Dhaka 6:50 am, Monday, 8 December 2025

মাদক কারবারি সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা আব্দুল আমিন সহ ০৪ মাদক কারবারি কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৫

Reporter Name
  • Update Time : 09:41:40 am, Monday, 20 May 2024
  • / 307 Time View
২৩
এ কে আজাদঃ
কক্সবাজারের উখিয়া থানাধীন চেংছড়ি পাটুয়ারটেক বিচ এলাকার মেরিন ড্রাইভ রোড হতে কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী, ইয়াবা সম্রাট ও পার্শ্ববর্তী দেশ হতে মাদক চোরাকারবারীর অন্যতম হোতা আব্দুল আমিন এবং মাদক সরবরাহকারী সিন্ডিকেটের তার তিন সহযোগী কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৫। মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত ০১টি বিলাস বহুল পাজেরো স্পোর্ট কার’সহ সাত লক্ষ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।
র‌্যাব জানায় তারা পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে টেকনাফ সীমান্তের কতিপয় সংঘবদ্ধ চক্র মাদকের এই বড় চালান সমুদ্রপথে মাছ ধরার ট্রলারের মাধ্যমে এনে অভিনব পন্থায় মজুদ করে কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করছে। এই ইয়াবা বিভিন্ন মাধ্যম হয়ে দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে। এতে করে আমাদের যুব সমাজ মাদকাসক্ত হয়ে নানাবিধ অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। দেশব্যাপী মাদকের বিস্তাররোধে র‌্যাব-১৫ কর্তৃক দায়িত্বাধীন এলাকার বিভিন্ন স্থানে গোয়েন্দা নজরদারী ও প্রতিনিয়তই মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনাসহ সমাজের নানাবিধ অপরাধ দমনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
র‌্যাবের ক্রমাগত মাদক বিরোধী অভিযান, মাদক সিন্ডিকেটের বড় বড় ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার এবং তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধারের ফলে বিগত কিছু দিন ধরে ইয়াবা পাচার অনেকাংশে হ্রাস পায়। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী দেশে চলমান গৃহযুদ্ধের কারণেও বাংলাদেশে মাদকের অনুপ্রবেশ পূর্বের তুলনায় কম ছিল বলে পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে মাদকের গডফাদাররা পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এবং পার্শ্ববর্তী দেশ হতে ইয়াবার বড় বড় চালান বাংলাদেশে নিয়ে আসছে মর্মে তথ্য পায় র‌্যাব। যার ফলশ্রুতিতে র‌্যাবের গোয়েন্দার নজরদারী বৃদ্ধি করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায়, র‌্যাব-১৫, কক্সবাজার এর আভিযানিক দল গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে, মেরিন ড্রাইভ রোড হয়ে কুখ্যাত মাদক কারবারী আব্দুল আমিন তার মাদক সিন্ডিকেটের সদস্যসহ মাদকের একটি বিশাল চালান নিয়ে একটি বিলাস বহুল প্রাইভেটকারযোগে টেকনাফ থেকে কক্সবাজার শহরের দিকে আসছে। উক্ত তথ্যের অদ্য রাত ০২.