শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৩৪ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ :
আওয়ামী লীগের ডাকা লকডাউন কর্মসূচি ঘিরে নারায়ণগঞ্জের নাশকতা এড়াতে ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে র‌্যাবের চেকপোস্ট ও  টহল আমি ক্লিন ইমেজের তাই আশাবাদী দল আমাকে মনোনয়ন দিবে – শাহআলম নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ একজন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে থানা পুলিশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদে স্বচ্ছ মুক্তিযোদ্ধা পাওয়া কষ্টকর : কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী রাকিব হত্যা মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানা পুলিশ নিষিদ্ধ সংগঠনের (আট) নেতাকর্মী ককটেল, পেট্রোল ও বিস্ফোরকদ্রব্যসহ গ্রেফতার নারায়ণগঞ্জে বায়ুদূষণ রোধে বালু ব্যবসায়ী/মালিকদের সাথে মতবিনিময় সভা এনসিপি’র নতুন কার্যালয় উদ্বোধনে রাজনৈতিক বার্তা নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ (একান্ন) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট সহ ০১ জন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার নারায়ণগঞ্জে যৌথ অভিযানে নিষিদ্ধ ৯শ কেজি পলিথিন জব্দ, জরিমানা ৩৫ হাজার টাকা

ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন

অগ্নিশিখা প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, নির্বাচনের ব্যাপারে আমি আগেও বলেছি, আবারও বলছি, এ বছর ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) মহান স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তাদের কাজ শুরু করেছে। ৬টি সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশ ও পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনসহ ৩৮টি রাজনৈতিক দলের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে  বৈঠক শুরু হয়েছে। দেশের রাজনৈতিক দলগুলো খুবই ইতিবাচকভাবে সংস্কারকাজে সাড়া দিয়েছে, তাদের মতামত তুলে ধরছেন। কোন রাজনৈতিক দল কোন কোন সংস্কার প্রস্তাবে একমত হয়েছে, কোনটিতে দ্বিমত হয়েছে – সেসব তারা জানাচ্ছেন। এটা আমাদের জাতির জন্য অত্যন্ত সুখকর বিষয় যে, প্রতিটি রাজনৈতিক দল সংস্কারের পক্ষে মত দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, আমরা চাই, আগামী নির্বাচনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচাইতে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক। এজন্য নির্বাচন কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক দলগুলো ব্যাপক উৎসাহ, উদ্দীপনায় নির্বাচনের জন্য তৈরি হতে শুরু করবে বলে আশা করছি।

সরকারপ্রধান বলেন, ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে সকল রাজনৈতিক দলের মতামত নেওয়ার কাজ চলমান আছে। কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে যে, সকল বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হবে, সেগুলো চিহ্নিত করা এবং তার একটা তালিকা প্রস্তুত করা। যে সকল দল এতে একমত হয়েছে তাদের স্বাক্ষর নেওয়া। এই তালিকাটিই হবে জুলাই চার্টার বা জুলাই সনদ। আমাদের দায়িত্ব, জাতির সামনে পুরো প্রক্রিয়াটা স্বচ্ছভাবে তুলে ধরা এবং প্রক্রিয়া শেষে নির্বাচনের আয়োজন করা।

দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম পর্ব সফলভাবে সমাপ্ত হয়েছে। প্রথম পর্বের সমাপ্তির মধ্য দিয়ে অভ্যুত্থানের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হলো। সবসময় মনে রাখতে হবে আমরা কিন্তু যুদ্ধাবস্থায় আছি। গুজব হলো এই জুলাই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে পরাজিত শক্তির মস্ত বড় হাতিয়ার। গুজব দেখলেই গুজবের সূত্রের সন্ধান করতে থাকবেন। গুজবকে অবহেলা করবেন না। বহু অভিজ্ঞ সমর বিশারদ এই গুজবের পেছনে দিনরাত কাজ করছে, সীমাহীন অর্থ এর পেছনে নিয়োজিত আছে। এর মূল লক্ষ্য জুলাই অভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করা। আমরা তাকে ব্যর্থ হতে দেব না।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের সামগ্রিক ঐক্য পলাতক শক্তির গায়ে জ্বালা ধরিয়ে দিচ্ছে। তারা এই ঐক্য ভাঙতে চায়। তাদের অভিনব কৌশল আপনি টেরই পাবেন না। আপনি বুঝতেই পারছেন না কখন তাদের খেলায় আপনি পুতুল হয়ে গেছেন। আমাদের সচেতনতা এবং সামগ্রিক ঐক্য দিয়েই এই গুজবকে রুখতে হবে। পলাতক অপশক্তির ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দিতে হবে।

এসময় তিনি বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ সফর করেছেন। সফরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও তরুণদের সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে বৈঠক করেছেন তিনি। বৈঠকে সবাই জাতিসংঘের মহাসচিবকে ‘নতুন বাংলাদেশ’ গঠনের স্বপ্নের কথা জানিয়েছেন।

ড. ইউনূস বলেন, পতিত স্বৈরাচারের নিপীড়নের বর্ণনা উঠে এসেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের রিপোর্টে। গত জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ওপর শেখ হাসিনা সরকার ও আওয়ামী লীগ যে দমন-নিপীড়ন ও হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে এর পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তারা।

তিনি বলেন, এই রিপোর্টে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে যে, শেখ হাসিনা নিজেই নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীদের হত্যা করতে। বিগত সরকার, আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের সহযোগী গোষ্ঠী ও সংগঠন একত্রিত হয়ে পরিকল্পিতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত ছিল। মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিক্ষোভ চলাকালে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে প্রায় ১৩ শতাংশ শিশু। বিক্ষোভের সম্মুখসারিতে থাকার কারণে, আমাদের জুলাই-কন্যারা নিরাপত্তা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ সমর্থকদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে, এমনকি যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের রিপোর্ট পড়ে সবার গায়ের লোম দাঁড়িয়ে গেছে। কী ভয়াবহতা! কীভাবে একজন প্রধানমন্ত্রী নিজ দেশের নিরস্ত্র মানুষকে হত্যার পর লাশ লুকিয়ে ফেলার নির্দেশ দিতে পারে! ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার জন্য তিনি পৃথিবীর সকল নিষ্ঠুরতা ছাড়িয়ে গেছেন-এটাই জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার কার্যালয়ের এই রিপোর্টকে স্বাগত জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রতিবেদনে যে সুপারিশ করা হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার সে সুপারিশগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।

সবাইকে আশ্বস্ত করে ড. ইউনূস বলেন, যারা গণহত্যায় জড়িত ছিল, যারা নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছে, যারা ইতোমধ্যে হত্যাকারী হিসেবে বিশ্বের কাছে স্বীকৃত তাদের বিচার এদেশের মাটিতে হবেই।

খবরটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024 thedailyagnishikha.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com