চট্টগ্রাম ব্যুরো কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সারা দেশে ছাত্র–জনতা হত্যার প্রতিবাদ ও ৯ দফার দাবিতে নগরীর নিউ মার্কেট মোড়ে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সমাবেশের সময় এলাকাজুড়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ দেখা গেছে আশপাশের দোকানপাটও। তবে পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়নি। গতকাল বিকাল ৩টার আগ থেকেই নিউ মার্কেট মোড়ে জড়ো হতে থাকেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। একসময় পুরো এলাকা ছাত্র–জনতায় ভরে ওঠে। অন্তত ৫ হাজার আন্দোলনকারী বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করে সরকার বিরোধীসহ নানা স্লোগানে মেতে ওঠে। অনেককে ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দিতেও দেখা যায়। বিকাল সাড়ে ৫টায় নিউ মার্কেট মোড় ত্যাগ করে টাইগারপাস হয়ে লালখান বাজার, ওয়াসা মোড়, জিইসি মোড়, দুই নম্বর গেট হয়ে, মুরাদপুর হয়ে বহদ্দারহাট গিয়ে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ মিছিল শেষ করেন। নিউ মার্কেট মোড় থেকে বহদ্দারহাট মোড় যাওয়ার পথে লালখান বাজারে একটি ট্রাফিক পুলিশ বক্সে হামলার ঘটনা...
১৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সারা দেশে ছাত্র–জনতা হত্যার প্রতিবাদ ও ৯ দফার দাবিতে নগরীর নিউ মার্কেট মোড়ে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সমাবেশের সময় এলাকাজুড়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ দেখা গেছে আশপাশের দোকানপাটও। তবে পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়নি।
গতকাল বিকাল ৩টার আগ থেকেই নিউ মার্কেট মোড়ে জড়ো হতে থাকেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। একসময় পুরো এলাকা ছাত্র–জনতায় ভরে ওঠে। অন্তত ৫ হাজার আন্দোলনকারী বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করে সরকার বিরোধীসহ নানা স্লোগানে মেতে ওঠে। অনেককে ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দিতেও দেখা যায়। বিকাল সাড়ে ৫টায় নিউ মার্কেট মোড় ত্যাগ করে টাইগারপাস হয়ে লালখান বাজার, ওয়াসা মোড়, জিইসি মোড়, দুই নম্বর গেট হয়ে, মুরাদপুর হয়ে বহদ্দারহাট গিয়ে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ মিছিল শেষ করেন।
নিউ মার্কেট মোড় থেকে বহদ্দারহাট মোড় যাওয়ার পথে লালখান বাজারে একটি ট্রাফিক পুলিশ বক্সে হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর ওয়াসা মোড় এলাকায় থাকা সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চুর অফিস ভাঙচুর, দুই নম্বর গেটের মেয়র গলিতে থাকা শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিকাণ্ড এবং সবার শেষে বহদ্দারহাটে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। তবে সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর বাসার সামনে থাকা দুটি মাইক্রো ও একটি সিএনজি টেক্সি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাড়ির গেটও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নিউ মার্কেট মোড়ে সরেজমিনে দেখা যায়, বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন হাজারো আন্দোলনকারী। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’, ‘স্বৈরাচারের গদিতে আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’, ‘ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান, অভ্যুত্থান, অভ্যুত্থান’, ‘পদত্যাগ পদত্যাগ, শেখ হাসিনার পদত্যাগ’ এমন নানা স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীদের পূর্ব নির্ধারিত বিক্ষোভে অভিভাবক থেকে শুরু করে সর্বস্তরের লোকজনকে দেখা গেছে। তাদের একজন সুলতান আহমদ। তার দুই বছরের শিশু সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে তিনি বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন। বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে যুক্ত রয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিউ মার্কেট এলাকায় আমার বাসা। দেশে অশান্তি চলছে। ছাত্ররা সমতা রক্ষার আন্দোলন করছে। বিবেকের তাড়নায় ছাত্রদের সাথে সামিল হয়েছি। তিনি বলেন, আমরা দেশে শান্তি চাই। আর যেন কোনো মায়ের বুক খালি না হয়, কোনো সন্তান যেন পিতা হারা না হন, আর কোনো নারী যেন বিধবা না হন। এসব শুধু আমার দাবি নয়, সর্বস্তরের মানুষের।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কয়েকজন জানান, ন্যায্য দাবি রুখে দিতে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আমরা আন্দোলন থেকে সরছি না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। ভাই হত্যার বিচার করতেই হবে। সার্বিকভাবে ন্যায়ের সমাজ গড়তে হবে।
এদিকে বহদ্দারহাট মোড়ে মেয়রের বাড়িতে হামলার পর সন্ধ্যায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ও শিক্ষার্থীসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এসব ঘটনার পর রাত ৯টার দিকে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ডা. শাহাদাত হোসেনসহ নগর বিএনপির কয়েকজন নেতার বাড়িতে হামলা, আগুনের খবর পাওয়া গেছে।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, নিউ মার্কেট মোড় থেকে আন্দোলনকারীরা বহদ্দারহাট যাওয়ার পথে নানা জায়গায় হামলা করেছে। লালখান বাজারের একটি ট্রাফিক পুলিশ বঙে হামলা, ভাঙচুর করা হয়েছে। তখন সেখানে কোনো পুলিশ সদস্য ছিলেন না।