Dhaka 7:22 am, Sunday, 23 November 2025

চট্টগ্রাম আদালত সংলগ্ন স্লোগানে উত্তাল, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’

  • Reporter Name
  • Update Time : 04:02:59 pm, Wednesday, 31 July 2024
  • 264 Time View
মাসুদ পারভেজ বিভাগীয় ব্যুরো
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সারাদেশে শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগানে উত্তাল আদালত সংলগ্ন পুরো এলাকা।
বুধবার (৩১ জুলাই) বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সামনে থেকে শুরু হয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দেশব্যাপী ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষার্থী ও আইনজীবীদের মিছিলটি আদালতের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে মূল সড়কে আসলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। এ সময় রাস্তা থেকে সরে গিয়ে বিক্ষোভকারীরা আদালতের আইনজীবী চত্বরে সমবেত হয়ে স্লোগান দিতে থাকে। পুলিশের একটি দল শিক্ষার্থীদের মিছিল লক্ষ্য করে এগোতে চাইলে আইনজীবীদের একটি দল পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের মাঝে অবস্থান নেন। আইনজীবীরা এ সময় পুলিশকে আদালত এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানান। পরে পুলিশ ও বিজিবির কয়েকটি দল আদালত ভবনের প্রবেশ গেটে অবস্থান নেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে?’, ‘আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’ সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
বিক্ষোভ চলাকালে দুপুর ১২টার দিকে তাদের সঙ্গে যোগ দেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি।
রাফি বলেন, খুব সাধারণ একটি দাবি আমরা জানিয়েছিলাম। সেজন্য আড়াই শতাধিক ছাত্র জনতার রক্ত নিয়েছে সরকার। আমরা সেই রক্তের সঙ্গে বেইমানি করতে পারবো না। ৯ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষার্থী নাসরিন মুনতাহা  বলেন, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে গুলি চালানো হচ্ছে। দিনে রাস্তা থেকে, রাতে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা এর বিচার চাইতে এসেছি।
দুপুর সোয়া ১২টার দিকে শুরু হয় বৃষ্টি। প্রায় আধা ঘণ্টার বৃষ্টিতেও শিক্ষার্থীরা স্থান না ছেড়ে আদালত চত্বরে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর একটা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বেশ কয়েকটি মিছিল বিক্ষোভে যোগ দেয়। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম কলেজ, মহসিন কলেজ ও নগরের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্কুল কলেজের প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী বিক্ষোভে অংশ নেয়। সঙ্গে যোগ দেন উৎসুক জনতা ও আইনজীবীরা।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অংশ নেন অনেক অভিভাবক। তাদের একজন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা মুনমুন সরকার। তিনি বলেন, ‌আমাদের বাচ্চাদের গুলি করে রাস্তায় মারা হচ্ছে। তাই আমরা তাদের পাশে দাঁড়াতে এসেছি। আর একটা ছাত্রের ওপরও যেন গুলি না হয় সেটার নিশ্চয়তা চাইতে আমরা এসেছি।
এক চিকিৎসক বাবা আসেন বিক্ষোভে। তিনি বলেন, আমার বাচ্চা এখনো ছোট। সে যখন বড় হবে তখন যেন তাকে গুলি খেয়ে মরতে না হয়, সেই ভবিষ্যতের দাবিতে আমরা এসেছি।
ছাত্রদের বিক্ষোভে বক্তব্য দেন চট্টগ্রামের আইনজীবী আশরাফ হোসেন চৌধুরী সাত্তার বলেন, যে কোনো দাবিতে প্রতিবাদ জানানো নাগরিকদের অধিকার। কিছু দাবি করলেই তাকে গুলি করে মারতে হবে, এটা হতে পারে না। আমরা জাতিসংঘের অধীনে শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা গণহত্যার বিচার চাই। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরা একাত্মতা ঘোষণা করছি।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Murad Ahmed

