Dhaka 9:22 am, Monday, 8 December 2025

মুক্তিযোদ্ধার পালিত সন্তানের কোটায় চাকরি, অতঃপর

Reporter Name
  • Update Time : 05:41:31 am, Saturday, 21 September 2024
  • / 251 Time View
১৯

মোঃ নাসির উদ্দীন উদ্দিন গাজী,খুলনা বিভাগের বূরো চীফঃ মুক্তিযোদ্ধা মেহেরুল ইসলামের সন্তান না হয়েও ভুয়া সনদে মোছা. ফিদা হক ওরফে পিচ্ছি (২৮) নামের এক নারী গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নে পরিবার কল্যাণ সহকারী হিসেবে ছয় বছর ধরে চাকরি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মোছা. রওশন আরা বেগম এই অভিযোগ করেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, সুন্দরগঞ্জের ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের রাজিবপুর গ্রামের দরিদ্র পরিবারের ফিদাকে আট বছর বয়সে মেহেরুলের বাড়িতে রেখে যান তার বাবা। এরপর ফিদার বাবা মারা গেলে সে ওই বাড়িতেই থেকে যায়।

সেখানে টুকটাক কাজ এবং একই সঙ্গে লেখাপড়াও করতে থাকে। ফিদা কাউকে না জানিয়ে স্কুল-কলেজে তার নিজের বাবার জায়গায় মেহেরুলের নাম উল্লেখ করেন। পরে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন এবং ভোটার আইডি কার্ডে পিতা হিসেবে মেহেরুলের নাম ব্যবহার করেন ফিদা।

ফিদা সুকৌশলে মেহেরুলের আইডি কার্ড, মুক্তিযোদ্ধার সনদসহ বিভিন্ন কাগজপত্র চাকরির আবেদনে দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নে পরিবার কল্যাণ সহকারী হিসেবে ৩(খ) ইউনিটে চাকরি নেন।

পরে তার প্রতারণার বিষয়টি জানাজানি হলে তিনি ওই বাড়ি থেকে বের হয়ে শহরের সুন্দরজান মোড় এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন।

অভিযোগে আরো বলা হয়, ৫ সেপ্টেম্বর ফোন করে মেহেরুলের মুক্তিযোদ্ধার মূল আইডি কার্ড চান এবং সন্তান পরিচয় দিয়ে সম্পত্তি দাবি করেন ফিদা। মেহেরুল মুক্তিযোদ্ধা কার্ড ও সম্পত্তির ভাগ দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার স্ত্রী এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের হত্যাসহ নানা ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে শুরু করেন তিনি।

মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মোছা. রওশন আরা বেগম বলেন, তার প্রতারণার খবর জানার পর তাকে কাগজপত্র সংশোধন করতে বলা হয়।

কিন্তু সে তা করতে রাজি হয়নি। বরং প্রতারণামূলকভাবে সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টা করছে।
এ ব্যাপারে ফিদার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রতারণার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘তার বাবা মারা যাওয়ার কারণে পালিত বাবা-মা হিসেবে মেহেরুল রওশন তাকে লেখাপড়া করান। তাই বাবা হিসেবে সার্টিফিকেটে তার নাম উল্লেখ করেছি। তার দাবি, তারাই মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে তাকে চাকরি নিয়ে দিয়েছেন।এতে তার কোনো দোষ নেই।’

এ ব্যাপারে গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

মুক্তিযোদ্ধার পালিত সন্তানের কোটায় চাকরি, অতঃপর

Update Time : 05:41:31 am, Saturday, 21 September 2024
১৯

মোঃ নাসির উদ্দীন উদ্দিন গাজী,খুলনা বিভাগের বূরো চীফঃ মুক্তিযোদ্ধা মেহেরুল ইসলামের সন্তান না হয়েও ভুয়া সনদে মোছা. ফিদা হক ওরফে পিচ্ছি (২৮) নামের এক নারী গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নে পরিবার কল্যাণ সহকারী হিসেবে ছয় বছর ধরে চাকরি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মোছা. রওশন আরা বেগম এই অভিযোগ করেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, সুন্দরগঞ্জের ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের রাজিবপুর গ্রামের দরিদ্র পরিবারের ফিদাকে আট বছর বয়সে মেহেরুলের বাড়িতে রেখে যান তার বাবা। এরপর ফিদার বাবা মারা গেলে সে ওই বাড়িতেই থেকে যায়।

সেখানে টুকটাক কাজ এবং একই সঙ্গে লেখাপড়াও করতে থাকে। ফিদা কাউকে না জানিয়ে স্কুল-কলেজে তার নিজের বাবার জায়গায় মেহেরুলের নাম উল্লেখ করেন। পরে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন এবং ভোটার আইডি কার্ডে পিতা হিসেবে মেহেরুলের নাম ব্যবহার করেন ফিদা।

ফিদা সুকৌশলে মেহেরুলের আইডি কার্ড, মুক্তিযোদ্ধার সনদসহ বিভিন্ন কাগজপত্র চাকরির আবেদনে দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নে পরিবার কল্যাণ সহকারী হিসেবে ৩(খ) ইউনিটে চাকরি নেন।

পরে তার প্রতারণার বিষয়টি জানাজানি হলে তিনি ওই বাড়ি থেকে বের হয়ে শহরের সুন্দরজান মোড় এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন।

অভিযোগে আরো বলা হয়, ৫ সেপ্টেম্বর ফোন করে মেহেরুলের মুক্তিযোদ্ধার মূল আইডি কার্ড চান এবং সন্তান পরিচয় দিয়ে সম্পত্তি দাবি করেন ফিদা। মেহেরুল মুক্তিযোদ্ধা কার্ড ও সম্পত্তির ভাগ দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার স্ত্রী এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের হত্যাসহ নানা ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে শুরু করেন তিনি।

মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মোছা. রওশন আরা বেগম বলেন, তার প্রতারণার খবর জানার পর তাকে কাগজপত্র সংশোধন করতে বলা হয়।

কিন্তু সে তা করতে রাজি হয়নি। বরং প্রতারণামূলকভাবে সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টা করছে।
এ ব্যাপারে ফিদার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রতারণার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘তার বাবা মারা যাওয়ার কারণে পালিত বাবা-মা হিসেবে মেহেরুল রওশন তাকে লেখাপড়া করান। তাই বাবা হিসেবে সার্টিফিকেটে তার নাম উল্লেখ করেছি। তার দাবি, তারাই মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে তাকে চাকরি নিয়ে দিয়েছেন।এতে তার কোনো দোষ নেই।’

এ ব্যাপারে গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।