Dhaka 5:34 pm, Tuesday, 2 December 2025

চমেক হাসপাতালের ক্যাথল্যাব বন্ধ, বিপাকে রোগীরা

Reporter Name
  • Update Time : 08:53:42 am, Thursday, 11 January 2024
  • / 368 Time View
১৮

মাসুদ পারভেজ, বিভাগীয় ব্যুরোচীফ চট্টগ্রামঃ চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি থেকে বন্ধ হয়ে গেছে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের ক্যাথল্যাবে স্থাপিত এনজিওগ্রাম মেশিন। ফলে এ বিভাগে গত ৭ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে রোগীদের পেসমেকার স্থাপন, করোনারি এনজিওগ্রাম, এনজিওপ্লাস্টি ও ভাল্ব সম্প্রসারণের (পিটিএমসি) মতো জীবনরক্ষাকারী আধুনিক চিকিৎসা।

নামমাত্র মূল্যে হৃদরোগীদের হার্টের রিং পরানো হয় বলে হাসপাতালটির হৃদরোগ বিভাগে রোগীর চাপ থাকে অনেক বেশি। হঠাৎ এ সেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন রোগীরা।

এ হাসপাতালে দুটি ক্যাথল্যাব থাকলেও ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে বন্ধ আছে একটি। বাকি ক্যাথল্যাব দিয়ে এতদিন কাজ চললেও এবার সেটিও বন্ধ হয়ে গেল।

জানা গেছে, চলতি বছরের ২ জানুয়ারি এনজিওগ্রাম মেশিনে বেশ কয়েকবার সমস্যা দেখা দেয়। সর্বশেষ ৪ জানুয়ারি এক রোগীর হার্টে রিং পড়ানোর সময় হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়।এরপর থেকে সচল হয়নি মেশিনটি।

হৃদরোগ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চালু থাকা অবস্থায় একমাত্র মেশিনটিতে দৈনিক গড়ে ১৫-২০টি এনজিওগ্রাম এবং ৫-৬টি রিং স্থাপনের কাজ হতো। এর বাইরে পার্মানেন্ট পেস মেকার (পিপিএম) স্থাপন ও পেরিপাইরাল এনজিওগ্রামের কাজও চলতো একই মেশিনে। অতিরিক্ত চাপের কারণে মাঝে মাঝে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিতো মেশিনে।

৫ কোটি ৭৬ লাখ ২৯ হাজার ৬১০ টাকা মূল্যের জাপানের শিমার্জু ব্র্যান্ডের এনজিওগ্রাম মেশিনটি সরবরাহ করে মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেড নামে বাংলাদেশি একটি প্রতিষ্ঠান। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে মেশিনটি স্থাপন করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী মেশিনটির ওয়ারেন্টি সময়কাল ছিল সাত বছর। ওয়ারেন্টি শেষ হওয়ার আগেই মেশিনটি অকেজো হয়ে পড়ে।

চমেক হাসপাতাল হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. আশীষ দে বলেন, একটি মেশিন আগে থেকে নষ্ট ছিল। গত ৪ জানুয়ারি থেকে বাকি মেশিনটিও অচল হয়ে গেছে। এক রোগীর রিং পরানোর সময় হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় মেশিনটি। এরপর আর চালু করা যায়নি। রোগীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। দ্রুত মেশিনটি সচল করা প্রয়োজন। বিষয়টি হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

এদিকে, ক্যাথল্যাবের এনজিওগ্রাম মেশিনের ত্রুটি চিহ্নিত করতে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীরা চমেক হাসপাতালে আসেন গত মঙ্গলবার। দীর্ঘসময় চেষ্টা করেও মেশিনটির ত্রুটি চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হন তারা।

এনজিওগ্রাম মেশিন বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি অবহিত করে গত ৬ জানুয়ারি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান।

তিনি বলেন, অকেজো হওয়ার পর সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে খবর দিলে তাদের ইঞ্জিনিয়াররা এসেছিল। তারা কিছুদিন সময় চেয়েছে। বিষয়টি ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করা হয়েছে। হৃদরোগ বিভাগ যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ, তাই আমরা বিষয়টি সমাধানে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি।

চট্টগ্রামে সরকারিভাবে চালু থাকা একমাত্র ক্যাথল্যাব অকেজো থাকায় গত এক সপ্তাহ ধরে রিং পরানো কিংবা এনজিওগ্রাম পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোগীদের। জরুরি মুহূর্তে রোগীদের বাধ্য হয়ে বেসরকারি হাসপাতালে যেতে হচ্ছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

