Dhaka 11:17 pm, Wednesday, 24 December 2025

খুলনা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ : পড়ানোয় মন নেই শিক্ষকদের, অবকাঠামোও নাজুক

Reporter Name
  • Update Time : 07:22:06 am, Saturday, 21 September 2024
  • / 259 Time View
৩০

মোঃ নাসির উদ্দীন গাজী,খুলনা বিভাগের বূরো চীপঃ খুলনা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষক, কর্মচারী নিয়মিত কলেজে উপস্থিত থাকেন না। অনেক শিক্ষক আছেন যারা মাসে একবার কলেজে আসেন। আবার অনেক শিক্ষক আছেন তারা শুধুমাত্র তাদের রুটিন ক্লাসের দিন উপস্থিত হন। বাকি সময় তারা কলেজে অনুপস্থিত থাকেন। প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষা কার্যক্রম বৃদ্ধি, শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি কিংবা গবেষণাধর্মী কোন কাজ নিয়ে প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ শিক্ষকদের কোন মাথা ব্যাথা নেই। নির্ধারিত ক্লাস শেষ হওয়ার পর তাদের আলোচনার বিষয়বস্তু একটাই সেটা হচ্ছে, কবে তাদের প্রোমোশন হবে? বেতন ভাতা বৃদ্ধি পাবে? নিজের সুযোগ-সুবিধা কিভাবে বৃদ্ধি করা যায় এ জাতীয় ব্যক্তিকেন্দ্রিক বিষয়াদি নিয়ে। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী কিভাবে বৃদ্ধি করা যায়? কিভাবে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া যায়? শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কিভাবে নিশ্চিত করা যায়? এসকল বিষয়াদি নিয়ে প্রিন্সিপাল ভাইস, প্রিন্সিপাল কিংবা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই। ফলশ্রুতিতে দিন দিন ঝিমিয়ে পড়ছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম। কমে যাচ্ছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। যার ফলে প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যত নিয়েও চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বিএড, প্রফেশনাল বি এড, অনার্স এবং এমএডসহ প্রতিষ্ঠানটিতে ৩’শ শিক্ষার্থী রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটিকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য উদ্ধতন কর্তৃপক্ষেরও বিন্দুমাত্র কোন নজর নেই। সদ্য পতন হওয়া শেখ হাসিনা সরকারের আমলে খুলনা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজসহ সারাদেশে যে ১৪ টি সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ রয়েছে সেগুলোর একাডেমিক এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনায়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কিংবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। যার কারনে প্রতিষ্ঠানগুলি ক্রমান্বয়ে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হচ্ছে।

এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনাকারী মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক, মহা-পরিচালক, পরিচালক, প্রশিক্ষক পদে যারা আসীন হন তারা সকলেই সরকারি জেনারেল কলেজের নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক। সুতরাং তাদের একটাই উদ্দেশ্য থাকে মন্ত্রী, এমপি দলীয় নেতাদের আশীর্বাদ নিয়ে কিভাবে পদোন্নতি নিবেন, নিজের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করবেন, তাদের কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য থাকে এগুলো। এজন্য সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজগুলোর কার্যক্রমের ব্যাপারে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করতে দেখা যায় না।

জানা যায়, খুলনা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. শেখ রেজাউল করিম দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। জুলাই মাসের শেষে একদিন সর্বশেষ প্রতিষ্ঠানে এসেছিলেন। ৫ ই আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিনি আর প্রতিষ্ঠানটিতে উপস্থিত হননি।

এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল প্রফেসর ড. শেখ রেজাউল করিমের সঙ্গে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

প্রতিষ্ঠানের ভাইস-প্রিন্সিপাল রহিমা খাতুন খুলনা গেজেটকে বলেন, টিচারদের সম্পর্কে ঢালাওভাবে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে এটা সঠিক নয়। একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব আমার। কিন্তু প্রশাসনিক,আর্থিক বিষয়গুলো দেখভালের দায়িত্ব প্রিন্সিপালের। শিক্ষকদের উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিন্তের দায়িত্ব প্রিন্সিপাল স্যারের। শিক্ষকদের রুটিন মাফিক ক্লাস নেওয়া বাধ্যতামূলক। এ ব্যাপারে কোন শিক্ষকের ছাড় দেওয়া হয় না। আমাদের যারা শিক্ষক আছেন সবাই নিয়মিত ক্লাস নিয়ে থাকেন। এখানে ক্লাস ফাঁকি দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। কোন শিক্ষক অনুপস্থিত থাকলে তার ক্লাস অন্য শিক্ষকদের দিয়ে নিশ্চিত করা হয়।খুলনা সরকারি টিচার ট্রেনিং কলেজের আওতাধীন ২৬ টি স্কুল রয়েছে। সে স্কুলগুলোতোও দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা নিয়মিত ভিজিট করে থাকেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে টেলিফোনে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ক্লাসে উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করে থাকে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

