শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০২ পূর্বাহ্ন
বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ সুন্দরবনে তিনদিন ব্যাপি রাস উৎসব আজ শুরু বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে। রাস পূর্নিমা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) থেকে (১৬ নভেম্বর) পর্যন্ত দুবলার দুবলার চর সংলগ্ন আলোরকোলে সনাতন ধর্মালম্বীদের ঐতিহ্যবাহী রাস পূর্ণিমায় পূজা ও পুণ্যস্নান অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য বৃহস্পতিবার ভোরে বন বিভাগের নির্দিষ্ট কার্যালয় থেকে অনুমতি ও নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে সুন্দরবনে প্রবেশ করতে হবে। এজন্য সব ধরণের ব্যবস্থা করেছে বন বিভাগ, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ ও সংশ্লিষ্টরা।
রাস উৎসব উদযাপন কমিটি জানিয়েছে, এবার রাস পূজা ও পুণ্যস্নান উপলক্ষ্যে কোনো ধরনের মেলা হবে না। সন্ধ্যার মধ্যে বেশিরভাগ পুণ্যার্থী দুবলায় পৌঁছে যাবে। রাতে বিশ্রাম ও অনানুষ্ঠানিক পূজা অর্চনা করবেন। পুণ্যার্থীরা রাতে জলযানে (লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকা) অবস্থান করবেন। আবার শুক্রবার সকালে চরে ঘোরাঘুরি ও সন্ধ্যায় মূল মন্দিরে আনুষ্ঠানিক রাস পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এসময় ভক্ত ও পুণ্যার্থীদের কোনো মানত বা বিশেষ কোনো কাজ থাকলে তারা সেগুলো সম্পন্ন করবেন। শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে পুণ্যস্নানের মাধ্যমে এই রাস উৎসব শেষ হবে। এর পরেই লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকাযোগে বাড়ি ফিরবেন।
এদিকে রাস উৎসবকে ঘিরে যাতে অপরাধী চক্র কোনো অপরাধ সংগঠিত করতে না পারে সেজন্য নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বন বিভাগ, কোস্টগার্ড, পুলিশ, ও নৌ পুলিশের সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম।
তিনি বলেন, রাস উৎসব ঘিরে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। সব নিয়ম মেনেই পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের বনে প্রবেশ করতে হবে। কোনো পুণ্যার্থী সিঙ্গেল ইউজ (একবার ব্যবহার করে ফেলে দিতে হয়) এমন প্লাস্টিক নিয়ে বনে প্রবেশ করতে পারবে না। রান্নার জন্য জ্বালানি নিয়ে যেতে হবে, কোনোভাবেই বনের অভ্যন্তরের কোনো গাছ কাটতে পারবে না। বনের অভ্যন্তরে থাকাকালীন কোনো বন্যপ্রাণী শিকার করতে পারবে না। যদি কেউ শিকারের মতো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। বনে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে, তিনি তাৎক্ষণিকভাবে শিকারিদের সাজা দেবেন।
রাস উৎসব উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ বসু শন্তু বলেন, রাস পূজা উপলক্ষ্যে এবার মেলা হচ্ছে না। শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বনে যাচ্ছেন। পূজা আর্চনা ও আনুষ্ঠানিকতা শেষে আমরা শনিবার ফিরে আসব। প্রতিটি লঞ্চ, ট্রলার ও যানবাহনে পালনীয় ও বর্জনীয় নির্দেশনা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সবাইকে বন বিভাগের নিয়মকানুন মেনে চলার অনুরোধ করা হয়েছে। আশা করি শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব শেষ করতে পারব।