Dhaka 9:34 am, Sunday, 28 December 2025

শান্তি চুক্তির মানে ইউক্রেনের আত্মসমর্পণ নয়, ট্রাম্পের পাশে দাঁড়িয়ে বললেন ম্যাক্রঁ

Reporter Name
  • Update Time : 08:25:42 am, Tuesday, 25 February 2025
  • / 119 Time View
৩৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রঁ বলেছেন ইউক্রেন নিয়ে যে কোনো শান্তি চুক্তিতে নিরাপত্তা গ্যারান্টি থাকতে হবে। হোয়াইট হাউজে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাতের পর তিনি এ মন্তব্য করেছেন।

প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন এবং হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে আলোচনার পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

হোয়াইট হাউসে স্থানীয় সময় সোমবার বৈঠকের পর ট্রাম্পকে পাশে নিয়ে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, “এই শান্তি অর্জন মানে ইউক্রেনের আত্মসমর্পণ হওয়া উচিত নয়। কোনও ধরনের নিশ্চয়তা ছাড়া যুদ্ধবিরতিও হওয়া উচিত নয়।”

ট্রাম্প অবশ্য নিজে থেকে কোনও ধরনের নিরাপত্তা গ্যারান্টির কথা উল্লেখ করেননি। তবে তিনি বলেন, ইউক্রেনে শান্তি রক্ষার খরচ এবং বোঝা ইউরোপীয় দেশগুলোকেও বহন করতে হবে, কেবল যুক্তরাষ্ট্র এটা করবে না।

জবাবে ম্যাক্রোঁ বলেন, ইউরোপ “নিরাপত্তার বোঝা আরও ন্যায্যভাবে ভাগ করার” প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পেরেছে। রাশিয়ার আক্রমণের তৃতীয় বার্ষিকীতে আলোচনা আরও এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখিয়েছে বলেও জানান তিনি।

গত মাসে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা প্রথম ইউরোপীয় নেতা হচ্ছেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁকে “আমার দৃষ্টিতে একজন বিশেষ মানুষ” বলে অভিহিত করেছেন।

ম্যাক্রোঁ এবং ট্রাম্পের মধ্যে এই বৈঠকে ইউক্রেনের শান্তি প্রক্রিয়া এবং ইউরোপের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ম্যাক্রোঁ বলেন, উভয় নেতা একটি “দৃঢ় ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তি” চান। তিনি ঘোষণা দেন, ইউরোপ প্রতিরক্ষা খাতে “ব্যয় বৃদ্ধি” করতে প্রস্তুত। এছাড়া ইউরোপ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।

ট্রাম্প বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধের সমাপ্তির জন্য একটি সম্ভাব্য চুক্তির গ্যারান্টি হিসেবে ইউক্রেনে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করতে “রাজি” আছেন। দুই নেতা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা করেছেন। মূলত ট্রাম্প সম্প্রতি ইইউয়ের বিরুদ্ধে ব্যাপক শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন।

পৃথক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা বলছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সোমবার ইউক্রেন নিয়ে তাদের পরিষ্কার মতপার্থক্য জনসমক্ষে তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে দিয়ে রাশিয়ার সাথে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত যুদ্ধবিরতি অর্জনে ট্রাম্পের প্রচেষ্টা নিয়ে ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতবিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসলো।

এর আগে ট্রাম্প গত সপ্তাহে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে স্বৈরশাসক হিসেবে অভিহিত করেন, কিন্তু তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে স্বৈরশাসক বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। আর এদিন ম্যাক্রোঁ বলেন, এটা পরিষ্কার যে— এই সংঘাতে রাশিয়া হচ্ছে “আগ্রাসী”।

ট্রাম্প যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধ বিরতির জন্য আশা প্রকাশ করেন এবং বলেন, তিনি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতির জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, চুক্তি নিয়ে সমঝোতা হলে তিনি মস্কোতে পুতিনের সাথে সাক্ষাৎ করবেন।

অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ আরও ধীরগতির প্রচেষ্টার আহ্বান জানান। তার মতে, যুদ্ধবিরতি দিয়ে শুরু করে তারপর নিরাপত্তা গ্যারান্টিসহ শান্তি চুক্তির দিকে যাওয়া উচিত।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