১০ ঘটিকার সময় র‌্যাব-১৫ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানাধীন জালিয়াপালং ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পাটুয়ারটেক চেংছড়ি মেরিন ড্রাইভ রোডে অস্থায়ী চেকপোস্ট স্থাপন করে মাদক উদ্ধারের একটি বিশেষ তল্লাশী অভিযান শুরু করে। তল্লাশী চলাকালীন সময়ে টেকনাফ থেকে আগত কক্সবাজারগামী একটি কালো রং এর একটি বিলাস বহুল প্রাইভেটকারকে থামার সংকেত দিলে তা অমান্য করে দ্রæত গতিতে চলে যাওয়ার চেষ্টাকালে র‌্যাবের আভিযানিক দল প্রাইভেটকারটি থামাতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে প্রাইভেটকারে থাকা ব্যক্তিদের আচরণ ও গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় গাড়িটি উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে তল্লাশী করে গাড়ির পিছনে বিশেষ কায়দায় রক্ষিত অবস্থা থেকে সর্বমোট ৭,০০,০০০ (সাত লক্ষ) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার এবং মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি জব্দ করা হয়। এ সময় উক্ত মাদক ব্যবসায়ের সাথে জড়িত ইয়াবা সম্রাট আব্দুল আমিন’সহ মাদক সিন্ডিকেটের চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।
 গ্রেফতারকৃতদের বিস্তারিত নাম ও পরিচয়
(১) আব্দুল আমিন (৪০), পিতা-হাজী মোহাম্মদ আলী, সাং-ডেইল পাড়া, ৬নং ওয়ার্ড, টেকনাফ পৌরসভা, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার।
(২) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ (৩৫), পিতা-আবু সৈয়দ, সাং-গোদার বিল, ৬নং ওয়ার্ড, সদর ইউনিয়ন,  থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার।
(৩) নুরুল আবসার (২৮), পিতা-মৃত মোহাম্মদ কাশেম, সাং-গোদার বিল, ৬নং ওয়ার্ড, সদর ইউনিয়ন,  থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার।
(৪) জাফর আলম (২৬), পিতা-মৃত দীল মোহাম্মদ, সাং-ডেইল পাড়া, ৫নং ওয়ার্ড, টেকনাফ পৌরসভা, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার।
 প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত আব্দুল আমিন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী, ইয়াবা সম্রাট ও মাদক সিন্ডিকেটটির অন্যতম সদস্য। সে প্রথমে মুদির ব্যবসা এবং বিভিন্ন গরুর হাটের ইজারাদারি করতো। পরবর্তীতে সে পলিথিন ও কার্পেট ব্যবসায়ের সাথে সম্পৃক্ত হয়। এসব ব্যবসায়ের আড়ালে ইয়াবার ব্যবসায়ের সাথে জড়িয়ে পড়ে। সে আরও জানায় যে, বার্মাইয়া সিরাজের ইয়াবার বিশাল সব চালান সমুদ্রপথে মাছ ধরার ট্রলারযোগে আব্দুল আমিনের নিকট পৌঁছাতো। এ সকল ইয়াবার চালান দেশের অভ্যন্তরে নিয়ে এসে কয়েক দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে মজুদ করতো। পরবর্তীতে মজুদকৃত মাদকের চালান স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী, রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তার নির্ধারিত এজেন্টদের নিকট সুবিধাজনক সময়ে বিক্রি করে থাকে। অদ্য র‌্যাব কর্তৃক উদ্ধারকৃত ইয়াবার চালানটি কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তার এজেন্টদের চাহিদা মোতাবেক পৌঁছে দেয়ার জন্য প্রাইভেটকারযোগে টেকনাফ থেকে মেরিন ড্রাইভ হয়ে কক্সবাজার শহরের উদ্দেশ্যে নিয়ে আসছিল মর্মে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন থানায় মাদকসহ ১১টির অধিক মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, আব্দুল আমিনের ভাগ্নে। সে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তী দেশ হতে গরু চোরাচালানের জড়িত এবং ক্রমান্বয়ে এটিকে পারিবারিক ব্যবসায়ে রূপান্তর করেছে বলে স্বীকার করে। এছাড়াও ইয়াবার ব্যবসা লাভজনক হওয়ায় গরুর ব্যবসা করাকালীন সময়ে আব্দুল আমিনের সাথে ইয়াবা ব্যবসায়ে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে এ সংক্রান্তে বার্মাইয়া সিরাজের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং গরু ব্যবসায়ের অন্তরালে সিন্ডিকেটটি মাদকের রমরমা ব্যবসা শুরু করে। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ০২টি মামলা সংক্রান্তে তথ্য পাওয়া যায়।
