবারও বলেনি আমরা ভুল করেছিলাম। কিন্তু হ্যাঁ, একটা কথা তারা বলেছে। তারা বিচার দেখতে চায় এবং বিচারটা হতেই হবে।’

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। এদের (জুলাই শহীদদের) রক্তের ওপর দিয়ে এসেছে এবং যারা আহত এখনো বাড়ি ঘরে কাতরাচ্ছে কিংবা হাসপাতালে আছে। কারো হাত নাই, কারো পা নাই, কারো চোখ নাই। একেবারে জলজ্যান্ত তরুণ প্রাণগুলো যে একদিন আগেও দুনিয়াটা দেখতো তার সামনে দুনিয়াটা অন্ধকার। যতবারই আমি ওদের কথা (আহতদের) শুনি ততবারই আমার কাছে মনে হয় যে, এটা আমাদের বারে বারে প্রতিজ্ঞার মতো নিতে হবে।’

ফরিদা আখতার বলেন, ‘আপনারা নির্বাচনের কথা বলেন? আমরা অনির্বাচিত এই কথা কে বললো ? আমাদের তো ছাত্র-জনতা, যারা নাকি এই পরিবর্তনটা এনে দিয়েছে তারাই সরকার গঠন করেছে। তাদের দ্বারা নির্বাচিত আমরা। কাজেই আমাদের দায়িত্ব হলো, তাদের যে চাহিদা সেটা মেটানো। এটাতে কোনোরকম ভুল ত্রুটি হতে পারবে না। গণহত্যার বিচার আমাদের করতেই হবে।

অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ তার বক্তব্যে বাস স্ট্যান্ড, লঞ্চ ঘাটের মানুষগুলোর জন্য ওয়াইফাইয়ের ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলেন। যাতে তারা সহজেই তাদের নিকটস্থল এবং লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে।

শহীদ পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন মিরপুরে শহীদ শাহরিয়ার হাসান আলভীর বাবা আবুল হাসান, শহীদ আকরাম খান রাব্বির বাবা ফারুক খান, শহীদ গোলাম নাফিসের বাবা গোলাম রহমান, শহীদ ইমাম হোসেন তাইয়েমের ভাই রবিউল আউয়াল ও শহীদ আহনাফের মা জারতাস পারভীন।

শহীদ পরিবারের সদস্যরা বলেন, ‘আমরা এখনো বিচারের কোনো পদক্ষেপ দেখছি না। বিচারের নামে প্রহসন চলছে। এখন অনেক জায়গায় মামলা নেওয়া হয় না। উলটো বিচার চাইতে গেলে শহীদ পরিবারের সদস্যরা হেনস্থার শিকার হচ্ছে। আমরা চাই, এ সরকার যেন দ্রুত গণহত্যাকারীদের বিচার করে।’

গরিব-অসহায়দের জন্যে মেডিকেল ক্যাম্প, জুলাই গ্রাফিতি, আন্দোলনের ছবি ও খবরের কাগজ প্রদর্শনী, কবিতাপাঠ, জুলাই আন্দোলনে আহত, সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের স্মৃতিচারণ, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, ভাবগানের আসর ও বইমেলা আয়োজনের মধ্য দিয়ে শেষ অনুষ্ঠান।

জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুরের প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মদ রোমেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম, আকিজ ইনসাফ গ্রুপের সিএমও শফিকুল ইসলাম তুষার, জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুরের সদস্য তৌফিক হাসান, উদয় হাসান ও সিলমী সাদিয়াসহ অনেকে।

অনুষ্ঠানে আকিজ ইনসাফ গ্রুপের পক্ষ থেকে শহীদ পরিবারের সদস্যদের হাতে উপহার সামগ্রী ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীদের হাতে পুরস্কার দেওয়া হয়।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম কাজ শেখ হাসিনার বিচার করা: ফরিদা আখতার

Update Time : 05:59:38 am, Sunday, 13 April 2025
৩২

অগ্নিশিখা প্রতিবেদক: শেখ হাসিনার বিচার এই মাটিতে এই সরকারের আমলেই হতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একমাত্র কাজ যদি কিছু থাকে, সেটা হবে শেখ হাসিনা এবং যারা এই হত্যাকারী তাদের বিচার করা।

শনিবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুরে শাহ আলী মাজারে ‘জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স’ মিরপুর আয়োজিত ‘গণমানুষের জাগ্রত জুলাই’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

ফরিদা আখতার বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কী কেউ এখন পর্যন্ত একটা অভিযোগ করেনি। কেউ বলেনি যে আমার ছেলে ভুল করেছে। কেউ বলেনি যে আমার ছেলে কেন গেল দুঃখে মরে যাচ্ছি। কেউ কিন্তু একথা বলেনি। এটা কিন্তু খুব খেয়াল করার বিষয়। একবারও বলেনি। যারা আহত হয়েছে তারাও একবারও বলেনি আমরা ভুল করেছিলাম। কিন্তু হ্যাঁ, একটা কথা তারা বলেছে। তারা বিচার দেখতে চায় এবং বিচারটা হতেই হবে।’

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। এদের (জুলাই শহীদদের) রক্তের ওপর দিয়ে এসেছে এবং যারা আহত এখনো বাড়ি ঘরে কাতরাচ্ছে কিংবা হাসপাতালে আছে। কারো হাত নাই, কারো পা নাই, কারো চোখ নাই। একেবারে জলজ্যান্ত তরুণ প্রাণগুলো যে একদিন আগেও দুনিয়াটা দেখতো তার সামনে দুনিয়াটা অন্ধকার। যতবারই আমি ওদের কথা (আহতদের) শুনি ততবারই আমার কাছে মনে হয় যে, এটা আমাদের বারে বারে প্রতিজ্ঞার মতো নিতে হবে।’

ফরিদা আখতার বলেন, ‘আপনারা নির্বাচনের কথা বলেন? আমরা অনির্বাচিত এই কথা কে বললো ? আমাদের তো ছাত্র-জনতা, যারা নাকি এই পরিবর্তনটা এনে দিয়েছে তারাই সরকার গঠন করেছে। তাদের দ্বারা নির্বাচিত আমরা। কাজেই আমাদের দায়িত্ব হলো, তাদের যে চাহিদা সেটা মেটানো। এটাতে কোনোরকম ভুল ত্রুটি হতে পারবে না। গণহত্যার বিচার আমাদের করতেই হবে।

অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ তার বক্তব্যে বাস স্ট্যান্ড, লঞ্চ ঘাটের মানুষগুলোর জন্য ওয়াইফাইয়ের ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলেন। যাতে তারা সহজেই তাদের নিকটস্থল এবং লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে।

শহীদ পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন মিরপুরে শহীদ শাহরিয়ার হাসান আলভীর বাবা আবুল হাসান, শহীদ আকরাম খান রাব্বির বাবা ফারুক খান, শহীদ গোলাম নাফিসের বাবা গোলাম রহমান, শহীদ ইমাম হোসেন তাইয়েমের ভাই রবিউল আউয়াল ও শহীদ আহনাফের মা জারতাস পারভীন।

শহীদ পরিবারের সদস্যরা বলেন, ‘আমরা এখনো বিচারের কোনো পদক্ষেপ দেখছি না। বিচারের নামে প্রহসন চলছে। এখন অনেক জায়গায় মামলা নেওয়া হয় না। উলটো বিচার চাইতে গেলে শহীদ পরিবারের সদস্যরা হেনস্থার শিকার হচ্ছে। আমরা চাই, এ সরকার যেন দ্রুত গণহত্যাকারীদের বিচার করে।’

গরিব-অসহায়দের জন্যে মেডিকেল ক্যাম্প, জুলাই গ্রাফিতি, আন্দোলনের ছবি ও খবরের কাগজ প্রদর্শনী, কবিতাপাঠ, জুলাই আন্দোলনে আহত, সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের স্মৃতিচারণ, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, ভাবগানের আসর ও বইমেলা আয়োজনের মধ্য দিয়ে শেষ অনুষ্ঠান।

জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুরের প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মদ রোমেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম, আকিজ ইনসাফ গ্রুপের সিএমও শফিকুল ইসলাম তুষার, জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুরের সদস্য তৌফিক হাসান, উদয় হাসান ও সিলমী সাদিয়াসহ অনেকে।

অনুষ্ঠানে আকিজ ইনসাফ গ্রুপের পক্ষ থেকে শহীদ পরিবারের সদস্যদের হাতে উপহার সামগ্রী ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীদের হাতে পুরস্কার দেওয়া হয়।