শান্তি চুক্তির মানে ইউক্রেনের আত্মসমর্পণ নয়, ট্রাম্পের পাশে দাঁড়িয়ে বললেন ম্যাক্রঁ

Update Time : 08:25:42 am, Tuesday, 25 February 2025
৩৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রঁ বলেছেন ইউক্রেন নিয়ে যে কোনো শান্তি চুক্তিতে নিরাপত্তা গ্যারান্টি থাকতে হবে। হোয়াইট হাউজে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাতের পর তিনি এ মন্তব্য করেছেন।

প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন এবং হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে আলোচনার পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

হোয়াইট হাউসে স্থানীয় সময় সোমবার বৈঠকের পর ট্রাম্পকে পাশে নিয়ে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, “এই শান্তি অর্জন মানে ইউক্রেনের আত্মসমর্পণ হওয়া উচিত নয়। কোনও ধরনের নিশ্চয়তা ছাড়া যুদ্ধবিরতিও হওয়া উচিত নয়।”

ট্রাম্প অবশ্য নিজে থেকে কোনও ধরনের নিরাপত্তা গ্যারান্টির কথা উল্লেখ করেননি। তবে তিনি বলেন, ইউক্রেনে শান্তি রক্ষার খরচ এবং বোঝা ইউরোপীয় দেশগুলোকেও বহন করতে হবে, কেবল যুক্তরাষ্ট্র এটা করবে না।

জবাবে ম্যাক্রোঁ বলেন, ইউরোপ “নিরাপত্তার বোঝা আরও ন্যায্যভাবে ভাগ করার” প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পেরেছে। রাশিয়ার আক্রমণের তৃতীয় বার্ষিকীতে আলোচনা আরও এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখিয়েছে বলেও জানান তিনি।

গত মাসে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা প্রথম ইউরোপীয় নেতা হচ্ছেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁকে “আমার দৃষ্টিতে একজন বিশেষ মানুষ” বলে অভিহিত করেছেন।

ম্যাক্রোঁ এবং ট্রাম্পের মধ্যে এই বৈঠকে ইউক্রেনের শান্তি প্রক্রিয়া এবং ইউরোপের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ম্যাক্রোঁ বলেন, উভয় নেতা একটি “দৃঢ় ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তি” চান। তিনি ঘোষণা দেন, ইউরোপ প্রতিরক্ষা খাতে “ব্যয় বৃদ্ধি” করতে প্রস্তুত। এছাড়া ইউরোপ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।

ট্রাম্প বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধের সমাপ্তির জন্য একটি সম্ভাব্য চুক্তির গ্যারান্টি হিসেবে ইউক্রেনে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করতে “রাজি” আছেন। দুই নেতা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা করেছেন। মূলত ট্রাম্প সম্প্রতি ইইউয়ের বিরুদ্ধে ব্যাপক শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন।

পৃথক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা বলছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সোমবার ইউক্রেন নিয়ে তাদের পরিষ্কার মতপার্থক্য জনসমক্ষে তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে দিয়ে রাশিয়ার সাথে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত যুদ্ধবিরতি অর্জনে ট্রাম্পের প্রচেষ্টা নিয়ে ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতবিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসলো।

এর আগে ট্রাম্প গত সপ্তাহে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে স্বৈরশাসক হিসেবে অভিহিত করেন, কিন্তু তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে স্বৈরশাসক বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। আর এদিন ম্যাক্রোঁ বলেন, এটা পরিষ্কার যে— এই সংঘাতে রাশিয়া হচ্ছে “আগ্রাসী”।

ট্রাম্প যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধ বিরতির জন্য আশা প্রকাশ করেন এবং বলেন, তিনি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতির জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, চুক্তি নিয়ে সমঝোতা হলে তিনি মস্কোতে পুতিনের সাথে সাক্ষাৎ করবেন।

অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ আরও ধীরগতির প্রচেষ্টার আহ্বান জানান। তার মতে, যুদ্ধবিরতি দিয়ে শুরু করে তারপর নিরাপত্তা গ্যারান্টিসহ শান্তি চুক্তির দিকে যাওয়া উচিত।