Popular Post

ফতুল্লা থানা পুলিশ ০৯ (নয়) বোতল ফেন্সিডিল সহ ০২ (দুই) জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে

চট্টগ্রাম আদালত সংলগ্ন স্লোগানে উত্তাল, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’

Update Time : 04:02:59 pm, Wednesday, 31 July 2024
মাসুদ পারভেজ বিভাগীয় ব্যুরো
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সারাদেশে শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগানে উত্তাল আদালত সংলগ্ন পুরো এলাকা।
বুধবার (৩১ জুলাই) বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সামনে থেকে শুরু হয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দেশব্যাপী ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষার্থী ও আইনজীবীদের মিছিলটি আদালতের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে মূল সড়কে আসলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। এ সময় রাস্তা থেকে সরে গিয়ে বিক্ষোভকারীরা আদালতের আইনজীবী চত্বরে সমবেত হয়ে স্লোগান দিতে থাকে। পুলিশের একটি দল শিক্ষার্থীদের মিছিল লক্ষ্য করে এগোতে চাইলে আইনজীবীদের একটি দল পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের মাঝে অবস্থান নেন। আইনজীবীরা এ সময় পুলিশকে আদালত এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানান। পরে পুলিশ ও বিজিবির কয়েকটি দল আদালত ভবনের প্রবেশ গেটে অবস্থান নেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে?’, ‘আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’ সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
বিক্ষোভ চলাকালে দুপুর ১২টার দিকে তাদের সঙ্গে যোগ দেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি।
রাফি বলেন, খুব সাধারণ একটি দাবি আমরা জানিয়েছিলাম। সেজন্য আড়াই শতাধিক ছাত্র জনতার রক্ত নিয়েছে সরকার। আমরা সেই রক্তের সঙ্গে বেইমানি করতে পারবো না। ৯ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষার্থী নাসরিন মুনতাহা  বলেন, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে গুলি চালানো হচ্ছে। দিনে রাস্তা থেকে, রাতে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা এর বিচার চাইতে এসেছি।
দুপুর সোয়া ১২টার দিকে শুরু হয় বৃষ্টি। প্রায় আধা ঘণ্টার বৃষ্টিতেও শিক্ষার্থীরা স্থান না ছেড়ে আদালত চত্বরে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর একটা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বেশ কয়েকটি মিছিল বিক্ষোভে যোগ দেয়। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম কলেজ, মহসিন কলেজ ও নগরের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্কুল কলেজের প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী বিক্ষোভে অংশ নেয়। সঙ্গে যোগ দেন উৎসুক জনতা ও আইনজীবীরা।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অংশ নেন অনেক অভিভাবক। তাদের একজন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা মুনমুন সরকার। তিনি বলেন, ‌আমাদের বাচ্চাদের গুলি করে রাস্তায় মারা হচ্ছে। তাই আমরা তাদের পাশে দাঁড়াতে এসেছি। আর একটা ছাত্রের ওপরও যেন গুলি না হয় সেটার নিশ্চয়তা চাইতে আমরা এসেছি।
এক চিকিৎসক বাবা আসেন বিক্ষোভে। তিনি বলেন, আমার বাচ্চা এখনো ছোট। সে যখন বড় হবে তখন যেন তাকে গুলি খেয়ে মরতে না হয়, সেই ভবিষ্যতের দাবিতে আমরা এসেছি।
ছাত্রদের বিক্ষোভে বক্তব্য দেন চট্টগ্রামের আইনজীবী আশরাফ হোসেন চৌধুরী সাত্তার বলেন, যে কোনো দাবিতে প্রতিবাদ জানানো নাগরিকদের অধিকার। কিছু দাবি করলেই তাকে গুলি করে মারতে হবে, এটা হতে পারে না। আমরা জাতিসংঘের অধীনে শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা গণহত্যার বিচার চাই। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরা একাত্মতা ঘোষণা করছি।