চমেক হাসপাতালের ক্যাথল্যাব বন্ধ, বিপাকে রোগীরা

Update Time : 08:53:42 am, Thursday, 11 January 2024
১৮

মাসুদ পারভেজ, বিভাগীয় ব্যুরোচীফ চট্টগ্রামঃ চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি থেকে বন্ধ হয়ে গেছে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের ক্যাথল্যাবে স্থাপিত এনজিওগ্রাম মেশিন। ফলে এ বিভাগে গত ৭ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে রোগীদের পেসমেকার স্থাপন, করোনারি এনজিওগ্রাম, এনজিওপ্লাস্টি ও ভাল্ব সম্প্রসারণের (পিটিএমসি) মতো জীবনরক্ষাকারী আধুনিক চিকিৎসা।

নামমাত্র মূল্যে হৃদরোগীদের হার্টের রিং পরানো হয় বলে হাসপাতালটির হৃদরোগ বিভাগে রোগীর চাপ থাকে অনেক বেশি। হঠাৎ এ সেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন রোগীরা।

এ হাসপাতালে দুটি ক্যাথল্যাব থাকলেও ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে বন্ধ আছে একটি। বাকি ক্যাথল্যাব দিয়ে এতদিন কাজ চললেও এবার সেটিও বন্ধ হয়ে গেল।

জানা গেছে, চলতি বছরের ২ জানুয়ারি এনজিওগ্রাম মেশিনে বেশ কয়েকবার সমস্যা দেখা দেয়। সর্বশেষ ৪ জানুয়ারি এক রোগীর হার্টে রিং পড়ানোর সময় হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়।এরপর থেকে সচল হয়নি মেশিনটি।

হৃদরোগ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চালু থাকা অবস্থায় একমাত্র মেশিনটিতে দৈনিক গড়ে ১৫-২০টি এনজিওগ্রাম এবং ৫-৬টি রিং স্থাপনের কাজ হতো। এর বাইরে পার্মানেন্ট পেস মেকার (পিপিএম) স্থাপন ও পেরিপাইরাল এনজিওগ্রামের কাজও চলতো একই মেশিনে। অতিরিক্ত চাপের কারণে মাঝে মাঝে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিতো মেশিনে।

৫ কোটি ৭৬ লাখ ২৯ হাজার ৬১০ টাকা মূল্যের জাপানের শিমার্জু ব্র্যান্ডের এনজিওগ্রাম মেশিনটি সরবরাহ করে মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেড নামে বাংলাদেশি একটি প্রতিষ্ঠান। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে মেশিনটি স্থাপন করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী মেশিনটির ওয়ারেন্টি সময়কাল ছিল সাত বছর। ওয়ারেন্টি শেষ হওয়ার আগেই মেশিনটি অকেজো হয়ে পড়ে।

চমেক হাসপাতাল হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. আশীষ দে বলেন, একটি মেশিন আগে থেকে নষ্ট ছিল। গত ৪ জানুয়ারি থেকে বাকি মেশিনটিও অচল হয়ে গেছে। এক রোগীর রিং পরানোর সময় হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় মেশিনটি। এরপর আর চালু করা যায়নি। রোগীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। দ্রুত মেশিনটি সচল করা প্রয়োজন। বিষয়টি হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

এদিকে, ক্যাথল্যাবের এনজিওগ্রাম মেশিনের ত্রুটি চিহ্নিত করতে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীরা চমেক হাসপাতালে আসেন গত মঙ্গলবার। দীর্ঘসময় চেষ্টা করেও মেশিনটির ত্রুটি চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হন তারা।

এনজিওগ্রাম মেশিন বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি অবহিত করে গত ৬ জানুয়ারি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান।

তিনি বলেন, অকেজো হওয়ার পর সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে খবর দিলে তাদের ইঞ্জিনিয়াররা এসেছিল। তারা কিছুদিন সময় চেয়েছে। বিষয়টি ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করা হয়েছে। হৃদরোগ বিভাগ যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ, তাই আমরা বিষয়টি সমাধানে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি।

চট্টগ্রামে সরকারিভাবে চালু থাকা একমাত্র ক্যাথল্যাব অকেজো থাকায় গত এক সপ্তাহ ধরে রিং পরানো কিংবা এনজিওগ্রাম পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোগীদের। জরুরি মুহূর্তে রোগীদের বাধ্য হয়ে বেসরকারি হাসপাতালে যেতে হচ্ছে।