মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ০২:০৮ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ :
স্বৈরাচার শেখ হাসিনা আমাদের নেতা তারেক রহমানকে ভয় পেত, গিয়াসউদ্দিন নারায়ণগঞ্জের বন্দরে ডাকাতির চেষ্টা, নিজের হাতবোমা বিস্ফোরণে এক ডাকাত নিহত,গণপিটুনীতে আহত ২ ভোলায়, ‘শিশুদের প্রারম্ভিক বিকাশ ও সাঁতার শেখানো প্রকল্পে চলছে লুটপাট ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর থানা পুলিশ কর্তৃক ১৭০ কেজি গাঁজা ২টি মোটর সাইকেল সহ ১ জন গ্রেফতার নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী দোসর আক্তার প্রকাশ্যে,জনমনে ক্ষোভ মিরপুর বাংলা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষের বৈধ নিয়োগের বিষয়ে আদালতের একাধিক রায়কে উপেক্ষা করে ডিআইএ কতৃক তদন্ত প্রতিবেদন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জে জুলাই শহিদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা  সরাইলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি, বিশিষ্ট  ব্যবসায়ী কে হত্যা, সন্দেহজনক আটক ১ সরাইলে মাদক, চোর, ডাকাত নির্মূল কমিটির আলোচনা ও পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী

পলাশবাড়ীতে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়েও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এলপিজি সিলিন্ডার

মিলন মন্ডল,পলাশবাড়ী(গাইবান্ধা)প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে গ্যাসের মূল্য-তালিকা প্রদর্শন না করে, সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে এলপিজি সিলিন্ডার বিক্রির অভিযোগ। দেশে ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম ১২ কেজিতে এবার ৩৫ টাকা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। গত মাসে ১২ কেজিতে বেড়েছিল ৪৪ টাকা।

অক্টোবরের জন্য প্রতি ১২ কেজির সিলিন্ডারের দর নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৪৫৬ টাকা। সেপ্টেম্বরে দাম ছিল ১ হাজার ৪২১ টাকা। এলপিজির ১২ কেজি সিলিন্ডার সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় গৃহস্থালির কাজে।

অক্টোবর মাসের প্রথমেই বিইআরসি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নতুন দর ঘোষণা করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ। সংস্থাটি প্রতি মাসেই এলপিজির দাম নির্ধারণ করে।

বিইআরসির নতুন দর অনুযায়ী, বেসরকারি এলপিজির মূল্য সংযোজন করসহ (মূসক/ভ্যাটসহ) দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি ১২১ টাকা ৩২ পয়সা, যা গত মাসে ছিল ১১৮ টাকা ৪৪ পয়সা। এই হিসাবে বিভিন্ন আকারের এলপিজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারিত হবে।

খুচরা পর্যায়ে এই দামে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও তা মানছে না অসাধু ব্যবসায়ীরা। প্রকারভেদে প্রতিটি ১২ কেজি ওজনের এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অন্তত ১৫০-২০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে

খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, পাইকারিতেই তাদের সরকারি দরের চেয়ে বেশি দামে কিনতে হয়। এ কারণে খুচরায় বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

উপজেলার বিভিন্ন বাজারে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পৌর শহর থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যায়ে সব ধরনের দোকানেই বিক্রি হচ্ছে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার। মুদি দোকান,তেলের দোকান, চায়ের দোকান, জুতার দোকান, ওষুধের দোকানের সামনে রাখা হয়েছে এসব সিলিন্ডার। তবে বেশির ভাগ খুচরা ব্যবসায়ীরাও জানে না সরকারি নির্ধারিত দাম কত।

দোকানিরা জানান, ডিলারদের কাছ থেকে তারা যে দামে কিনেন, তার থেকে ৪০-৫০ টাকা বেশি দামে ক্রেতার কাছে বিক্রি করেন। তবে খুচরা পর্যায়ে কোনো ব্যবসায়ী তাদের সিলিন্ডার ক্রয়ের রসিদ দেখাতে পারেননি। শহর থেকে গ্রাম পর্যায়ে এসব সিলিন্ডারের দাম আরও বেশি। খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, শহর থেকে ভাড়া দিয়ে গ্রামে আনতে হয়। এ জন্য আরেকটু দাম বেড়ে যায়।

ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলায় প্রতি মাসে ১০ হাজারের বেশি এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হয়। সেই হিসাবে গড়ে প্রতি সিলিন্ডারে ১৫০ টাকা দাম বেশি নিলে গ্রাহকের পকেট থেকে প্রতি মাসে বাড়তি যায় ১৫ লাখ টাকা। মূলত এই ১৫ লাখ টাকা বাড়তি লাভ করে এলপি গ্যাসের ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন খুচরা বিক্রেতা বলেন, ‘আমরা কিনি বেশি দামে। সরকারের নির্ধারিত দামে তো আমাদের কাছে বিক্রি করে না, যেই দামে কিনি এর থেকে কিছু লাভ করেই তো বিক্রি করব। সিন্ডিকেট করে দাম বেশি রাখে কোম্পানিগুলো। সরকার কী দাম ঠিক করে দিল না দিল, তা নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। তারা নিজেদের মতো করেই দাম নির্ধারণ করে।

বাড়তি দামে গ্যাস বিক্রির বিষয়ে ক্ষুব্ধ ক্রেতাদের দাবি, প্রশাসনের নজরদারির অভাবে এভাবে পকেট থেকে বাড়তি টাকা দিতে হচ্ছে।

পলাশবাড়ী পৌর শহরের বাসিন্দা শাফিউর রহমান বলেন, কোনো জিনিসই সরকারের বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি হচ্ছে না। তার মধ্যে সিলিন্ডার গ্যাস একটি। এখন সরকার বিষয়টিতে নজরদারি করলে হয়তো কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসত। সরাসরি ডিলারের কাছ থেকে কিনলেও দাম বেশি রাখে। বেশি দামের বিষয়টি জানতে চাইলে নানা যুক্তি দেখায় ডিলাররা। দেখেন না, সরকার প্রতিমাসে দাম নির্ধারণ করে দিচ্ছে, এরপর তা বাস্তবায়ন হলো কি হলো না, তা দেখার দায়িত্ব প্রশাসনের না। কিন্তু মাঝে মাঝে বাজারে আসিয়ে অনেকটা দায়সারা কাজ করে চলে যায়। নাসরিন আক্তার নামে একজন বলেন,গ্যাস সিলিন্ডার কেনার পর ব্যবসায়ীদের কাছে ক্যাশ মেমো চাইলে তারা দেয়না। উল্টো নানান কথা বলে। প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে নজরদারি করা।’

বাড়তি দাম নেয়ার বিষয়ে উপজেলার বসুন্ধরা ও অরিন গ্যাসের ডিলার আল আমিন বলেন,বর্তমানে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহে সংকট হওয়ায় এতে করে কোম্পানি হতেই বেশি মূল্যে গ্যাস কিনতে হয় এছাড়াও গ্যাস সিলিন্ডার আনতে কোম্পানিতে গাড়ি পাঠানো হলে তা কয়েকদিন বসিয়ে রাখা হয়। এতে পরিবহন খরচও বেড়ে যায় এ-সব কারণে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করতে হয় বেশি দামে। বর্তমানে ডিলার মূল্য ১৫৫০ টাকা করে ১২ কেজি গ্যাস সিলিন্ডার কিনতে হচ্ছে আর খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছে ১৬০০ হতে ১৬৫০ টাকা দরে।

বিএম এবং টোটাল গ্যাসের ডিলার রায়হান আলী বলেন, আমরা নতুন দামে পাইকারি ১৪৬০ বিক্রি করি, ক্যাশ মেমো দিচ্ছি, কোন ডিলার যদি বেশি দাম রাখে এবং ক্যাশ মেমো না দেয় তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আর খুচরা বিক্রেতারা বেশি নিলে আমরা কি করবো। আমার দাবি প্রশাসন ডিলারদেরকে নিয়ে বৈঠক করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিক।

পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কামরুল হাসান বলেন, আমরা নিয়মিত বাজার মনিটর করছি, কোন ভোক্তা এখন পর্যন্ত অভিযোগ দেয়নি, কোনো ভোক্তা অভিযোগ করলে আমরা ভোক্তা আইনে ব্যবস্থা নেব। তারপরও এবিষয় আমরা খোঁজ খোবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

খবরটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024 thedailyagnishikha.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com