শনিবার, ২৬ Jul ২০২৫, ০৭:০৪ অপরাহ্ন
আমিনুর রহমান,নবাবগঞ্জ: মানুষের জীবনের যেন কোনো মূল্যই নেই কিছু ব্যবসায়ীর কাছে। রোগমুক্তির জন্য মানুষের ভরসা ক্লিনিকগুলো। কিন্তু ওই ক্লিনিকেই রোগ নির্ণয়ের মতো বিভিন্ন টেস্ট করা হয় মেয়াদোত্তীর্ণ কেমিক্যাল দিয়ে। তাও আবার চার বছর আগের জন্য ওষুধ দিয়ে রোগ নির্ণয়ের টেস্ট করা হতো ঢাকার নবাবগঞ্জের একটি স্বনামধন্য ক্লিনিকে। গত ২৫শে ফেব্রুয়ারি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানে গোমর ফাঁস হয়ে যায় মুক্তি ক্লিনিকের। অভিযানে বিপুল মেয়াদোত্তীর্ণ রিএজেন্ট (স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ব্যবহৃত রাসায়নিক মিশ্রণ) পাওয়া গেছে।
অভিযানকালে দেখা যায়, মুক্তি ক্লিনিকের একটি ফ্রিজে রিএজেন্ট রয়েছে।অভিযানে নেতৃত্বে দেয়া ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ফাহমিনা আক্তার সরজমিন দেখতে পান রিএজেন্ট রাখা বেশ কয়েকটি টিউবের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। অথচ মেয়াদোত্তীর্ণ প্লাস্টিকের পাত্রে রিএজেন্ট সংরক্ষণ করে সিবিসি (কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট বা কমপ্লিট ব্লাড পিকচার টেস্ট) পরীক্ষার কাজে লাগানো হচ্ছে। ২০২১ সালে মেয়াদোত্তীর্ণ রিএজেন্টও রয়েছে ফ্রিজে। এ ছাড়া ২০২২ ও ২০২৪ সালের মেয়াদোত্তীর্ণ কেমিক্যালের খোঁজ মিলেছে। ক্লিনিকটিকে ১ লাখ জরিমানা করে সংশোধনের জন্য ১ সপ্তাহ সময় দেয়া হয়।
স্থানীয়রা বলেন, চিকিৎসার জন্য দোহার নবাবগঞ্জের যে কয়টি ক্লিনিকের ওপর মানুষ বিশ্বাসের রয়েছে তারা মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে মুক্তি ক্লিনিক। তারাই যদি এমন কাণ্ড করেন তাহলে চিকিৎসার জন্য কাদের ওপর বিশ্বাস সাধারণ জনগণ। যাদের অবহেলায় এতদিন মুক্তি ক্লিনিকে মেয়াদোত্তীর্ণ রিএজেন্ট দিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে তাদের শাস্তিও দাবি করেন তারা।
এ ছাড়া ক্লিনিকে কর্তৃপক্ষকে আরও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান তারা। অপর দিকে মুক্তি ক্লিনিকের এমন দায়িত্বহীন কাণ্ডে হতভম্ব সাধারণ মানুষ। সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ড. আবুল হোসেন খন্দকার মানবজমিনকে বলেন, হাসপাতালের মতো একটি জায়গাতেও ভেজাল হয়। এটা অত্যন্ত অগ্রহণযোগ্য ও নিন্দনীয় কাজ। শুধু জরিমানা যথেষ্ট নয়, মুক্তি ক্লিনিকের কর্তৃপক্ষদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা উচিত। সে যদি কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে মনে করি।