খুলনা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ : পড়ানোয় মন নেই শিক্ষকদের, অবকাঠামোও নাজুক

Update Time : 07:22:06 am, Saturday, 21 September 2024
৩০

মোঃ নাসির উদ্দীন গাজী,খুলনা বিভাগের বূরো চীপঃ খুলনা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষক, কর্মচারী নিয়মিত কলেজে উপস্থিত থাকেন না। অনেক শিক্ষক আছেন যারা মাসে একবার কলেজে আসেন। আবার অনেক শিক্ষক আছেন তারা শুধুমাত্র তাদের রুটিন ক্লাসের দিন উপস্থিত হন। বাকি সময় তারা কলেজে অনুপস্থিত থাকেন। প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষা কার্যক্রম বৃদ্ধি, শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি কিংবা গবেষণাধর্মী কোন কাজ নিয়ে প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ শিক্ষকদের কোন মাথা ব্যাথা নেই। নির্ধারিত ক্লাস শেষ হওয়ার পর তাদের আলোচনার বিষয়বস্তু একটাই সেটা হচ্ছে, কবে তাদের প্রোমোশন হবে? বেতন ভাতা বৃদ্ধি পাবে? নিজের সুযোগ-সুবিধা কিভাবে বৃদ্ধি করা যায় এ জাতীয় ব্যক্তিকেন্দ্রিক বিষয়াদি নিয়ে। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী কিভাবে বৃদ্ধি করা যায়? কিভাবে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া যায়? শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কিভাবে নিশ্চিত করা যায়? এসকল বিষয়াদি নিয়ে প্রিন্সিপাল ভাইস, প্রিন্সিপাল কিংবা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই। ফলশ্রুতিতে দিন দিন ঝিমিয়ে পড়ছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম। কমে যাচ্ছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। যার ফলে প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যত নিয়েও চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বিএড, প্রফেশনাল বি এড, অনার্স এবং এমএডসহ প্রতিষ্ঠানটিতে ৩’শ শিক্ষার্থী রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটিকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য উদ্ধতন কর্তৃপক্ষেরও বিন্দুমাত্র কোন নজর নেই। সদ্য পতন হওয়া শেখ হাসিনা সরকারের আমলে খুলনা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজসহ সারাদেশে যে ১৪ টি সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ রয়েছে সেগুলোর একাডেমিক এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনায়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কিংবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। যার কারনে প্রতিষ্ঠানগুলি ক্রমান্বয়ে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হচ্ছে।

এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনাকারী মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক, মহা-পরিচালক, পরিচালক, প্রশিক্ষক পদে যারা আসীন হন তারা সকলেই সরকারি জেনারেল কলেজের নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক। সুতরাং তাদের একটাই উদ্দেশ্য থাকে মন্ত্রী, এমপি দলীয় নেতাদের আশীর্বাদ নিয়ে কিভাবে পদোন্নতি নিবেন, নিজের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করবেন, তাদের কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য থাকে এগুলো। এজন্য সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজগুলোর কার্যক্রমের ব্যাপারে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করতে দেখা যায় না।

জানা যায়, খুলনা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. শেখ রেজাউল করিম দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। জুলাই মাসের শেষে একদিন সর্বশেষ প্রতিষ্ঠানে এসেছিলেন। ৫ ই আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিনি আর প্রতিষ্ঠানটিতে উপস্থিত হননি।

এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল প্রফেসর ড. শেখ রেজাউল করিমের সঙ্গে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

প্রতিষ্ঠানের ভাইস-প্রিন্সিপাল রহিমা খাতুন খুলনা গেজেটকে বলেন, টিচারদের সম্পর্কে ঢালাওভাবে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে এটা সঠিক নয়। একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব আমার। কিন্তু প্রশাসনিক,আর্থিক বিষয়গুলো দেখভালের দায়িত্ব প্রিন্সিপালের। শিক্ষকদের উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিন্তের দায়িত্ব প্রিন্সিপাল স্যারের। শিক্ষকদের রুটিন মাফিক ক্লাস নেওয়া বাধ্যতামূলক। এ ব্যাপারে কোন শিক্ষকের ছাড় দেওয়া হয় না। আমাদের যারা শিক্ষক আছেন সবাই নিয়মিত ক্লাস নিয়ে থাকেন। এখানে ক্লাস ফাঁকি দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। কোন শিক্ষক অনুপস্থিত থাকলে তার ক্লাস অন্য শিক্ষকদের দিয়ে নিশ্চিত করা হয়।খুলনা সরকারি টিচার ট্রেনিং কলেজের আওতাধীন ২৬ টি স্কুল রয়েছে। সে স্কুলগুলোতোও দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা নিয়মিত ভিজিট করে থাকেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে টেলিফোনে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ক্লাসে উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করে থাকে।