 গ্রেফতারকৃত আব্দুল আমিন সম্পর্কে মোহাম্মদ আবদুল্লাহ’র মামা। প্রথমে সে মুদির ব্যবসা এবং বিভিন্ন গরুর হাটের ইজারাদারি করতো। পরবর্তীতে সে পলিথিন ও কার্পেট ব্যবসায়ের সাথে সম্পৃক্ত হয়। এসব ব্যবসায়ের আড়ালে ইয়াবার ব্যবসায়ের সাথে জড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও গ্রেফতারকৃত আবদুল্লাহ ও আব্দুল কাদেরের সাথে সিন্ডিকেট স্থাপন করে মাদক পরিবহন, মজুতকরণ ও সরবরাহ কাজে সম্পৃক্ত ছিল। তার বিরুদ্ধে ১০টির অধিক মাদক মামলা রয়েছে।
 গ্রেফতারকৃত নুরুল আবসার সম্পর্কে মোহাম্মদ আবদুল্লাহ’র ভগ্নিপতি এবং মাদক কারবারীর অন্যতম সহযোগী। গ্রেফতারকৃত আব্দুল আমিন ও আবদুল্লাহ’র নির্দেশে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ইয়াবার বড় বড় চালান সরবরাহ, অর্থ সংগ্রহ ও মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করতো। তার বিরুদ্ধে মাদকের সংক্রান্ত একটি মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত অপর আসামী জাফর আলম মূলত আব্দুল আমিন ও আবদুল্লাহ সিন্ডিকেটের তথ্য সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করতো। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মাদক সরবরাহ এবং মাদক পরিবহনের বিভিন্ন পয়েন্টে গোপনে অবস্থান করে প্রশাসনের গতিবিধির খবরাখবর সে গ্রেফতারকৃত আব্দুল আমিন ও আবদুল্লাহ নিকট পৌঁছে দিতো। গ্রেফতারকৃত জাফর আলমের বিরুদ্ধে কক্সবাজারের টেকনাফ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ০২টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব
Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

মাদক কারবারি সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা আব্দুল আমিন সহ ০৪ মাদক কারবারি কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৫

Update Time : 09:41:40 am, Monday, 20 May 2024
২৩
এ কে আজাদঃ
কক্সবাজারের উখিয়া থানাধীন চেংছড়ি পাটুয়ারটেক বিচ এলাকার মেরিন ড্রাইভ রোড হতে কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী, ইয়াবা সম্রাট ও পার্শ্ববর্তী দেশ হতে মাদক চোরাকারবারীর অন্যতম হোতা আব্দুল আমিন এবং মাদক সরবরাহকারী সিন্ডিকেটের তার তিন সহযোগী কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৫। মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত ০১টি বিলাস বহুল পাজেরো স্পোর্ট কার’সহ সাত লক্ষ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।
র‌্যাব জানায় তারা পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে টেকনাফ সীমান্তের কতিপয় সংঘবদ্ধ চক্র মাদকের এই বড় চালান সমুদ্রপথে মাছ ধরার ট্রলারের মাধ্যমে এনে অভিনব পন্থায় মজুদ করে কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করছে। এই ইয়াবা বিভিন্ন মাধ্যম হয়ে দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে। এতে করে আমাদের যুব সমাজ মাদকাসক্ত হয়ে নানাবিধ অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। দেশব্যাপী মাদকের বিস্তাররোধে র‌্যাব-১৫ কর্তৃক দায়িত্বাধীন এলাকার বিভিন্ন স্থানে গোয়েন্দা নজরদারী ও প্রতিনিয়তই মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনাসহ সমাজের নানাবিধ অপরাধ দমনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
