Dhaka 1:27 am, Wednesday, 17 December 2025

পলাশবাড়ীতে ভুট্টার বাম্পার ফলন

Reporter Name
  • Update Time : 10:33:20 am, Wednesday, 15 May 2024
  • / 331 Time View
৩৪
মিলন মন্ডল,পলাশবাড়ী(গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় কৃষকরা ব্যাপক হারে ভুট্টার আবাদ করছেন। বিগত বছরগুলোতে ভুট্টার ভালো ফলন ও দাম বেশি পাওয়ায় এলাকার কৃষকরা অন্যান্য ফসলের চেয়ে ভুট্টা আবাদের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ছেন।
এছাড়া এ ফসলে অল্প পুঁজি ও পরিশ্রমে অধিক লাভবান হওয়া যায়। করতোয়া ও মৎচ নদের বুকে জেগে ওঠা সাড়ি সাড়ি ভুট্টার গাছ যেন সবুজের চাদরে ঢেকে দিয়েছে গোটা এলাকা।
কৃষি বিভাগ সুত্রে জানাযায়  চলতি মৌসুমে পলাশবাড়ীর ১টি পৌরসভা এবং ৮ ইউনিয়নে মোট ১ হাজার ৬১  হেক্টর জমিতে ভূট্টার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল।যা ফলনে ১১ হার ৯শ ৮৯ মে: টন।তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে বলে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের জাফর, মুংলিশপুর, পশ্চিম নয়ানপুর, বেড়াডাঙ্গা, তেকানী, চকবালা, কিশোরগাড়ী, বড় শিমুলতলা, বুজরুক টেংরা, খোর্দ্দটেংরা, সগুনা, পশ্চিম রামচন্দ্রপুর, গণেশপুর, সুলতানপুর বাড়াইপাড়া, দিঘলকান্দি, ফলিয়া, আসমতপুর, বেংগুলিয়া, হোসেনপুর ইউনিয়নের করতোয়াপাাড়া, হোসেনপুর, শিশুদহ, খাসবাড়ী, চেরেঙ্গা, কিশামত চেরেঙ্গা, আকবরনগর, রামকৃষ্ণপুর, পশ্চিম ফরিদপুর, কলাগাছি, করিয়াটা, শালমালা, কয়ারপাড়া, রামচন্দ্রপুর, পলাশবাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিম গোয়ালপাড়া, নুরপুর, হিজলগাড়ী, ছোট সিধনগ্রাম, ছোটশিমুলতলা, বাঁশকাটা, মহেশপুর ছাড়াও উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়ন গুলোতে এবারে ব্যাপক ভুট্টার চাষ হয়েছে।
 উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের চকবালা গ্রামের ভুট্টাচাষী আতোয়ার , কিশোরগাড়ীর আশরাফুল  ইসলাম ও সগুনার শামীম মিয়া বলেন, প্রতি বছর আমরা আগাম জাতের ভুট্টার চাষ করে থাকি। ভুট্টার চাষ কম বেশি যাই হোক না কেন সেটা বিষয় নয়। চাই ভুট্টার সুষ্ঠু বাজার দর। সরকারীভাবে ভুট্টার বাজার দর বেধে দিলে কৃষকরা উপকৃত হবেন।
কৃষকরা আরো বলেন, এ উপজেলায় হাইব্রিড জাতের সুপার সাইন ২৭৫৫, ৭৬০, কাবেরি ৫৪, প্যাসিফিক ৫৫৫, ৯৮৪, সিনজেন্টা এনএইচ ৭৭২০, ডিকাল্ব ৯১২০, ৯১৬৫ জাতের ভূট্টার ফলন বেশি হয়ে থাকে। ভুট্টা চাষে সেচ, সার ও কীটনাশক খুব বেশি দরকার পড়ে না বিধায় একদিকে খরচ কম অন্যদিকে ফলনও বেশি। কারণ হিসেবে ভূট্টা চাষীরা আরো বলেন, ভরা মৌসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলেও এ ফসলের তেমন একটা ক্ষতি হয় না। কিন্তু অন্যান্য ফসলে কৃষকরা আর্থিকভাবে লোকসানের সম্মুখীন হন। অন্যদিকে রবি মৌসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়লেও ভুট্টার ফলন তুলনামূলক ভালো পাওয়া যায়। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে কৃষকরা বিঘা প্রতি ২৮ থেকে ৩৪ মণ ভুট্টার ফলন পেতে পারে যার বর্তমান বাজার মূল্য মণ প্রতি ১০৬০ থেকে ১১২০ টাকা। কৃষকদের আশা, সরকারিভাবে কৃষি বিভাগ যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তার চেয়ে বেশি পরিমাণ ভুট্টা চাষ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোছা. ফাতেমা কাওসার মিশু জানান, প্রাকৃতিকভাবে শহনশীল, অল্প খরচ, রোগবালাই কম এবং অধিক ফলনের কারণে রবি মৌসুমে ভুট্টার চাষ বেশি হয়ে থাকে। নতুন জাত সর্ম্পকে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর মাধ্যমে আমরা উদ্ধুদ্ধ করে যাচ্ছি। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের নানামুখী সহায়তা করা ছাড়াও মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক নিয়োজিত আছে।
Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

পলাশবাড়ীতে ভুট্টার বাম্পার ফলন

Update Time : 10:33:20 am, Wednesday, 15 May 2024
৩৪
মিলন মন্ডল,পলাশবাড়ী(গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় কৃষকরা ব্যাপক হারে ভুট্টার আবাদ করছেন। বিগত বছরগুলোতে ভুট্টার ভালো ফলন ও দাম বেশি পাওয়ায় এলাকার কৃষকরা অন্যান্য ফসলের চেয়ে ভুট্টা আবাদের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ছেন।
এছাড়া এ ফসলে অল্প পুঁজি ও পরিশ্রমে অধিক লাভবান হওয়া যায়। করতোয়া ও মৎচ নদের বুকে জেগে ওঠা সাড়ি সাড়ি ভুট্টার গাছ যেন সবুজের চাদরে ঢেকে দিয়েছে গোটা এলাকা।
কৃষি বিভাগ সুত্রে জানাযায়  চলতি মৌসুমে পলাশবাড়ীর ১টি পৌরসভা এবং ৮ ইউনিয়নে মোট ১ হাজার ৬১  হেক্টর জমিতে ভূট্টার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল।যা ফলনে ১১ হার ৯শ ৮৯ মে: টন।তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে বলে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের জাফর, মুংলিশপুর, পশ্চিম নয়ানপুর, বেড়াডাঙ্গা, তেকানী, চকবালা, কিশোরগাড়ী, বড় শিমুলতলা, বুজরুক টেংরা, খোর্দ্দটেংরা, সগুনা, পশ্চিম রামচন্দ্রপুর, গণেশপুর, সুলতানপুর বাড়াইপাড়া, দিঘলকান্দি, ফলিয়া, আসমতপুর, বেংগুলিয়া, হোসেনপুর ইউনিয়নের করতোয়াপাাড়া, হোসেনপুর, শিশুদহ, খাসবাড়ী, চেরেঙ্গা, কিশামত চেরেঙ্গা, আকবরনগর, রামকৃষ্ণপুর, পশ্চিম ফরিদপুর, কলাগাছি, করিয়াটা, শালমালা, কয়ারপাড়া, রামচন্দ্রপুর, পলাশবাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিম গোয়ালপাড়া, নুরপুর, হিজলগাড়ী, ছোট সিধনগ্রাম, ছোটশিমুলতলা, বাঁশকাটা, মহেশপুর ছাড়াও উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়ন গুলোতে এবারে ব্যাপক ভুট্টার চাষ হয়েছে।
 উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের চকবালা গ্রামের ভুট্টাচাষী আতোয়ার , কিশোরগাড়ীর আশরাফুল  ইসলাম ও সগুনার শামীম মিয়া বলেন, প্রতি বছর আমরা আগাম জাতের ভুট্টার চাষ করে থাকি। ভুট্টার চাষ কম বেশি যাই হোক না কেন সেটা বিষয় নয়। চাই ভুট্টার সুষ্ঠু বাজার দর। সরকারীভাবে ভুট্টার বাজার দর বেধে দিলে কৃষকরা উপকৃত হবেন।
কৃষকরা আরো বলেন, এ উপজেলায় হাইব্রিড জাতের সুপার সাইন ২৭৫৫, ৭৬০, কাবেরি ৫৪, প্যাসিফিক ৫৫৫, ৯৮৪, সিনজেন্টা এনএইচ ৭৭২০, ডিকাল্ব ৯১২০, ৯১৬৫ জাতের ভূট্টার ফলন বেশি হয়ে থাকে। ভুট্টা চাষে সেচ, সার ও কীটনাশক খুব বেশি দরকার পড়ে না বিধায় একদিকে খরচ কম অন্যদিকে ফলনও বেশি। কারণ হিসেবে ভূট্টা চাষীরা আরো বলেন, ভরা মৌসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলেও এ ফসলের তেমন একটা ক্ষতি হয় না। কিন্তু অন্যান্য ফসলে কৃষকরা আর্থিকভাবে লোকসানের সম্মুখীন হন। অন্যদিকে রবি মৌসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়লেও ভুট্টার ফলন তুলনামূলক ভালো পাওয়া যায়। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে কৃষকরা বিঘা প্রতি ২৮ থেকে ৩৪ মণ ভুট্টার ফলন পেতে পারে যার বর্তমান বাজার মূল্য মণ প্রতি ১০৬০ থেকে ১১২০ টাকা। কৃষকদের আশা, সরকারিভাবে কৃষি বিভাগ যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তার চেয়ে বেশি পরিমাণ ভুট্টা চাষ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোছা. ফাতেমা কাওসার মিশু জানান, প্রাকৃতিকভাবে শহনশীল, অল্প খরচ, রোগবালাই কম এবং অধিক ফলনের কারণে রবি মৌসুমে ভুট্টার চাষ বেশি হয়ে থাকে। নতুন জাত সর্ম্পকে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর মাধ্যমে আমরা উদ্ধুদ্ধ করে যাচ্ছি। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের নানামুখী সহায়তা করা ছাড়াও মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক নিয়োজিত আছে।