Dhaka 2:25 pm, Sunday, 23 November 2025

তালাবদ্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া মরদেহের পরিচয় মিলছে

  • Reporter Name
  • Update Time : 11:27:28 am, Wednesday, 29 January 2025
  • 103 Time View

সাহাব উদ্দীন,বিশেষ প্রতিনিধি নারায়ণগঞ্জঃ পরিচয় মিলেছে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি তালাবদ্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া যুবকের। মরদেহটি অপহৃত ভ্যানচালক হাবিবুর রহমানের।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এনায়েতনগর ইউনিয়নের শীষমহল আমতলা এলাকার স্বপন সরকারের ভাড়াটিয়া বাড়ি থেকে অপহরণের পাঁচ দিন পর পচা ও বিকৃত মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।

মঙ্গলবার রাতে নিহতের বাবা আজিজুল হক ছেলের পরনের জামা-কাপড় ও পায়ের আঙুল দেখে মরদেহ শনাক্ত করেন।

জানা গেছে, স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে অপহরণকারী দলের দুই সদস্য কয়েকদিন আগে স্বপন সরকারের বাড়িতে বাসা ভাড়া নেয়। সেখানেই তারা হাবিবুর রহমানকে আটকে রেখে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না পেয়ে তাকে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

এর আগে,(২৫ জানুয়ারি) হাবিবুরের বাবা আজিজুল হক তার ছেলেকে অপহরণের অভিযোগ এনে ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, তাদের গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার দিঘল হাইল্লা গ্রামে। তবে তারা সপরিবারে ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন সাক্কু মিয়ার বাসায় ভাড়া থেকে জীবিকা নির্বাহ করেন। নিহত হাবিবুর এক মাস আগে গ্রাম থেকে বাবার কাছে আসেন এবং ভ্যান চালানো শুরু করেন।

গত ২৪ জানুয়ারি অপহরণকারীরা হাবিবুর রহমানের মোবাইল দিয়ে তার বাবার মোবাইলে ফোন করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আজিজুল হক বলেন, “আমি ও আমার ছেলে ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাই, এত টাকা কোথায় পাব?” এরপর থেকেই অপহরণকারীরা হাবিবুরের মোবাইল বন্ধ করে দেয়।

পরদিন আজিজুল হক থানায় অভিযোগ করেন।

অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা, ফতুল্লা মডেল থানার সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) ওয়াসিম জানান, “প্রযুক্তির মাধ্যমে হাবিবুরের অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে মোবাইল বন্ধ থাকায় সময় লেগেছে।”

নিহতের বাবা আজিজুল হক বলেন, “অভিযোগ করার পর পুলিশ যদি তৎপরতা বাড়াত, তাহলে হয়তো আমার ছেলে বেঁচে যেত। আমরা গরিব মানুষ, পরিশ্রম করে খাই। তারপরও অপহরণকারীরা আমার ছেলেকে হত্যা করল।”

তিনি আরও দাবি করেন, “ফতুল্লায় অপহরণকারী একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়। তারা সাধারণ মানুষকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে। পুলিশ বিষয়টি জানে, কিন্তু ব্যবস্থা নেয় না। আমি এই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি শরিফুল ইসলাম বলেন, “যে বাড়িতে লাশ পাওয়া গেছে, সেই বাড়ির মালিক ভাড়াটিয়ার পরিচয় না জেনেই বাসা ভাড়া দিয়েছেন। ফলে হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে দেরি হয়েছে। তবে তাদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।”

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Murad Ahmed

Popular Post

ফতুল্লা থানা পুলিশ ০৯ (নয়) বোতল ফেন্সিডিল সহ ০২ (দুই) জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে

তালাবদ্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া মরদেহের পরিচয় মিলছে

Update Time : 11:27:28 am, Wednesday, 29 January 2025

সাহাব উদ্দীন,বিশেষ প্রতিনিধি নারায়ণগঞ্জঃ পরিচয় মিলেছে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি তালাবদ্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া যুবকের। মরদেহটি অপহৃত ভ্যানচালক হাবিবুর রহমানের।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এনায়েতনগর ইউনিয়নের শীষমহল আমতলা এলাকার স্বপন সরকারের ভাড়াটিয়া বাড়ি থেকে অপহরণের পাঁচ দিন পর পচা ও বিকৃত মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।

মঙ্গলবার রাতে নিহতের বাবা আজিজুল হক ছেলের পরনের জামা-কাপড় ও পায়ের আঙুল দেখে মরদেহ শনাক্ত করেন।

জানা গেছে, স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে অপহরণকারী দলের দুই সদস্য কয়েকদিন আগে স্বপন সরকারের বাড়িতে বাসা ভাড়া নেয়। সেখানেই তারা হাবিবুর রহমানকে আটকে রেখে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না পেয়ে তাকে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

এর আগে,(২৫ জানুয়ারি) হাবিবুরের বাবা আজিজুল হক তার ছেলেকে অপহরণের অভিযোগ এনে ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, তাদের গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার দিঘল হাইল্লা গ্রামে। তবে তারা সপরিবারে ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন সাক্কু মিয়ার বাসায় ভাড়া থেকে জীবিকা নির্বাহ করেন। নিহত হাবিবুর এক মাস আগে গ্রাম থেকে বাবার কাছে আসেন এবং ভ্যান চালানো শুরু করেন।

গত ২৪ জানুয়ারি অপহরণকারীরা হাবিবুর রহমানের মোবাইল দিয়ে তার বাবার মোবাইলে ফোন করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আজিজুল হক বলেন, “আমি ও আমার ছেলে ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাই, এত টাকা কোথায় পাব?” এরপর থেকেই অপহরণকারীরা হাবিবুরের মোবাইল বন্ধ করে দেয়।

পরদিন আজিজুল হক থানায় অভিযোগ করেন।

অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা, ফতুল্লা মডেল থানার সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) ওয়াসিম জানান, “প্রযুক্তির মাধ্যমে হাবিবুরের অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে মোবাইল বন্ধ থাকায় সময় লেগেছে।”

নিহতের বাবা আজিজুল হক বলেন, “অভিযোগ করার পর পুলিশ যদি তৎপরতা বাড়াত, তাহলে হয়তো আমার ছেলে বেঁচে যেত। আমরা গরিব মানুষ, পরিশ্রম করে খাই। তারপরও অপহরণকারীরা আমার ছেলেকে হত্যা করল।”

তিনি আরও দাবি করেন, “ফতুল্লায় অপহরণকারী একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়। তারা সাধারণ মানুষকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে। পুলিশ বিষয়টি জানে, কিন্তু ব্যবস্থা নেয় না। আমি এই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি শরিফুল ইসলাম বলেন, “যে বাড়িতে লাশ পাওয়া গেছে, সেই বাড়ির মালিক ভাড়াটিয়ার পরিচয় না জেনেই বাসা ভাড়া দিয়েছেন। ফলে হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে দেরি হয়েছে। তবে তাদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।”