র‌্যাবের ক্রমাগত মাদক বিরোধী অভিযান, মাদক সিন্ডিকেটের বড় বড় ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার এবং তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধারের ফলে বিগত কিছু দিন ধরে ইয়াবা পাচার অনেকাংশে হ্রাস পায়। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী দেশে চলমান গৃহযুদ্ধের কারণেও বাংলাদেশে মাদকের অনুপ্রবেশ পূর্বের তুলনায় কম ছিল বলে পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে মাদকের গডফাদাররা পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এবং পার্শ্ববর্তী দেশ হতে ইয়াবার বড় বড় চালান বাংলাদেশে নিয়ে আসছে মর্মে তথ্য পায় র‌্যাব। যার ফলশ্রুতিতে র‌্যাবের গোয়েন্দার নজরদারী বৃদ্ধি করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায়, র‌্যাব-১৫, কক্সবাজার এর আভিযানিক দল গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে, মেরিন ড্রাইভ রোড হয়ে কুখ্যাত মাদক কারবারী আব্দুল আমিন তার মাদক সিন্ডিকেটের সদস্যসহ মাদকের একটি বিশাল চালান নিয়ে একটি বিলাস বহুল প্রাইভেটকারযোগে টেকনাফ থেকে কক্সবাজার শহরের দিকে আসছে। উক্ত তথ্যের অদ্য রাত ০২.১০ ঘটিকার সময় র‌্যাব-১৫ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানাধীন জালিয়াপালং ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পাটুয়ারটেক চেংছড়ি মেরিন ড্রাইভ রোডে অস্থায়ী চেকপোস্ট স্থাপন করে মাদক উদ্ধারের একটি বিশেষ তল্লাশী অভিযান শুরু করে। তল্লাশী চলাকালীন সময়ে টেকনাফ থেকে আগত কক্সবাজারগামী একটি কালো রং এর একটি বিলাস বহুল প্রাইভেটকারকে থামার সংকেত দিলে তা অমান্য করে দ্রæত গতিতে চলে যাওয়ার চেষ্টাকালে র‌্যাবের আভিযানিক দল প্রাইভেটকারটি থামাতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে প্রাইভেটকারে থাকা ব্যক্তিদের আচরণ ও গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় গাড়িটি উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে তল্লাশী করে গাড়ির পিছনে বিশেষ কায়দায় রক্ষিত অবস্থা থেকে সর্বমোট ৭,০০,০০০ (সাত লক্ষ) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার এবং মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি জব্দ করা হয়। এ সময় উক্ত মাদক ব্যবসায়ের সাথে জড়িত ইয়াবা সম্রাট আব্দুল আমিন’সহ মাদক সিন্ডিকেটের চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।
 গ্রেফতারকৃতদের বিস্তারিত নাম ও পরিচয়
(১) আব্দুল আমিন (৪০), পিতা-হাজী মোহাম্মদ আলী, সাং-ডেইল পাড়া, ৬নং ওয়ার্ড, টেকনাফ পৌরসভা, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার।
(২) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ (৩৫), পিতা-আবু সৈয়দ, সাং-গোদার বিল, ৬নং ওয়ার্ড, সদর ইউনিয়ন,  থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার।
(৩) নুরুল আবসার (২৮), পিতা-মৃত মোহাম্মদ কাশেম, সাং-গোদার বিল, ৬নং ওয়ার্ড, সদর ইউনিয়ন,  থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার।
(৪) জাফর আলম (২৬), পিতা-মৃত দীল মোহাম্মদ, সাং-ডেইল পাড়া, ৫নং ওয়ার্ড, টেকনাফ পৌরসভা, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার।
 প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত আব্দুল আমিন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী, ইয়াবা সম্রাট ও মাদক সিন্ডিকেটটির অন্যতম সদস্য। সে প্রথমে মুদির ব্যবসা এবং বিভিন্ন গরুর হাটের ইজারাদারি করতো। পরবর্তীতে সে পলিথিন ও কার্পেট ব্যবসায়ের সাথে সম্পৃক্ত হয়। এসব ব্যবসায়ের আড়ালে ইয়াবার ব্যবসায়ের সাথে জড়িয়ে পড়ে। সে আরও জানায় যে, বার্মাইয়া সিরাজের ইয়াবার বিশাল সব চালান সমুদ্রপথে মাছ ধরার ট্রলারযোগে আব্দুল আমিনের নিকট পৌঁছাতো। এ সকল ইয়াবার চালান দেশের অভ্যন্তরে নিয়ে এসে কয়েক দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে মজুদ করতো। পরবর্তীতে মজুদকৃত মাদকের চালান স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী, রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তার নির্ধারিত এজেন্টদের নিকট সুবিধাজনক সময়ে বিক্রি করে থাকে। অদ্য র‌্যাব কর্তৃক উদ্ধারকৃত ইয়াবার চালানটি কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তার এজেন্টদের চাহিদা মোতাবেক পৌঁছে দেয়ার জন্য প্রাইভেটকারযোগে টেকনাফ থেকে মেরিন ড্রাইভ হয়ে কক্সবাজার শহরের উদ্দেশ্যে নিয়ে আসছিল মর্মে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন থানায় মাদকসহ ১১টির অধিক মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, আব্দুল আমিনের ভাগ্নে। সে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তী দেশ হতে গরু চোরাচালানের জড়িত এবং ক্রমান্বয়ে এটিকে পারিবারিক ব্যবসায়ে রূপান্তর করেছে বলে স্বীকার করে। এছাড়াও ইয়াবার ব্যবসা লাভজনক হওয়ায় গরুর ব্যবসা করাকালীন সময়ে আব্দুল আমিনের সাথে ইয়াবা ব্যবসায়ে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে এ সংক্রান্তে বার্মাইয়া সিরাজের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং গরু ব্যবসায়ের অন্তরালে সিন্ডিকেটটি মাদকের রমরমা ব্যবসা শুরু করে। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ০২টি মামলা সংক্রান্তে তথ্য পাওয়া যায়।
 গ্রেফতারকৃত আব্দুল আমিন সম্পর্কে মোহাম্মদ আবদুল্লাহ’র মামা। প্রথমে সে মুদির ব্যবসা এবং বিভিন্ন গরুর হাটের ইজারাদারি করতো। পরবর্তীতে সে পলিথিন ও কার্পেট ব্যবসায়ের সাথে সম্পৃক্ত হয়। এসব ব্যবসায়ের আড়ালে ইয়াবার ব্যবসায়ের সাথে জড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও গ্রেফতারকৃত আবদুল্লাহ ও আব্দুল কাদেরের সাথে সিন্ডিকেট স্থাপন করে মাদক পরিবহন, মজুতকরণ ও সরবরাহ কাজে সম্পৃক্ত ছিল। তার বিরুদ্ধে ১০টির অধিক মাদক মামলা রয়েছে।
 গ্রেফতারকৃত নুরুল আবসার সম্পর্কে মোহাম্মদ আবদুল্লাহ’র ভগ্নিপতি এবং মাদক কারবারীর অন্যতম সহযোগী। গ্রেফতারকৃত আব্দুল আমিন ও আবদুল্লাহ’র নির্দেশে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ইয়াবার বড় বড় চালান সরবরাহ, অর্থ সংগ্রহ ও মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করতো। তার বিরুদ্ধে মাদকের সংক্রান্ত একটি মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত অপর আসামী জাফর আলম মূলত আব্দুল আমিন ও আবদুল্লাহ সিন্ডিকেটের তথ্য সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করতো। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মাদক সরবরাহ এবং মাদক পরিবহনের বিভিন্ন পয়েন্টে গোপনে অবস্থান করে প্রশাসনের গতিবিধির খবরাখবর সে গ্রেফতারকৃত আব্দুল আমিন ও আবদুল্লাহ নিকট পৌঁছে দিতো। গ্রেফতারকৃত জাফর আলমের বিরুদ্ধে কক্সবাজারের টেকনাফ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ০২টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব