Dhaka 12:25 pm, Sunday, 7 December 2025

রাস্তা কাটা নিয়ে ওয়াসার বিরুদ্ধে আবার ক্ষোভ

Reporter Name
  • Update Time : 05:08:33 am, Tuesday, 30 July 2024
  • / 259 Time View
১৫
মাসুদ পারভেজ বিভাগীয় ব্যুরো
নগরের বিভিন্ন জায়গায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) কর্তৃক নতুন করে নির্মিত সড়ক কিছুদিনের মধ্যেই পাইপলাইন বসানোর জন্য কেটে ফেলে ওয়াসা–এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। আবার মাসের পর মাস চলে গেলেও ওসব সড়ক সংস্কার করা হয় না। সংস্কার করলেও তা পরিপূর্ণ হয় না। এতে ভোগান্তি বাড়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার সাধারণ মানুষের। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ আছে স্থানীয়দের। এবার সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটল চসিকের সাধারণ সভায়।
গতকাল সকালে লালদিঘি পাড় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় সাধারণ সভা। এতে ২৬ নং উত্তর হালিশহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ইলিয়াস আলী তার ওয়ার্ডে ওয়াসার পাইপলাইন বসানোর জন্য কেটে ফেলা সড়ক নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিষয়টি নিয়ে ওয়াসার বিরুদ্ধে সাধারণ সভায় অভিযোগ করেন চসিকের এক নির্বাহী প্রকৌশলীও। এ সময় সভায় উপস্থিত ওয়াসার একজন নির্বাহী প্রকৌশলীকে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করার নির্দেনা দেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কাউন্সিলর মো. ইলিয়াস আলী আজাদীকে বলেন, হালিশহর বি ব্লক ৬ নম্বর লেইনটি কাটার পর ছয় মাস হয়ে গেছে। এখনো সলিং করেনি। ওয়াসাকে বারবার বলার পরও কাজ হচ্ছে না। আব্বাসপাড়া সংযোগ সড়ক কিছুদিন আগে ঢালাই করেছি। এখন আবার ওয়াসা কাটাকাটি করছে। সড়কটি যে তারা কাটবে তা আগে বললেই তো হতো।
তিনি বলেন, গত বছর বর্ষায় আমরা অনুরোধ করে বড় রাস্তা কাটা থেকে বিরত রেখেছিলাম। এবার কিন্তু বর্ষার মধ্যেই তারা সড়ক কাটছে। কাটার পর সড়ক ম্যাকাডম দিয়ে সলিং করে ঠিক করে দেওয়ার কথা। কিন্তু তারা মাটি দিয়ে ভরাট করে দেয়। ফলে বৃষ্টি হলে সেখানে গর্ত হয়ে যায়। ওয়াসা তো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিয়ে কাজ করায়। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ঠিকভাবে তদারকি করলে এমন সমস্যা হতো না।
এ বিষয়ে মেয়র কী নির্দেশনা দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওয়াসাকে সমন্বয় করে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন মেয়র মহোদয়।
এদিকে চসিকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাধারণ সভায় একাধিক কাউন্সিলর ওয়াসার প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ওয়াসা নতুন সড়ক করার পর কেটে ফেলছে। চসিক সড়ক নির্মাণের সময় সড়কের নিচে ম্যাকাডম, বালু, ইট, পাথরসহ যেসব নির্মাণ সামগ্রী দেয় ওয়াসার ঠিকাদাররা রাস্তা কাটার পর তা নিয়ে যায় এবং কাজের পর সাধারণ মাটি দিয়ে গর্ত পূরণ করে দেয়। ফলে বর্ষার সময় সেই মাটি নিচু হয়ে রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। তা নাগরিকদের সীমাহীন দুর্ভোগের কারণ হয়। কাউন্সিলররা ওয়াসাকে কোনো রাস্তা কাটার আগে সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলর ও নির্বাহী প্রকৌশলীকে অবহিত করতে ওয়াসা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চসিকের এক নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, একটা রাস্তায় তো ম্যাকাডম, সলিংসহ কয়েকটা লেয়ার থাকে। ওয়াসা যখন খনন করে বা পাইপ বসায় তখন রাস্তার মালামালগুলো নিয়ে যায় তাদের ঠিকাদাররা। তারা ম্যাকাডম দিয়ে কম্পাকশন করে না। কোনোমতে মাটি দিয়ে ঠিক করে দেয়। ফলে তা টেকসই হয় না।
এদিকে সভায় ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রউফ বলেন, চট্টগ্রাম ওয়াটার সাপ্লাই ইম্প্রুভমেন্ট প্রকল্প একনেকে পাশ ও বাস্তবায়িত হলে ৪০ ও ৪১ নং ওয়ার্ডে সুপেয় পানির হাহাকার থাকবে না। মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ওয়াসার যে কার্যক্রম চলছে তা শেষ হলে চট্টগ্রামের পরিবেশের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে।
Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

রাস্তা কাটা নিয়ে ওয়াসার বিরুদ্ধে আবার ক্ষোভ

Update Time : 05:08:33 am, Tuesday, 30 July 2024
১৫
মাসুদ পারভেজ বিভাগীয় ব্যুরো
নগরের বিভিন্ন জায়গায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) কর্তৃক নতুন করে নির্মিত সড়ক কিছুদিনের মধ্যেই পাইপলাইন বসানোর জন্য কেটে ফেলে ওয়াসা–এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। আবার মাসের পর মাস চলে গেলেও ওসব সড়ক সংস্কার করা হয় না। সংস্কার করলেও তা পরিপূর্ণ হয় না। এতে ভোগান্তি বাড়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার সাধারণ মানুষের। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ আছে স্থানীয়দের। এবার সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটল চসিকের সাধারণ সভায়।
গতকাল সকালে লালদিঘি পাড় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় সাধারণ সভা। এতে ২৬ নং উত্তর হালিশহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ইলিয়াস আলী তার ওয়ার্ডে ওয়াসার পাইপলাইন বসানোর জন্য কেটে ফেলা সড়ক নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিষয়টি নিয়ে ওয়াসার বিরুদ্ধে সাধারণ সভায় অভিযোগ করেন চসিকের এক নির্বাহী প্রকৌশলীও। এ সময় সভায় উপস্থিত ওয়াসার একজন নির্বাহী প্রকৌশলীকে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করার নির্দেনা দেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কাউন্সিলর মো. ইলিয়াস আলী আজাদীকে বলেন, হালিশহর বি ব্লক ৬ নম্বর লেইনটি কাটার পর ছয় মাস হয়ে গেছে। এখনো সলিং করেনি। ওয়াসাকে বারবার বলার পরও কাজ হচ্ছে না। আব্বাসপাড়া সংযোগ সড়ক কিছুদিন আগে ঢালাই করেছি। এখন আবার ওয়াসা কাটাকাটি করছে। সড়কটি যে তারা কাটবে তা আগে বললেই তো হতো।
তিনি বলেন, গত বছর বর্ষায় আমরা অনুরোধ করে বড় রাস্তা কাটা থেকে বিরত রেখেছিলাম। এবার কিন্তু বর্ষার মধ্যেই তারা সড়ক কাটছে। কাটার পর সড়ক ম্যাকাডম দিয়ে সলিং করে ঠিক করে দেওয়ার কথা। কিন্তু তারা মাটি দিয়ে ভরাট করে দেয়। ফলে বৃষ্টি হলে সেখানে গর্ত হয়ে যায়। ওয়াসা তো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিয়ে কাজ করায়। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ঠিকভাবে তদারকি করলে এমন সমস্যা হতো না।
এ বিষয়ে মেয়র কী নির্দেশনা দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওয়াসাকে সমন্বয় করে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন মেয়র মহোদয়।
এদিকে চসিকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাধারণ সভায় একাধিক কাউন্সিলর ওয়াসার প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ওয়াসা নতুন সড়ক করার পর কেটে ফেলছে। চসিক সড়ক নির্মাণের সময় সড়কের নিচে ম্যাকাডম, বালু, ইট, পাথরসহ যেসব নির্মাণ সামগ্রী দেয় ওয়াসার ঠিকাদাররা রাস্তা কাটার পর তা নিয়ে যায় এবং কাজের পর সাধারণ মাটি দিয়ে গর্ত পূরণ করে দেয়। ফলে বর্ষার সময় সেই মাটি নিচু হয়ে রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। তা নাগরিকদের সীমাহীন দুর্ভোগের কারণ হয়। কাউন্সিলররা ওয়াসাকে কোনো রাস্তা কাটার আগে সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলর ও নির্বাহী প্রকৌশলীকে অবহিত করতে ওয়াসা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চসিকের এক নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, একটা রাস্তায় তো ম্যাকাডম, সলিংসহ কয়েকটা লেয়ার থাকে। ওয়াসা যখন খনন করে বা পাইপ বসায় তখন রাস্তার মালামালগুলো নিয়ে যায় তাদের ঠিকাদাররা। তারা ম্যাকাডম দিয়ে কম্পাকশন করে না। কোনোমতে মাটি দিয়ে ঠিক করে দেয়। ফলে তা টেকসই হয় না।
এদিকে সভায় ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রউফ বলেন, চট্টগ্রাম ওয়াটার সাপ্লাই ইম্প্রুভমেন্ট প্রকল্প একনেকে পাশ ও বাস্তবায়িত হলে ৪০ ও ৪১ নং ওয়ার্ডে সুপেয় পানির হাহাকার থাকবে না। মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ওয়াসার যে কার্যক্রম চলছে তা শেষ হলে চট্টগ্রামের পরিবেশের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে।